ভারতে আর থাকা যাবে না অবৈধ ভাবে। অপারেশন সিঁদুরের পর অনুপ্রবেশ আটকাতে একেবারে কড়া মনোভাব নিয়েছে ভারত আর তাই এতদিন ধরে যে সমস্ত বাংলাদেশি অবৈধ ভাবে ভারতে ছিলেন যারা অনুপ্রবেশের চেষ্টা করেছেন তাঁদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে বাংলাদেশে। ভারতের দরজা বন্ধ হল তাঁদের জন্য।
সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিকঃ অপারেশন সিঁদুরের পরেই অনুপ্রবেশকে কেন্দ্র করে এই কড়া সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। তারপর থেকেই রাজ্যে রাজ্যে নজিরবিহীন তৎপরতা শুরু হয়ে যায়। একদিকে যেমন এই অপারেশন সিঁদুর দিয়ে সন্ত্রাসবাদকে যোগ্য জবাব দেওয়া গেছে এর পাশাপাশি অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধেও বার্তা দেওয়া শুরু হয়েছিল তখনই। পাকিস্তানি নাগরিক যারা ছিলেন ভারতে তাঁদের আগেই বলা হয়েছিল ভারত ছাড়ার কথা এবার নজর বাংলাদেশিদের দিকে। ইতিমধ্যেই ত্রিপুরা, মেঘালয় এবং আসাম সীমান্ত দিয়ে প্রায় ২০০০ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
বিজেপি শাসিত গুজরাট থেকেই বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো সিংহভাগ অনুপ্রবেশকারীদেরই আটক করা হয়েছে, এরপর অনুপ্রবেশকারীদের আটক করার তালিকায় আছে দিল্লি এবং হরিয়ানা, এই সমস্ত জায়গা থেকে বহু বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী আটক হয়েছেন। এখানেই শেষ নয়, অবৈধ ভাবে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢুকে মহারাষ্ট্র ও রাজস্থানেও ডেরা বেঁধেছিলেন বহু অনুপ্রবেশকারী। গত এক মাসে আসাম থেকেও একাধিক বাংলাদেশিকে আটক করে ফেরত পাঠিয়েছে কেন্দ্র। এর পাশাপাশি আর ২০০০ মানুষকে অনুপ্রবেশ করার চেষ্টায় আটক করা হয়েছে।
অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের এই ফেরতের প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করছে বর্ডার গার্ডস বাংলাদেশও। স্বরাষ্ট মন্ত্রক সূত্রে জানা যাচ্ছে, যাঁদের আটক করা হয়েছে, তাঁদের বেশিরভাগই নির্বাসনের বিরোধিতা করছেন না। যাঁরা কয়েক দশক আগে ভারতে এসেছিলেন, তাঁরা বাদে বেশিরভাগ অনুপ্রবেশকারীরাই ফিরে যেতে ইচ্ছুক। তারাও বুঝতে পারছেন এভাবে অবৈধ ভাবে ভারতে থাকার দিন শেষ। তাঁদের আটক করে সীমান্তে নিয়ে যাওয়ার পর, বাংলাদেশিরা তাঁদের আত্মীয়দের ফোন করে সীমান্ত থেকে নিয়ে যেতে অনুরোধ করছেন কারণ তাঁরা যদি বাংলাদেশে ফিরতে না চান, তাহলে তাঁদের আটক করে রাখা হবে অভিবাসন কেন্দ্র বা কারাগারে। তাই ঝামেলা এড়াতে দেশেই ফিরে যাওয়া শ্রেয় বলে মনে করছেন অনুপ্রবেশকারীরা।
দেশ জুড়ে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশিতে যদি কোনও বাংলাদেশি নাগরিকের কাছে ভারতে থাকার প্রয়োজনীয় নথিপত্র না থাকে তাঁকে আটক করে নির্দিষ্ট সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন জায়গায় থাকা এই সেন্টারগুলি রয়েছে সেখান থেকে বায়ুসেনার বিশেষ বিমানে ফেরত পাঠানো হচ্ছে সীমান্তে। প্রথমে সেখানকার অস্থায়ী শিবিরে রেখে তাঁদের তুলে দেওয়া হচ্ছে BSF-এর হাতে। বাকি প্রক্রিয়া শেষ করছে BSF। দরকার পড়লে দুঃস্থদের সামান্য খাবার ও বাংলাদেশি মুদ্রা দিয়ে তাঁদের সীমান্ত পার করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।