এই নিয়ে ছয়বার ধাক্কা খেলেন শুভাংশু শুক্লারা। এর আগে বিভিন্ন কারণে পাঁচ বার পিছিয়ে গিয়েছে শুভাংশুদের অভিযান ‘অ্যাক্সিয়ম-৪’। শেষমেশ স্থির হয়েছিল, সব ঠিকঠাক থাকলে বৃহস্পতিবার ওই অভিযান হতে পারে। কিন্তু তার আগের দিন নাসা জানাল, বৃহস্পতিবারও অভিযান হচ্ছে না।
সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিকঃ ১৯ জুনের বদলে এ বার রকেট উৎক্ষেপণের নতুন তারিখ নির্ধারিত হয়েছে আগামী ২২ জুন। সম্প্রতি পোস্ট-স্ট্যাটিক ফায়ার বুস্টার চেকিংয়ের সময় LOx লিক করতে দেখা যায়। সে কারণে বুস্টারটি মেরামত করার প্রয়োজন হয়ে পড়ে। তার পরেই মিশনের তারিখ পিছিয়ে করে দেওয়া হয় ১৯ জুন। শেষমেশ ২২ জুন ভারতের মহাকাশচারী শুভাংশু শুক্লারা আন্তর্জাতিক স্পেস সেন্টারের উদ্দেশে রওনা দিচ্ছেন।
অ্যাক্সিয়মের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের এভেজদা সার্ভিস মডিউলে মেরামতি হয়েছে সদ্য। সব আগের মতো ঠিকঠাক চলছে কি না, তা খতিয়ে দেখার জন্য আরও কিছুটা সময় দরকার নাসার বিজ্ঞানীদের। নাসা জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলছে। সে কারণেই বৃহস্পতিবার যাচ্ছেন না শুভাংশুরা। এর আগে, ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা জানিয়েছিল যে তারা অ্যাক্সিয়ম স্পেস, নাসা এবং স্পেসএক্সের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে।আইএসএস-এর জভেজদা মডিউলের পর্যবেক্ষণে সমস্যার কারণে অ্যাক্সিয়ম-৪ মিশনের স্থগিতকরণ ঘটেছিল। ডিওএস সচিব/ইসরো চেয়ারম্যান এবং মহাকাশ কমিশনের চেয়ারম্যান ভি নারায়ণন জানিয়েছেন যে নিরাপত্তা এবং মিশনের অখণ্ডতা তাদের প্রধান অগ্রাধিকার। ১১ জুন, স্পেসএক্স ফ্যালকন ৯ রকেটের মাধ্যমে অ্যাক্সিয়ম-৪ মিশনের উৎক্ষেপণ স্থগিত করার ঘোষণা দেয়।
এই মিশনে শুভাংশু শুক্লা আন্তর্জাতিক ক্রুর সঙ্গে যোগ দিয়ে ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করবেন। মহাকাশ স্টেশনে তিনি ভারতের তৈরি সাতটি বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা চালাবেন। পাশাপাশি নাসার সঙ্গে যৌথ গবেষণাতেও অংশ নেবেন। এমন মিশনে ভারতের সরাসরি অংশগ্রহণ এক ঐতিহাসিক ঘটনা। ভারতের তরুণ প্রজন্মের কাছে এটি অনুপ্রেরণার নতুন দিশা খুলে দেবে বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল। এই অভিযান স্পেসএক্স-এর ফ্যালকন ৯ রকেট ও ক্রু ড্রাগন ক্যাপসুলের মাধ্যমে সম্পন্ন হবে। চারজন মহাকাশচারীর একটি দলে থাকবেন শুভাংশু, এবং তিনিই হবেন এই মিশনের পাইলট। ভারত সরকার এই মিশনের জন্য বরাদ্দ করেছে ৬০ মিলিয়ন ডলার। গত আট মাস ধরে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন তিনি নাসা ও অ্যাক্সিওম স্পেসের যৌথ তত্ত্বাবধানে। কঠোর নিয়মে বাঁধা সেই দিনগুলির শেষে এখন শুরু হচ্ছে অপেক্ষার প্রতীক্ষা—ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে রওনা দেওয়ার।