সিকিমের ছাতেনে সেনা ক্যাম্পে ধস নেমে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ক্যাম্পটি। ঘটনায় ৩ জওয়ানের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। ৪ জন আহত। তাঁদের উদ্ধার করে চিকিৎসা করা চলছে। এখনও নিখোঁজ ৬ জওয়ান। তাঁদের খোঁজ চালানো হচ্ছে।
সঞ্জনা লাহিড়ী, সাংবাদিক- দিল্লির মৌসম ভবন জানিয়েছে, আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত উত্তর-পূর্ব ভারতের বিস্তীর্ণ এলাকায় বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে সোমবার সকালে লাগাতার বৃষ্টি থেমে খানিকটা আকাশ পরিস্কার অর্থাৎ কিছুটা আবহাওয়ার উন্নতি হয়েছে। অবস্থা উন্নতি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই উত্তর সিকিমের একাংশ এলাকা থেকে আটকে যাওয়া পর্যটকদের উদ্ধার করার কাজ হয়েছে। সোমবার সকাল থেকে লাচুঙে আটকে থাকা পর্যটকদের নামিয়ে আনার কাজ শুরু হয়। তবে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে, লাচেন থেকে পর্যটকদের নীচে নামিয়ে আনার কাজ সহজ নয়। সেখান থেকে পর্যটকদের উদ্ধার করতে আরও খানিকটা সময় লাগবে।
অন্যদিকে সিকিমের ছাতেনে সেনা ক্যাম্পে ধস নেমে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ক্যাম্পটি। ঘটনায় ৩ জওয়ানের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। মৃতরা হলেন, হাবিলদার লখউইন্দর সিং, ল্যান্স নাইক মুনিশ ঠাকুর এবং পর্টার অভিষেক লাখাদা। ৪ জন আহত। তাঁদের উদ্ধার করে চিকিৎসা করা চলছে। এখনও নিখোঁজ ৬ জওয়ান। তাঁদের খোঁজ চালানো হচ্ছে। ভারতীয় সেনার তরফে, মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানানো হয়েছে। সব রকমের সাহায্যের আশ্বাস রয়েছে সেনা বাহিনীর তরফে। রবিবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ ধস নামে।
আটকে পড়া পর্যটকদের উদ্ধার করতে তৎপর জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এবং সেনাদল। পর্যটকদের বিপর্যস্ত এলাকা থেকে সরিয়ে আনতে বিকল্প রাস্তা ও উপায় খুঁজছে প্রশাসন। তবে পর্যটকদের উদ্ধারে প্রশাসনের সঙ্গে হাত লাগিয়েছে লাচুং হোটেল অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যেরাও। উত্তর সিকিমের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে রবিবার রাত পর্যন্ত ব্যাপক বৃষ্টি হলেও সোমবার সকালে আবহাওয়া অনেকটাই অনুকূল। সোমবার প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, এখনও পর্যন্ত ১৮টি গাড়িতে একশোর বেশি পর্যটককে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। উদ্ধারকাজে হাত লাগিয়েছেন স্থানীয় লাচুংপা সম্প্রদায়ের মানুষজনও। এই সম্প্রদায়ের অনেকেরই স্থানীয় হোটেলের ব্যবসা। সোমবার সকালে আবহাওয়ার উন্নতি হতেই তাঁদের অনেকে আটকে থাকা পর্যটকদের ব্যাগপত্র নিজেরাই বয়ে নিয়ে গিয়ে গাড়িতে তুলে দেয়।
প্রবল বৃষ্টির ফলে তিস্তার জলস্তর বেড়েছে। দেখা গেছে ধস নামার ঘটনা। ফলে সেখানকার বহু এলাকা মূল ভূখণ্ডের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। উত্তর সিকিমের বিভিন্ন এলাকায় বেড়াতে গিয়ে আটকে পড়েছেন পর্যটকেরা। শনিবার সেই সংখ্যাটা প্রায় দেড় হাজার বলে স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে। উত্তর সিকিমের অনেক জায়গায় বিদ্যুতের সমস্যা রয়েছে। চুংথাঙে জলের সমস্যাও রয়েছে। প্রশাসন ও সেনাবাহিনী যৌথ ভাবে উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে। তবে বারংবার বৃষ্টি হওয়ায় উদ্ধারকাজ বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে।