অভিবাসী ইস্যুতে এখনও অগ্নিগর্ভ লস আঞ্জেলেস। বিক্ষোভ থামাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট লস অ্যাঞ্জেলেসে ন্যাশনাল গার্ড নামিয়েছিলেন তবে তার পর পরস্থিতির উন্নতি হওয়া দূরে থাক, ঘটেছে আরও অবনতি। ট্রাম্পের বাহিনীর সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। চলছে রবার বুলেট, কাঁদানে গ্যাসও।
সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিকঃ আরও উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে উঠেছে লস অ্যাঞ্জেলেসের পরিস্থিতিল। অভিবাসী ইস্যুতে প্রতিবাদীদের বিক্ষোভ থামাতে সেখানে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের বেনজির সিদ্ধান্ত নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর প্রতিক্রিয়ায় হাজার হাজার বিক্ষোভকারী রাস্তায় নেমে আসে। লস অ্যাঞ্জেলেসের প্রধান ফ্রিওয়ে বন্ধ করে দেয় প্রতিবাদীরা। স্বচালিত যানবাহনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়, স্থানীয় আইন প্রয়োগকারীরা ভিড় নিয়ন্ত্রণে কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট এবং ফ্ল্যাশ ব্যাং ব্যবহার করতে বাধ্য হয়।
ক্যালিফর্নিয়ার গভর্নর গভিন নিউসমের দফতর থেকে জানানো হয়েছে, শহরের তিনটি অঞ্চল মিলিয়ে ন্যাশনাল গার্ডের প্রায় ৩০০ সদস্য মোতায়েন রয়েছেন। গত কয়েক দিন ধরে এই শহরে বিক্ষোভ চলেছে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির বিরুদ্ধেই মূলত বিক্ষোভ।
রবিবার নিউ জার্সিতে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে ট্রাম্প বলেন, “ওরা থুতু ছিটিয়েছ, আমরা মেরেছি।” একই সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “মানুষের দিকে থুতু ছিটিয়েছে। আপনারা জানেন যে, এটা ওদের নতুন কায়দা।” তার পরেই হুঁশিয়ারির সুরে ট্রাম্প বলেন, “কেউ আমাদের পুলিশ আধিকারিক, সেনার দিকে থুতু ছেটাবে, এটা মেনে নেওয়া হবে না। যদি এটা হয়, তা হলে কঠোর ভাবে তা দমন করা হবে।”
জানা গেছে লস অ্যাঞ্জেলেসের কোথাও কোথাও কিছু পুলিশ ঘোড়ার পিঠে করে রাস্তায় টহল দিচ্ছে এই দাঙ্গা পরিস্থিতি সামাল দিতে। অনেক পুলিশকে আবার দাঙ্গা প্রতিরোধকারী সরঞ্জাম নিয়ে ফেডারেল বিল্ডিংগুলি রক্ষার জন্য মোতায়েন করা হয়েছিল। সেখানে ন্যাশনাল গার্ডও মোতায়েন ছিল। এদিকে সাম্প্রতিক দিনগুলিতে কিছু অভিবাসীকে যে আটক কেন্দ্রে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, সেখানেও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। লস অ্যাঞ্জেলেসের পরিস্থিতির জন্য ট্রাম্পকেই দায়ী করলেন ক্যালিফর্নিয়ার ডেমোক্র্যাট গভর্নর গাভিন নিউসাম। তিনি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলা করারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, কোনও রকম আলোচনা ছাড়়াই লস অ্যাঞ্জেলেসে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করা হয়েছে। ট্রাম্পের জন্যই এই পরিস্থিতি বলে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে তোপ দাগেন নিউসাম।
অন্যদিকে ট্রাম্পের হুঁশিয়ারিকে আমল দিতে নারাজ বিক্ষোভকারীরা। কারণ আমেরিকায় অনুপ্রবেশ রুখতে মরিয়া প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইতিমধ্যে কড়া আইন এনেছেন তিনি। মার্কিনিদের স্বার্থে অবৈধ অভিবাসীদের দেশে ফেরানোও শুরু করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। ইতিমধ্যে ১১ এপ্রিল থেকে সে দেশে কার্যকর হয়েছে ‘দ্য এলিয়েন রেজিস্ট্রেশন রিকোয়ারমেন্ট’। এবার অভিবাসীদের সঙ্গে সরাসরি সংঘাত নিরাপত্তা বাহিনীর।