উত্তরবঙ্গের ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক কে সিকিমের লাইফ লাইন বলা হয়। কিন্তু প্রতি বছর বর্ষার সময় সেই লাইফ লাইনে ভাঙ্গনের কারণে দিনের পর দিন বন্ধ থাকে শিলিগুড়ি থেকে সিকিম যাওয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই পথ। জাতীয় সড়কের এই ভাঙন নিয়ে মানুষকেই দোষারোপ করছেন কালিম্পং এর একমাত্র বিধায়ক।
সঞ্জু সুর, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ- শিলিগুড়ির সমতল থেকে দার্জিলিং, কালিম্পং বা সিকিম যাওয়ার সময় আপনাদের অনেককেই রাস্তা বন্ধ থাকার কারণে সমস্যায় পড়তে হয়েছে। ঘুর পথে দার্জিলিং বা কালিম্পং যেতে অনেক বেশি সময় ও অর্থ ব্যয় করতে হয়েছে। তবে সিকিম যাওয়ার ক্ষেত্রে এই ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের উপরেই নির্ভর করে থাকতে হয় সবাইকে। পর্যটক হোন বা সাধারণ সিকিম বাসী, অথবা ব্যবসায়িক কারণে যেসব গাড়ি গ্যাংটকে যায় তাদেরকে এই জাতীয় সড়ক ধরতে হয়।
গত কয়েক বছর ধরে নিয়ম করে প্রতি বর্ষায় তিস্তার জলের কারণে এই রাস্তার জায়গায় জায়গায় ধস নেমে ভেঙে পড়ে। গাড়ি চলাচল একদম বন্ধ করে দিতে হয়। বলা হয় প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণেই এই ধস নামে জাতীয় সড়কে।
কিন্তু কালিম্পং এর বিধায়কের পরিষ্কার বক্তব্য কোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয় নয়, প্রতি বছরের এই রুটিন ভাঙন আসলে ম্যান মেড। নিজের বক্তব্যের স্বপক্ষে তাঁর যুক্তি, যেভাবে তিস্তার উপর ন্যাশানাল হাইড্রো পাওয়ার প্রজেক্ট (NHPC) এর একাধিক কাজ হচ্ছে, শিলিগুড়ি থেকে রংপো রেললাইন পাতার কাজ হচ্ছে বা জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ হচ্ছে তাতে বিপর্যয়ের বিষয়টি ভাবা হচ্ছে না।
কালিম্পং জেলার একমাত্র বিধায়ক রুদেন সাডা লেপচার অভিযোগ, “উন্নয়নমূলক এই সব কাজের অবশ্যই প্রয়োজন আছে। কিন্তু এই সব কাজ করতে গিয়ে এক তো নদীর স্বাভাবিক গতিপথ ব্যহত হচ্ছে, দুই, কন্সট্রাকশন এর কাজ করতে গিয়ে পাহাড়ের যেখানে সেখানে ডিটোনেটর চার্জ করে পাহাড়ের ভূমির স্থায়ীত্ব নষ্ট করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে এই কাজে যেসব আবর্জনা রোজ জড়ো হচ্ছে সেগুলো নির্দিষ্ট করে নিরাপদ জায়গায় রাখা হচ্ছে না। অল্প বৃষ্টি হলেই সেগুলো জলের তোড়ে নিচে নেমে আসছে। এতে একদিকে যেমন নদী বক্ষ তার জল ধারণ ক্ষমতা হারাচ্ছে, তেমনি অল্প বৃষ্টিতেই নদীর জল পাড় ছাপিয়ে জাতীয় সড়কের উপর উঠে এসে রাস্তা ভেঙে দিচ্ছে। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ, এনএইচপিসি সহ সব পক্ষের কাছে তাঁর আবেদন ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে এখন থেকেই ব্যবস্থা নেওয়া হোক, নচেৎ আগামি দিনে সিকিমের সঙ্গে বাকি ভারতের যোগাযোগ বরাবরের জন্যই ছিন্ন হয়ে যাবে।