ইরান ইজরায়েলের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতির উন্নতির কোন সম্ভাবনা তো নেইই উলটে রোজ বাড়ছে উত্তাপ। এই আবহেই তেহরান খালি করার নির্দেশ দিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই নির্দেশ দিয়েই জি-৭ বৈঠক থেকে তড়িঘড়ি ফিরছেন ট্রাম্প।
সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিকঃ যত দ্রুত সম্ভব তেহরান খালি করার বার্তা দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সম্প্রতি ইরানের জনবসতিপূর্ণ এলাকায় হামলার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন নেতানিয়াহু। সেই আবহেই স্থানীয়দের তেহরান খালির পরামর্শ দিয়ে ট্রাম্প জানালেন, ইরানের উচিত ছিল নতুন পরমাণু চুক্তিতে সই করা। তা না করে নিজেরাই নিজেদের বিপদ ডেকে এনেছে ইরান। ট্রাম্পের এই নির্দেশের পর স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে তাহলে কি ভয়ংকর কিছু ঘটতে চলেছে ইরানে?
এই আবহেই জি৭ সম্মেলনের সফরসূচি কাটছাঁট করে আগেই দেশে ফিরে যাচ্ছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, পশ্চিম এশিয়ার পরিস্থিতির জন্যই জি৭ সম্মেলনের সূচি সম্পূর্ণ না-করে ফিরতে হচ্ছে ট্রাম্পকে। আমেরিকার বিদেশসচিব মার্কো রুবিও মঙ্গলবার রাতেই ওয়াশিংটনে ফিরছেন বলে খবর। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করে ইরানের রাজধানী থেকে সবাইকে সরে যাওয়ার বার্তা দিয়েছেন তিনি। ট্রাম্প লিখেছেন, ইরানের উচিত ছিল নতুন পরমাণু চুক্তিতে সই করা। আমি ওদের চুক্তিতে সই করতে বলেছিলাম। সেটা করলে এই লজ্জার ও সাধারণ মানুষের প্রাণহানীর ঘটনা ঘটত না। ইরান কোনওভাবেই পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী হতে পারবে না। আমি এটি বারবার বলেছি। মানুষের প্রাণহানি হচ্ছে। আমি আবারও বলব, ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে পারে না। আমি এটা বারবার বলছি। সবাই দ্রুত তেহরান ছাড়ুন।”
ইরানের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘেই বলেছেন, তারা এমন একটি আইন নিয়ে কাজ করছে যা ইরানকে পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেবে। তবে তিনি আরও বলেন যে ইরান এখনও পরমাণু অস্ত্র তৈরির বিরুদ্ধে এবং তাদের এমন কোনও ইচ্ছা নেই।পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি, যা এনপিটি নামেও পরিচিত, একটি আন্তর্জাতিক চুক্তি। এর উদ্দেশ্য হল বিশ্বে পরমাণু অস্ত্রের বিস্তার রোধ করা, পরমাণু শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারকে উৎসাহিত করা এবং ধীরে ধীরে পরমাণু অস্ত্র নির্মূল করা। এই চুক্তিটি ১৯৬৮ সালে তৈরি করা হয়েছিল এবং ১৯৭০ সালে কার্যকর হয়। এই আবহে ট্রাম্পের এহেন বার্তা উল্লেখযোগ্য।
মঙ্গলবার সকালেও ইজরায়েলের বিভিন্ন জায়গায় সাইরেনের শব্দ পাওয়া গিয়েছে। গত শুক্রবার থেকে ইরান এবং ইজ়রায়েলের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। আন্তর্জাতিক বিধিনিষেধ ভেঙে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি চালানোর অভিযোগ উঠেছে ইরানের বিরুদ্ধে। ইরান দ্রুত পরমাণু বোমা তৈরি করার জায়গায় চলে এসেছে বলে আশঙ্কা করছে ইজরায়েল। সেই আশঙ্কা থেকেই ইরানের পরমাণুকেন্দ্রে গত শুক্রবার হামলা চালায় ইজ়রায়েল। যদিও ইরানের দাবি বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং অন্যান্য শান্তিপূর্ণ কর্মকাণ্ডের জন্যই তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি চলছে।