সবুজায়নে বিশেষ নজর শিক্ষা দফতরের। স্কুলে স্কুলে ‘ইকো ক্লাবের মাধ্যমে লাগাতে হবে গাছ। স্কুল প্রাঙ্গণে এই কর্মসূচি পালন করার বিজ্ঞপ্তি। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ সমগ্র শিক্ষা মিশনের।
নাজিয়া রহমান, সাংবাদিক- গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর ব্যাপক প্রভাব পড়েছে জলবায়ুর উপর। যার জেরে ক্রমশ বদলে যাচ্ছে জলবায়ু। পরিবেশবিদদের মতে, এই অবস্থায় পরিবেশ সুরক্ষিত রাখার একমাত্র উপায় প্রচুর পরিমানে গছ লাগানো। তাই সারা দেশ জুড়ে স্কুলে স্কুলে সবুজায়নের উপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। বাদ যায়নি এ রাজ্যও। পরিবেশের সুরক্ষায় গাছ লাগানোর পাশাপাশি একাধিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ সমগ্র শিক্ষা মিশনের তরফ থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়েছে, সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে সমস্ত স্কুলগুলিকে ইকো ক্লাব গঠন করতে হবে। অর্থাৎ রাজ্যের সরকারি বা সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত প্রত্যেক স্কুলের নিজস্ব প্রাঙ্গনে অন্ততপক্ষে ৭০ টি গাছ রোপন করতে হবে। এই গাছ লাগানোর জন্য যে সমস্ত স্কুলে পর্যাপ্ত জায়গা নেই তারা কিন্তু বিরত থাকবে না। সেই সমস্ত স্কুলগুলিকে তাদের কোনও উদ্যান বা রাস্তার ধারে বা ফুটপাথে বৃক্ষরোপনের কাজ করতে হবে বলে জানান হয়েছে। অর্থাৎ স্কুলের ভেতর হোক বা বাইরে ইকো ক্লাবের এই কর্মসূচি পালন করতে হবে প্রতিটি সরকারি ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলিকে। নারানদাস বাঙুর মেমোরিয়াল মাল্টিপারপাস স্কুলের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় বড়ুয়া-র জানান, “আমার বিদ্যালয়ে ২০২২ সাল থেকে বাৎসরিক পরীক্ষার ফলাফলের পর সারা বছরের মূল্যায়নের ভিত্তিতে ১ম থেকে ৫ম স্থানের অধিকারী কে মা সমেত একই মঞ্চে একসাথে পুরষ্কৃত করা হয়।মা কে দেওয়া হয় “রত্নগর্ভা” স্মারক। আমরাই রাজ্যে প্রথম এই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।ফলে মা এর নামে প্রতি ছাত্র বৃক্ষ রোপন করবেন এটা আমাদের আরো উৎসাহিত করবে। তবে শুধু মা এর নামে বৃক্ষ রোপন করলে হবে না, সেই বৃক্ষ টাকে প্রতিদিন যত্ন করে তার বৃদ্ধি তে সাহায্য করতে হবে। এবং ভবিষ্যতে বৃদ্ধাশ্রমে মা,বাবা দের সংখ্যা কমাতে হবে।”
শুধুমাত্র ইকো ক্লাব করলেই হবে না। এই কর্মসূচির মাধ্যমে কোন স্কুল কতগুলি গাছ লাগিয়েছেএই চার মাসে, তার উপর হিসাব রাখার জন্য সরকারের তরফ থেকে একটি বিশেষ পোর্টালও খোলা হয়েছে। সেই পোর্টালে আপলোড করতে হবে। সমগ্র শিক্ষা মিশনের এই উদ্যোগ নিয়ে বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডলের বক্তব্য, “বাম আমলে অনেক স্কুল নিজেরাই উদ্যোগ নিয়ে স্কুলে ইকো ক্লাব বানিয়ে ছাত্র ছাত্রীদের উৎসাহিত করতো ভালো কাজ করার জন্য। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ছাত্র ছাত্রীদের শুধু উপভোক্তা বানিয়েছে। তাছাড়া এরা জঙ্গল, নদী জলাজমি প্রায় শেষ করে দিয়েছে। এখন বুঝতে পারছে গত চোদ্দ বছরে এরা পরিবেশের কি ভয়ঙ্কর ক্ষতি করেছে।তাই এই উদ্যোগ। তবে দেরিতে হলেও এই উদ্যোগ ভালো। প্রতিটি স্কুল যাতে এটা করে তা নজরদারির মধ্যে রাখতে হবে।”
শুধুমাত্র ইকো ক্লাব নয়, স্বাস্থ্যকর জীবন গড়ে তোলা ও স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস গড়ে তোলার জন্য আরও একাধিক কর্মসূচি পালন করতে হবে স্কুলগুলিকে বলে জানা গেছে। যেমন আগামী চার মাসে শক্তি বাঁচাও, জল বাঁচাও, প্লাস্টিক মুক্ত দুনিয়া, ই-জঞ্জাল কমান-এর মতো বিষয়ে কাজ করা হবে স্কুলগুলিকে। একটা সুরক্ষিত পরিবেশের পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর জীবন ও খাদ্যাভাস গড়ে তোলার জন্যও একাধিক ক্লাস করাতে হবে স্কুলগুলিকে বলেও জানা গেছে।