কোনভাবেই কোন কিছু করেই গাজা ইজরায়েলের যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। ইজরায়েলের সাফ কথা সম্পূর্ণ হামাস নিধন না হওয়া অবধি ইজরায়েল থামবে না। গাজায় ত্রাণসামগ্রী নিয়ে বেশ কয়েকজনের প্রতিনিধি দল সমেত যাচ্ছিলেন গ্রেটা থুনবার্গ। কিন্তু গাজায় পৌঁছনোর আগেই গ্রেফতার করা হল তাঁদের।
সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিকঃ ইজরায়েল আগেই জানিয়ে দিয়েছিল থুনবার্গদের প্রতিনিধিদলকে কোন কিছুতেই গাজা ভূখণ্ডে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইজরায়েল কাটজ জানিয়েছিলেন, তিনি সেনাকে নির্দেশ দিয়েছেন যাতে কোনও ভাবেই ওই নৌকা গাজায় পৌঁছোতে না পারে। সোমবার ভোরের দিকে আন্তর্জাতিক জলসীমায় ইজরায়েলি বাহিনী প্যালেস্তাইনমুখী একটি সাহায্যবাহী নৌকাকে আটক করে। নৌকাটিতে ছিলেন সুইডিশ জলবায়ু আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ এবং ফরাসি ইউরোপীয় সংসদ সদস্য রিমা হাসানসহ আরও ১২ জন।
এই মুহূর্তে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে থুনবার্গের শেষ ভিডিও বার্তা। যেখানে সুইডেনের জলবায়ুকর্মীকে স্পষ্ট বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘আমাদের অপহরণ করতে চলেছে ইজরায়েল!’’ এই ভিডিও প্রকাশ্যে এনেছে ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন, যে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হাত ধরে গ্রেটারা গাজায় যাচ্ছিলেন, গ্রেটাকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘‘আমার নাম গ্রেটা থুনবার্গ। আমি সুইডেন থেকে এসেছি। আপনারা যদি এই ভিডিওটি দেখেন, তা হলে জানবেন ইজরায়েল এবং ইজরায়েলের সমর্থকেরা আমাদের আন্তর্জাতিক জলসীমায় আটকে রেখেছে। আমাদের অপহরণ করা হচ্ছে। আমার সকল বন্ধুবান্ধব, পরিবার এবং সহকর্মীকে অনুরোধ করছি যেন তাঁরা আমাকে এবং অন্যদের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মুক্ত করার জন্য সুইডেন সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করেন।’’
ইজরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, ইয়াটটিতে থাকা সদস্যদের উদ্ধার করে নিরাপদে রাখা হয়েছে এবং তাদের পানীয় জল ও খাদ্য সরবরাহ করা হয়েছে। নৌকাটির বোঝাই ছিল প্রতীকী মানবিক সহায়তা, যার মধ্যে চাল ও শিশুখাদ্য ছিল। ইজরায়েলি কর্তৃপক্ষ পুরো উদ্যোগটিকে “মিডিয়া প্ররোচনা” হিসেবে বর্ণনা করেছে।
গত ৬ জুন ভূমধ্যসাগরীয় দ্বীপ সিসিলি থেকে নৌকাটি রওনা দেয়। সোমবার সন্ধ্যায় নৌকাটি গাজায় পৌঁছনোর কথা ছিল। সেখানে গ্রেটা ছাড়াও ছিলেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের পার্লামেন্টের ফরাসি প্রতিনিধি রিমা হাসান। অতীতে বিভিন্ন সময়ে প্যালেস্টাইনিদের প্রসঙ্গে ইজ়রায়েলি নীতির বিরোধিতা করায় রিমার ইজরায়েলে প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞাও রয়েছে। রবিবার রিমা নিজের এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, নৌকায় থাকা সকলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রাত ১টা নাগাদ রিমা লেখেন, ‘‘আজকের রাতটা আমাদের সকলের জন্য খুবই বিপজ্জনক। এখনও পর্যন্ত আমি খবর দিতে পারছি, কিন্তু কিছু ক্ষণ পরেই আর আমাদের কোনও খবর পাওয়া যাবে না। কারণ, ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ইজরায়েলি বাহিনী আমাদের আক্রমণ করতে চলেছে।’’ রিমার দাবি, এর কিছু ক্ষণের মধ্যেই আটক করা হয় সকলকে। যদিও ওই দাবি নাকচ করেছে ইজরায়েলের বিদেশ মন্ত্রক।