কথা ছিল ডিসেম্বরেই বাংলাদেশের নির্বাচন সম্পন্ন হবে কিন্তু এবার মহম্মদ ইউনুস জানালেন ডিসেম্বর মাসে হচ্ছে না নির্বাচন। কবে হবে নির্বাচন? এই বিষয়ে বড় আপডেট দিলেন ইউনুস।
সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিক: শুক্রবার জাতির উদ্দেশে ভাষণে বাংলাদেশের নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস জানালেন, ২০২৬ সালের এপ্রিল মাসের প্রথমার্ধ্বে নির্বাচন হবে। তাঁর কথায়, ”দেশে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর তিনটি কাজের দায়িত্ব নেওয়া হয়েছিল – সংস্কার, বিচার, নির্বাচন। সেসব কাজ শেষের পরই নির্বাচন হতে পারবে। এবিষয়ে দেশবাসীকে দিশা দেবে নির্বাচন কমিশন।”
শুক্রবার জাতির উদ্দেশে ভাষণে তিনি আরও বলেন, এই মুহূর্তে বাংলাদেশে অন্যতম শক্তি বিএনপি ডিসেম্বর বা তারও আগে ভোট করতে চেয়ে জোরালো দাবি তুলেছিল। তাদের বক্তব্য ছিল কোনও অবস্থাতেই ভোট ডিসেম্বরের পরে হওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। অন্যদিকে জামাত চেয়েছিল না এই বছর নয় বরং আগামী এপ্রিল নাগাদ ভোট হোক। দিনদুয়েক আগেই জামাতের আমির শফিকুর রহমান এই একই দাবি জানিয়েছিলেন। তবে দেখা গেল ইউনুস শেষ পর্যন্ত বিএনপি নয়, জামাতের দাবি পূরণ করার চেষ্টা করলেন।মহম্মদ ইউনূস বলেছেন, “আমি বিশ্বাস করি যে, আগামী ঈদের মধ্যেই সংস্কার ও ন্যায়বিচারের একটি গ্রহণযোগ্য পর্যায়ে পৌঁছাতে সক্ষম হব আমরা। মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের ক্ষেত্রে দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখতে পাবে বাংলাদেশ- যা জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের শহিদদের প্রতি সরকারের সম্মিলিত দায়িত্ব।”
ইউনুস বলেন, ”আগামী নির্বাচন হবে সবচেয়ে স্বচ্ছ, অবাধ, সুষ্ঠ। দেশের ইতিহাস তা মনে রাখবে।” ২০২৪ সালে বাংলাদেশে জুলাই বিপ্লব অর্থাৎ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় যাঁদের মৃত্যু হয়েছে, সেসব শহিদদের জন্য কিছু করে যেতে চায় ইউনুস সরকার। জুলাই সনদ তৈরির মধ্যে দিয়েই তা হবে বলে আশাবাদী অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা। তাঁর কথায়, ‘‘জুলাই সনদ অনুযায়ী আশু করণীয় সংস্কারের কাজগুলো আমরা বাস্তবায়ন করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। বাকি অংশের বেশ কিছু কাজও আমরা শুরু করে যেতে চাই। আশা করি, অবশিষ্ট অংশ পরবর্তীতে নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হবে। এমন একটি নির্বাচন হবে যাতে দেশ ভবিষ্যতে নতুন সঙ্কটে না পড়ে। এ জন্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হল প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার। যে প্রতিষ্ঠানগুলি নির্বাচনের সঙ্গে সরাসরি জড়িত, সেগুলিতে যদি সুশাসন নিশ্চিত করা না যায়, তা হলে ছাত্র-জনতার সব আত্মত্যাগ বিফলে যাবে।’’
ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের আয়োজনের দাবিতে লক্ষাধিক মানুষের সমাবেশও করে বিএনপি। তার আগে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানও একই দাবি করেছিলেন। তারপরই ইস্তফা দিতে পারেন ইউনুস এমন জল্পনা ছড়ায়। তবে জল্পনা ছড়ালেও প্রধান উপদেষ্টার পদ ছাড়েননি তিনি। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনে রাজি নয় বৈষম্যবিরোধী পড়ুয়াদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি। তাই প্রবল চাপের মুখেও এই বছরে নির্বাচনে রাজি নন ইউনুস। তাই জুনের বদলে এপ্রিলে নির্বাচনের কথা বলে আপাতত স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে চাইলেন তিনি।