এখনও পর্যন্ত গুলির লড়াই চলছে।” পুলিশের মতে, এই এলাকা মাড় অঞ্চলের লাগোয়া, যা বহুদিন ধরেই মাওবাদীদের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। জটিল পার্বত্য বনভূমি ও নদীঘেরা ভূগোলের সুযোগ নিয়ে তারা এখানে দীর্ঘদিন ধরে লজিস্টিক করিডর তৈরি করেছে। ফলে এই অঞ্চল বারবার সংঘর্ষের সাক্ষী থেকেছে।
সঞ্জনা লাহিড়ী, সাংবাদিক- ছত্তিসগড়ে কানকের ছোটেবেঠিয়া থানা এলাকার অন্তর্গত আমাটোলা ও কালপার গ্রামের মাঝের জঙ্গলে শুক্রবার সকালে নিরাপত্তা বাহিনী ও মাওবাদী গোষ্ঠীর মধ্যে তীব্র গুলির লড়াই শুরু হয়। সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত এক মহিলা মাওবাদী নেত্রী নিহত হয়েছেন বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। ঘটনাস্থলে এখনও গুলির লড়াই থেমে নেই। চিরুনি তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে জেলা রিজার্ভ গার্ড (DRG) এবং সীমান্ত নিরাপত্তা বাহিনী (BSF)-এর যৌথ বাহিনী। জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দিনেশ সিনহা জানিয়েছেন, “নির্ভরযোগ্য গোপন সূত্রে মাওবাদীদের উপস্থিতির খবর পেয়ে DRG ও BSF-এর একটি যৌথ দল ওই এলাকায় অভিযানে যায়। তল্লাশির সময় সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষস্থল থেকে এক মহিলা মাওবাদীর দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তার পরনে ইউনিফর্ম ছিল। উদ্ধার হয়েছে অস্ত্রসহ বেশ কিছু সামগ্রীও। এখনও পর্যন্ত গুলির লড়াই চলছে।” পুলিশের মতে, এই এলাকা মাড় অঞ্চলের লাগোয়া, যা বহুদিন ধরেই মাওবাদীদের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। জটিল পার্বত্য বনভূমি ও নদীঘেরা ভূগোলের সুযোগ নিয়ে তারা এখানে দীর্ঘদিন ধরে লজিস্টিক করিডর তৈরি করেছে। ফলে এই অঞ্চল বারবার সংঘর্ষের সাক্ষী থেকেছে।
এই অভিযান রাজ্যের বস্তার ডিভিশনে মাওবাদী দমনের দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত অভিযানের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ বলে জানিয়েছে পুলিশ প্রশাসন। এদিকে, এই ঘটনার কয়েক দিনের মধ্যেই অন্ধ্রপ্রদেশ-ছত্তীসগঢ় সীমান্তে আরও একটি বড়সড় সফলতা পেয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী। মাড়েদপল্লি এলাকায় গ্রেহাউন্ড বাহিনীর অভিযানে নিহত হয়েছেন সিপিআই (মাওবাদী)-র তিন শীর্ষ নেতা। তাদের মধ্যে রয়েছেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য গাজারলা রবি (যার মাথার দাম ছিল ৪০ লক্ষ টাকা) এবং বিশেষ আঞ্চলিক কমিটির সদস্যা অরুণা (মাওবাদী নেতা চালপতির স্ত্রী), যাঁর মাথার দাম ছিল ২০ লক্ষ টাকা। অন্ধ্রপ্রদেশের অল্লুরি সীতারাম জেলার পুলিশ সুপার অমিত বারদার এই তিনজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, “নিরাপত্তা বাহিনীর টানা চাপের ফলে শীর্ষ নেতৃত্বের ভিত কেঁপে উঠছে।” সূত্রের দাবি, কানকের সংঘর্ষেও আরও এক মহিলা মাওবাদী নিহত হয়ে থাকতে পারেন। তবে এখনও পর্যন্ত তা সরকারি ভাবে নিশ্চিত করা হয়নি। বর্তমানে সেনাবাহিনী জঙ্গলে অবস্থান করছে এবং সম্ভাব্য মাওবাদী ঘাঁটিগুলি ঘিরে তল্লাশি অভিযান জারি রেখেছে। এই ধারাবাহিক অভিযানগুলি প্রমাণ করে, শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে শুরু করে নিচু স্তরের কার্যকরী মাওবাদী ইউনিটগুলিকে নিশানা করে কড়া অবস্থান নিয়েছে কেন্দ্র ও রাজ্যের যৌথ নিরাপত্তা বাহিনী।