যখন আপনি আপনার শোবার ঘরে প্রবেশ করবেন তখন আপনার শান্ত বোধ করা উচিত। বসার ঘরে আপনার উজ্জীবিত বোধ প্রয়োজন। আর পড়াশোনার জায়গায় আপনার মনোযোগী বোধ করাটাই উচিত। আর এসবের জন্য ঘর বা বাসস্থানকে তৈরি করতে হবে। কি বিষয়গুলো মাথায় রাখবেন এক্ষেত্রে আসুন জেনে নি।
মৌসুমী সাহা …… আদর্শ বাসস্থানের স্বপ্ন আমরা সবাই দেখি। কেউ ছোট ফ্ল্যাটে থাকেন তো আবার কেউ বড় বাড়িতে থাকেন। তবে সেই বাসস্থানকে স্বাস্থ্যসম্মত করে তুলতে আমাদের সচেষ্ট হওয়া উচিত। আমাদের ব্যক্তিগত বোধ, রুচি, আমাদের নান্দনিকতার বহিঃপ্রকাশ গৃহসজ্জা। কেউ সুন্দর করে ঘর সাজান, আবার কেউ বড্ড অগোছালো। তবে মাথায় রাখতে হবে একটা স্বাস্থ্যকর পরিবেশ ঘরে তৈরি করতে হবে যা আপনার মনকে শান্তি দেয়, পারস্পরিক সম্পর্ককে শান্তিপূর্ণভাবে বজায় রাখতে সাহায্য করে। রং নির্বাচন থেকে আসবাব, পর্দা থেকে শুরু করে বিছানার চাদ্ সবেতেই আপনার রুচির বহিঃপ্রকাশ দেখা যায়। তবে এর বাইরেও ছোটখাটো আরো কিছু বিষয় গৃহসজ্জার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ-
১.আপনার বাড়িতে একটি ব্যক্তিগত জায়গা তৈরি করুন যেখানে নিজের কোন ব্যক্তিগত কাজ আরামদায়কভাবে আপনি করতে পারবেন। আভ্যন্তরীণ অন্তরসজ্জা মনোরম করার চেষ্টা করুন। কি ধরনের আসবাব রাখবেন, কি ধরনের রং ব্যবহার করবে্ সেগুলো মাথায় রেখে ডিজাইন করবেন বাড়িটি।
২.ঘরে যেন যথার্থভাবে আলো থাকে। সূর্যের আলো, প্রাকৃতিক আলোর উৎস, যদি তা পাওয়া যায় তবে সবচাইতে ভালো। ঘরে দিনের যেকোনো সময় আলো ঢুকতে দিন, দরজা জানলা খোলা রাখুন। এতে ঘরের ভেতরে পজেটিভ এনার্জি প্রবেশ করবে। আলোর প্রভাব বজায় রাখতে হালকা রঙের পর্দা নির্বাচন করবেন। ঘরে সচরাচর আলো প্রবেশ করলে পরিবর্তনটা আপনি নিজেই লক্ষ্য করতে পারবেন।
৩. ঘরে গাছপালা দিয়ে সাজান। ঘরে ছোটখাটো গাছ থাকলে ঘরের বাতাস দূষণমুক্ত হবে। বাতাসে দূষণ এবং ময়লা কনাকেও পরিষ্কার করতে সাহায্য করবে এই গাছ। আপনার মেজাজ ভালো থাকবে গাছের প্রভাবে। তাই ঘরে বা ছাদে গাছ লাগিয়ে ঘরকে একটা প্রাকৃতিক রূপ দিন।
৪. কেউ হালকা রং পছন্দ করেন, আবার কারো পছন্দ ডিপ রং। বিভিন্ন ধরনের রংয়ের ওপর মনের বিভিন্ন ভাব নির্ভর করে। শোবার ঘরে সাদা, নীল ,সবুজ রঙের ,ব্যবহার করতে পারেন যা আপনার আরামদায়ক ভাবকেই বোঝাবে। আবার বসার ঘরে বাদামি রং, মেরুন রং এগুলো আপনাকে প্রাণবন্ত করে তুলবে। রান্নার জায়গায় অনেকেই হলুদ রঙের ব্যবহার করে্ তবে এ ক্ষেত্রে ইন্টিরিয়ার ডিজাইনার আপনাকে সঠিকভাবে পথ দেখাতে পারে।
৫. অনেকেই ঘরে অনেক আসবাব ব্যবহার করেন, আবার অনেকেই অল্প আসবাব দিয়ে ঘরকে সাজান। তবে সব জায়গায় আসবাব দিয়ে ঘিরে শক্তিকে এক জায়গা কেন্দ্রীভূত করছেন না তো? মাঝে মাঝে ঘরের আসবাবকে এদিক ওদিক সরিয়ে শক্তির সঞ্চালন কে স্বাভাবিক রাখুন যা আপনাকে ইতিবাচক প্রশান্তিদায়ক পরিবেশ তৈরিতে সাহায্য করবে, আপনাকে শান্তি ও দেবে।
৬. ঘরে সুগন্ধির ব্যবহার আপনাকে প্রশান্তি দিতে পারে। তাই অ্যারোমা অয়েল ব্যবহার করুন বা ভালো ধূপ, ধুনো ইত্যাদি ব্যবহার করতেই পারেন। অবশ্যই সেটা আপনার পছন্দ সই।
৭. আপনি প্রতিদিন কাজে ব্যস্ত। ঘরের আসবাবে পুরো ধুলোর আস্তরণ জমে যাচ্ছে। না, কখনোই এমনটা হতে দেওয়া যাবে না। কারন এই ধুলো আপনার শ্বাস-প্রশ্বাস এর মধ্যে দিয়ে আপনার শরীরে প্রবেশ করবে। তাই বায়ুর মানের কথা মাথায় রেখে ঘরের পরিচ্ছন্নতা ভীষণভাবেই প্রয়োজনীয়।
৮.আমরা প্রায় সবাই ঘরে অফিসের কাজ করে থাকি। কিন্তু তার জন্য কখনো ডাইনিং টেবিল, কখনো বিছানার ওপর বসে কাজ করেন অনেকেই। না এটা কখনোই করা উচিত নয়। কাজের একটা হোম স্পেস বাড়িতে তৈরি করা প্রয়োজন। তাতে দেখবেন আপনার কাজ করার পাশাপাশি বাড়ির সৌন্দর্য অনেকটাই বাড়বে।
অনেকেই বাস্তু মানেন। বাস্তু মতে কোন জায়গায় রান্নাঘর হবে, কোথায় শোয়ার ঘর হবে, কোথায় টয়লেট হবে সবটাই তৈরি করেন। বাস্তু মতে ঘর সাজানোর পাশাপাশি এই টিপস গুলো মেনে চলুন, আপনার ঘরে একটা সুন্দর সুস্বাস্থ্যময় পরিবেশ বজায় থাকবে। মন ভালো থাকবে কাজে উৎসাহও পাবেন।