কাজের টোপ দিয়ে ফ্ল্যাটে বন্দী করে পর্ণ ভিডিও এবং দেহ ব্যবসায় যোগ দেওয়ার জন্য পানিহাটির তরুণীকে বাধ্য করেছিল শ্বেতা-আরিয়ান। শ্বেতা এখনও অধরাই তবে বুধবার গল্ফ গ্রিন থেকে গ্রেফতার আরিয়ান খান এবং তাঁর সহযোগী জয়া। অন্যদিকে নির্যাতিতার অবস্থার আরও অবনতি হওয়াতে তাঁকে সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজের আইসিইউতে স্থানান্তর করা হল।
সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিকঃ প্রায় ৬ মাস ধরে মেয়েটির ওপর কম অত্যাচার হয়নি। একজন মহিলা হয়ে আরেক মহিলার ওপর এরকম অত্যাচার দেখে চোখ কপালে উঠছে সবার। যদিও ডোমজুড়ের ওই এলাকায় শ্বেতার ওপর যথেষ্ট ক্ষুব্ধ ছিলেন এলাকাবাসী। নির্যাতিতা তরুণী কাজের আশায় গিয়েছিলেন শ্বেতার কাছে কিন্তু পরিণামে যে তাঁকে সেক্স র্যা কেটে যুক্ত হওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হবে এবং তাঁর ওপর এই অকথ্য নির্যাতন হবে তা তিনি স্বপ্নেও ভাবেননি। এমনিতেই অত্যন্ত আশঙ্কাজনক অবস্থায় সোদপুরের তরুণীকে সাগর দত্ত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল এবার তাঁর অবস্থার আরও অবনতি হওয়ায় তাঁকে আইসিসিইউতে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। আরিয়ান খান আর শ্বেতা খানের নির্যাতনের শিকার মেয়েটির শারীরিক অবস্থা এই মুহূর্তে অত্যন্ত সংকটজঙ্ক বলেই জানা গিয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, কার্যত মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন নির্যাতিতা। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে প্রথমে তাঁর চিকিৎসা চলছিল। মঙ্গলবার রাতে আচমকা শ্বাসকষ্ট সহ বেশ কিছু জটিলতা বশত অবস্থা অবনতি হওয়ায় তাঁকে আইসিসিইউতে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। তাঁর মাথার আঘাত গুরুতর বলে জানা গিয়েছে। সমস্যা ধরা দিয়েছে পেটেও। তাঁর যৌনাঙ্গের চোটও খুবই গুরুতর। প্রচুর রক্তপাত হয়েছে। ভোঁতা কিছু সেখানে জোরপূর্বক প্রবেশ করানো হয়েছে বলে চিকিৎসকদের আশঙ্কা। এছাড়াও ভীষণ ভাবে মেন্টাল ট্রমায় আছেন তিনি। একটু সুস্থ হলে তাঁর কাউন্সেলিং শুরু হবে।
অন্যদিকে পাঁচ দিন খোঁজাখুঁজির পরে অবশেষে বুধবার কলকাতার গল্ফ গ্রিন এলাকা থেকে শ্বেতা খানের ছেলে আরিয়ান খানকে গ্রেফতার করল পুলিশ। হাওড়া পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্তকে ডোমজুড় থানায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। অন্য দিকে, শ্বেতার মাকে আটক করা হয়েছে। তা ছাড়াও মহিলার বছর তিনেকের কন্যাসন্তানকেও কলকাতায় এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। ইতিমধ্যেই ডোমজুড় পর্ন-কাণ্ডে অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবিতে রাজ্য পুলিশের ডিজিকে চিঠি দিয়েছিল জাতীয় মহিলা কমিশন ৷ একইসঙ্গে তিন দিনের মধ্যে ‘অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট’ জমা দিতে বলা হয়েছে। চিঠিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় উপযুক্ত ধারায় দ্রুত মামলা রুজু করে গ্রেফতার করতে হবে বলেও জানানো হয়েছে ৷ পাশাপাশি নির্যাতিতাকে অবিলম্বে বিনামূল্যে চিকিৎসা ও মানসিক পরামর্শ পরিষেবা দিতে হবে বলেও লেখা হয়।
প্রায় পাঁচ ছয় ধরে ওই তরুণীকে আটকে রেখে শারীরিক এবং যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে শ্বেতা খান এবং তাঁর ছেলে আরিয়ান খানের বিরুদ্ধে। তা প্রকাশ্যে আসার পরেই গা ঢাকা দেয় মা এবং ছেলে। ধীরে ধীরে পুলিশি তদন্তে উঠে আসে, কাজ পাইয়ে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে কিভাবে শ্বেতা এবং আরিয়ান পর্ন ভিডিয়োর ব্যবসা চালাত। আরিয়ান জালে এবার শ্বেতার খোঁজে পুলিশ।