ওবিসি সংরক্ষণ নিয়ে হাইকোর্টের রায়ের ফলে রাজ্যে স্কুল কলেজে ভর্তি সহ চাকরিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া আটকে ছিলো। বিরোধীরা এই বিষয়টি নিয়ে রাজ্যকেই দায়ী করে। মঙ্গলবার রাজ্য বিধানসভায় উপস্থিত হয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বিষয়ে রাজ্যের অবস্থান স্পষ্ট করলেন।
সঞ্জু সুর নিজস্ব প্রতিনিধিঃ- কয়েকদিন আগে রাজ্য মন্ত্রীসভার বৈঠকে ওবিসি সংরক্ষণ সংক্রান্ত একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যেখানে স্থির করা হয় ওবিসি রিজার্ভেশন ৭ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৭ শতাংশ করা হচ্ছে। এরপর এই সংক্রান্ত রিপোর্ট মঙ্গলবার বিধানসভায় পেশ করা হয়।এদিন মুখ্যমন্ত্রী এই ওবিসি সংরক্ষণ বিষয় নিয়ে সরকারের বক্তব্য বিধানসভায় জানান। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ ২০২৪ সালের ২২ মে একটা অর্ডার দেয়।যার ফলে স্কুল কলেজে ভর্তি সহ সরকারি চাকরিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া স্তব্ধ হয়ে যায়।” যদিও এটি নিয়ে রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী পাবলিক নোটিশ ইস্যু করা হয়, পাড়ায় পাড়ায় মাইকিং করা হয়, সাধারণ মানুষকে জানানো হয়। আইন অনুযায়ী যা যা করার আমরা সেটাই করেছি। বিস্তারিত তথ্য বিধানসভায় পেশ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বর্তমানে আমাদের রাজ্যে ১৪০ টি ওবিসি ক্যাটাগরি রয়েছে, এরমধ্যে ৪৯ টি (যারা আর্থিকভাবে অধিক দুঃস্থ) ক্যাটাগরি কে ক্যাটাগরি-‘এ: এবং ৯১ টি শ্রেনী হলো ক্যাটাগরি ‘বি’। এছাড়াও আরো ৫০ টি শ্রেনী রয়েছে যারা ওবিসি ভুক্ত হওয়ার জন্য আবেদন করেছে। তাদের আবদেন নিয়ে এখন সার্ভের কাজ চলছে। মুখ্যমন্ত্রী আশ্বস্ত করে জানান সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া সময়ের আগেই সেগুলোর বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বাম আমলকে আক্রমণ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সিপিএমের সময় কোনো সার্ভের কাজই হয় নি। আমরা এই সার্ভের কাজ সঠিকভাবে করছি। বিরোধীদের উদ্দেশ্য করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ধর্মের ভিত্তিতে সংরক্ষণ করা হচ্ছে বলা হচ্ছে। এটা সম্পূর্ণ ভুল।এর সঙ্গে ধর্মের কোনো সম্পর্ক নেই। আমরা হাইকোর্টের অর্ডার মেনে, সুপ্রিম কোর্টের অর্ডার মেনে কাজ করছি। আশাকরি এরপর আর কেউ মানুষে মানুষে ভাগাভাগির চেষ্টা করবেন না।
মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই অধিবেশন কক্ষে উপস্থিত বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী কিছু বলতে ওঠেন। কিন্তু ততক্ষণে অধ্যক্ষ প্রথম অর্ধের অধিবেশন শেষ করে বিরতির কথা ঘোষণা করে দেন। তবে বিরোধী বিজেপি বিধায়করা অধিবেশন কক্ষের ভিতরেই ‘মুসলিম তোষণ মানছি না, মানবো না’, ‘হিন্দু বিরোধী সরকার’, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হায় হায়’ বলে শ্লোগান দিতে থাকেন।