গত সপ্তাহেই ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পের দ্বিতীয় কিস্তির টাকাও দিয়ে দিয়েছে রাজ্য। কিন্তু এখনও কয়েকটি জেলা রয়েছে যেখানে আশানুরূপ কাজ হয় নি। এই তালিকায় শীর্ষে রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগণা। তবে কয়েকটি জেলা ইতিমধ্যেই প্রশংসাসূচক কাজ করেছে।
সঞ্জু সুর, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ- গত বছর ১৭ ডিসেম্বর রাজ্যের ১২ লক্ষ পরিবারকে ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পে প্রথম কিস্তির টাকা দেওয়ার সূচনা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর গত সপ্তাহে শিলিগুড়ি থেকে দ্বিতীয় কিস্তির টাকাও দেওয়া শুরু করে সরকার। সেই কাজেরও ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিকে গত ২৩ মে-র একটি রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে যে এখনও পর্যন্ত রাজ্যের কয়েকটি জেলার কাজ আশানুরূপ নয়। ২৩ মে পর্যন্ত দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলায় মাত্র ৫০.১৯ শতাংশ বাড়ির ‘লিনটন’ পর্যন্ত তৈরি হয়েছে। বাকি রয়ে গিয়েছে ৪৯.৮১ শতাংশ কাজ। ২০২৪-২৫ অর্থ বর্ষে এই জেলার মোট বাড়ি তৈরির টার্গেট ধরা হয়েছিলো ১,৬৩,৫৩৯ টি বাড়ি। রিপোর্ট অনুযায়ী এর মধ্যে মাত্র ৮২,০৭৩ টি বাড়ির ‘লিনটন’ পর্যন্ত তৈরি হয়েছে। এরপরেই রয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা। এই জেলার মোট টার্গেট ছিলো ৪০,০৪৩ টি বাড়ি, যার মধ্যে লিনটন পর্যন্ত কাজ হয়েছে এমন বাড়ির সংখ্যা ২৫,১২৭। অর্থাৎ দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় ৬২.৭৫ শতাংশ বাড়ির লিনটন পর্যন্ত তৈরি হয়েছে।
শেষের দিক থেকে প্রথম পাঁচে থাকা বাকি তিন জেলা হলো কোচবিহার (লক্ষমাত্রা ছিলো ১,১৩,৭৪১ টি। লিনটন পর্যন্ত কাজ হয়েছে ৭৬,১৬৩ টি) ৬৬.৯৬ শতাংশ, মূর্শিদাবাদ (লক্ষমাত্রা ছিলো ৭৭,৫৯৭ টি। লিনটন পর্যন্ত কাজ হয়েছে ৫২,৫০৬ টি) ৬৭.৬৬ শতাংশ, রাজ্যের বিভিন্ন পুরসভা এলাকা(Special Municipal Project) যেখানে লক্ষমাত্রা ছিলো ৫,১৭৬ টি। লিনটন পর্যন্ত কাজ হয়েছে ৩,৫১৫ টি) ৬৭.৯১ শতাংশ। আরো দুটি জেলা আছে যারা লক্ষ্যমাত্রার ৭০ শতাংশ কাজও ছুঁতে পারেনি। এই দুই জেলা হলো মালদহ (৬৮.১৫ শতাংশ) এবং বীরভূম (৬৯.৯১ শতাংশ)।
এখনো পর্যন্ত যে জেলাগুলো সেরা কাজ করেছে সেই তালিকায় সবার উপরে রয়েছে নদীয়া। এই জেলার ক্ষেত্রে ২০২৪-২৫ অর্থ বর্ষে বাড়ি তৈরির লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছিলো ৪৬,৪৬৭ টি যার মধ্যে লিনটন পর্যন্ত কাজ হয়েছে ৪৪,১০০, অর্থাৎ লিনটন পর্যন্ত তৈরি হয়ে গিয়েছে এমন বাড়ির সংখ্যা প্রায় ৯৪.৯১ শতাংশ। এই হিসাবেই পশ্চিম বর্ধমানে ৯১.৪১, উত্তর দিনাজপুরে ৮৭.৪১, পুরুলিয়ায় ৮৪.৯২, হুগলি ৮৩.৯১, ও হাওড়ায় ৮৩.৭২ শতাংশ বাড়ির ক্ষেত্রে লিনটন পর্যন্ত কাজ শেষ হয়েছে বলে রিপোর্টে প্রকাশ।
বাকি থাকা জেলাগুলোর মধ্যে উত্তর ২৪ পরগণায় ৭০.৮৭, পশ্চিম মেদিনীপুর ৭১.২৫, ঝাড়গ্রাম ৭২.২০, আলিপুরদুয়ার ৭২.৩৪, জলপাইগুড়ি ৭৪.৭৮, বাঁকুড়া ৭৮.৭০, পুর্ব মেদিনীপুর ৭৯.৫৬, পুর্ব বর্ধমান ৮৩.৪৫ শতাংশ। প্রসঙ্গত রাজ্যের মোট ১২ লক্ষ উপভোক্তাকে রাজ্য সরকারের নিজের কোষাগার থেকে ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পে বাড়ি তৈরি করে দিতে খরচ হচ্ছে প্রায় ১৪ হাজার ৭৭৩ কোটি টাকা। তাছাড়া মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছেন এই প্রকল্পে আরো প্রায় ১৬ লক্ষ নতুন উপভোক্তাকে এই বছর ডিসেম্বর মাস থেকে বাড়ি তৈরির টাকা দেওয়া হবে।