সপ্তাহ দুয়েক আগে কর্নাটকে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ম্যানেজার ও ওই ব্যাঙ্কের এক গ্রাহকের মধ্যে ভাষাগত বিষয় নিয়ে তুমুল বিতন্ডা হয়। যা সমাজ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। বিষয়টি অর্থ মন্ত্রকেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করে। তারপরেই গত চার তারিখ অর্থ মন্ত্রকের সচিব চিঠি দিয়েছেন দেশের সব রাজ্যের মুখ্যসচিব কে।
সঞ্জু সুর, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ- দিন দুয়েক আগে কেন্দ্রিয় অর্থ মন্ত্রকের সচিব এম নাগারাজু দেশের সব রাজ্যের মুখ্যসচিব কে একটি চিঠি দিয়েছেন। চিঠির বিষয়বস্তু হলো ব্যাঙ্ক কর্মিদের নিরাপত্তা। চিঠিতে কেন্দ্রিয় সচিব লিখেছেন, বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া পোষ্ট ও খবরের মাধ্যমে কিছু খবর সামনে এসেছে যা উৎকণ্ঠা জনক(disturbing incidents of anti social elements)। ব্যাঙ্কিং পরিষেবা ও সেই পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কর্মিরা সাধারণ মানুষের সহায়তার জন্য দায়বদ্ধ। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে কিছু কিছু বিষয় নিয়ে তাদের হেনস্থা করা হচ্ছে। যা কোনোমতেই কাম্য নয়। এমন খবর সামনে এসেছে যেখানে ব্যাঙ্ক কর্মিদের সঙ্গে অসংযত ভাষা ব্যবহার করা হচ্ছে, তাদের শারীরিক ভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে। এইসব ঘটনা ব্যাঙ্ক কর্মিদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করছে ও কাজের প্রতি তাদের উৎসাহে বাধার সৃষ্টি করছে। সুষ্ঠু ব্যাঙ্কিং পরিষেবার ক্ষেত্রে এটা অন্তরায় হয়ে দাঁড়াতে পারে।
ব্যাঙ্ক কর্মিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য তিন দফা নির্দেশিকা জারি করে মুখ্যসচিবদের উদ্দেশ্যে অর্থ দফতরের সচিব লিখেছেন, ১) এই ধরনের ঘটনা আটকাতে প্রতিটি ব্যাঙ্কের শাখাতে পুলিশি নিরাপত্তা বাড়াতে হবে। প্রয়োজনে ব্যস্ততম সময়ে (peak banking hours) পুলিশ পেট্রোলিং এর ব্যবস্থা করতে হবে। বিশেষ করে ব্যাঙ্কের যেসব শাখা সংবেদনশীল এলাকায় রয়েছে। ২) এই ধরনের ঘটনা ঘটলে বা ঘটনার খবর সামনে আসলেই যেন তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ৩) অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ও সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে উদাহরণ স্থির করতে হবে। অর্থ সচিব এম নাগারাজু চিঠিতে আরও লিখেছেন মুখ্যসচিবরা যেন নিজ নিজ রাজ্যের প্রতিটা জেলার জেলাশাসক ও পুলিশ আধিকারিকদের এই বিষয়টি জানিয়ে দেন।
প্রসঙ্গত, কর্নাটকের ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার এর সঙ্গে এক গ্রাহকের যে বাকবিতণ্ডার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে তাতে দেখা গিয়েছে যে ওই গ্রাহক ব্যাঙ্কের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার কে বলছেন, এটা কর্নাটক, এখানে কন্নড় ভাষায় কথা বলতে হবে। এদিকে ওই ব্রাঞ্চ ম্যানেজারও বলছেন এটা ভারত, আমি হিন্দিতে বলবো, কন্নড় (ভাষা) বলবো না। এই নিয়ে দুজনের মধ্যে তীব্র বাদানুবাদ হয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ভিডিও ছড়িয়ে পরার পরই কর্নাটকের বিভিন্ন জায়গায় ‘হিন্দি’ ভাষার বিরুদ্ধে ক্ষোভ দেখাতে থাকেন অনেকে। এমনকি কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়াও বলেন যে ওই ব্রাঞ্চ ম্যানেজার যে ব্যবহার করেছেন তিনি তার কঠোরভাবে নিন্দা করছেন। যদিও পরে ওই ব্রাঞ্চ ম্যানেজার ভিডিও পোষ্ট করে দুঃখপ্রকাশ করেন। তবে ঘটনার দুই সপ্তাহের মাথায় কেন্দ্রিয় অর্থ দফতরের সচিবের এই চিঠি বুঝিয়ে দিল ব্যাঙ্ক কর্মিদের সঙ্গে কোনরকম অভব্য আচরণ বরদাস্ত করা হবে না।