আলিপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউতে এই মুহূর্তে চিকিৎসাধীন প্রাক্তন বিচারপতি থতা তমলুকের বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। শনিবার রাতে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সোমবারও যে খুব ভালো আছেন তিনি এমনটা একেবারেই নয়। বরং তাঁর মেডিক্যাল বোর্ডে বাড়ল চিকিৎসকের সংখ্যা।
সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিকঃ পেটে ব্যথা বমির সমস্যা নয়ে শনিবার রাতে তড়িঘড়ি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় অভিজিৎ বাবুকে।সেদিন রাতেই একাধিক পরীক্ষা হয় তাঁর। রবিবার সেই পরিক্ষার রিপোর্ট এলে জানা যায়, অ্যাকিউট প্যানক্রিয়াটাইটিস এবং গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল সেপসিসে আক্রান্ত অভিজিৎ গাঙ্গুলি। আইসিইউতে রয়েছেন তিনি। অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক তবে আগের থেকে সামান্য ভালো। ইন্টারনাল মেডিসিনি, ক্রিটিক্যাল কেয়ার, কারডিওলজিস্ট, পালমোনোলজিস্ট, এন্ডক্রিনোলজিস্ট, গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল এবং জিআই সার্জনদের নিয়ে গঠিত মেডিক্যাল বোর্ড তাঁকে দেখছেন।
কিন্তু সোমবারও তাঁকে নিয়ে উদ্বেগ কাটল না কারণ তাঁর মেডিক্যাল বোর্ডে যুক্ত হলেন আরও এক চিকিৎসক। সোমবার তাঁর ইকো কার্ডিওগ্রাফির রিপোর্ট দেখে চিন্তা বেড়েছে চিকিৎসকদের। প্রাক্তন বিচারপতির চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল তরফে যে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছিল তাতে এবার বাড়ল সদস্যের সংখ্যাও। প্রথমে ৭ সদস্য নিয়ে তৈরি হয় বোর্ডটি। সোমবার হাসপাতালের তরফে মেডিক্যাল বোর্ডে নিযুক্ত করা হয়েছে এক কার্ডিওলজিস্টকে। মূলত, সদ্য করা কার্ডিওগ্রাফির পরীক্ষা ও তার রিপোর্টের পরেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। প্যানক্রিয়াটাইটিসের সমস্যার পাশাপাশি উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবিটিস, থাইরয়েডের অসুস্থতা ঘিরে তৈরি হয়েছে উদ্বেগ।
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, এই গ্যাস্ট্রো সেপসিস হল এক ধরনের শারীরিক পরিস্থিতি যা পরিপাকতন্ত্রে সংক্রমণ থেকে তৈরি হয়। যার জেরে রোগীর অবস্থা পৌঁছে যায় সংকটজনক পর্যায়ে। অর্থাৎ গ্যাস্ট্রো সেপসিসে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা পরিপাকতন্ত্রে সংক্রমণের প্রতিক্রিয়া দেখায়। ফলত, উল্টে শারীরিক ক্ষতির মুখে পড়েন রোগীরা। বাড়ে অঙ্গ বিকল হওয়ার সম্ভবনাও। এদিন তাঁকে দেখতে হাসপাতালে সুকান্ত মজুমদার। তাঁকে হাসপাতাল থেকে দেখে বেরিয়ে সুকান্ত জানান ‘উনি পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। আমরা আশা করছি, খুব তাড়াতাড়ি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাবেন। যা মনে হল, কম করে হলেও এখনও ১০ দিন থাকবে হবে। এই ধরনের রোগের লম্বা চিকিৎসার প্রয়োজন’।
অভিজিৎবাবুর এই মুহূর্তে বয়স ৬২ বছর। বয়সজনিত একাধিক শারীরিক সমস্যা রয়েছে। তাছাড়া অতিরিক্ত গরম আবহাওয়ার জেরে গত কয়েক দিন ধরে তিনি কিছুটা অসুস্থ ছিলেন।কলকাতা থেকে হামেশাই নিজের সাংসদ এলাকায় যাতায়াত করেন তিনি। এছাড়া কলকাতায় বিজেপির প্রায় প্রতিটি কর্মসূচিতেই উপস্থিত থাকতে দেখা যায় তাঁকে। এখনও বর্ষা প্রবেশ না করায় অত্যধিক গরম পড়েছে। সে ক্ষেত্রে শারীরিক ধকলের কারণেই এই অসুস্থতা কিনা, তা নিয়েও কর্মীদের মধ্যে চর্চা শুরু হয়েছে।