এসএসসির ভূমিকায় ফের ক্ষুব্ধ হাইকোর্ট। এক শিক্ষিকার চাকরি চলে যাওয়ার পরেও নতুন নিয়োগে তাঁকে কাউন্সেলিংয়ের সুযোগ না দেওয়ায় তীব্র ভর্ৎসনার সুরে আদালত জানাল, “মামলাকারীকে কি বন্দুকের নলের সামনে মাথা নিয়ে দাঁড়াতে বলা হবে?”
ষষ্ঠী চট্টোপাধ্যায়, সাংবাদিক-২০২০ সালে হাইকোর্টের নির্দেশে নদিয়ার নাহিদা সুলতানা ঝুরুলি আদর্শ বিদ্যাপীঠ-এ নবম-দশম শ্রেণির ইতিহাস বিভাগে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান। তবে ওই নিয়োগ ছিল ২০১৬ সালের এসএসসি প্রক্রিয়ার ভিত্তিতে, যা পরবর্তী সময়ে কলকাতা হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বাতিল হয়।
নাহিদা উচ্চ প্রাথমিকে মেধাতালিকাভুক্ত ছিলেন। ২০২০ সালের ২০ ডিসেম্বর হাইকোর্টের নির্দেশে তাঁকে কাউন্সেলিংয়ে ডাকেও কমিশন। তখন তিনি নবম-দশমে কর্মরত থাকায় নিয়ম অনুযায়ী ৯০ দিন সময় চেয়ে নেন। কিন্তু কমিশন সময় বাড়ানোর বিষয়ে কার্যত তাচ্ছিল্যই করে, এমনটাই আদালতে অভিযোগ। ২০২৫ সালের ৩ এপ্রিল, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চাকরি হারান নাহিদা। তারপর আপার প্রাইমারিতে (উচ্চ প্রাথমিকে) লাঙ্গুলিয়া বানেশ্বরী জুনিয়র হাইস্কুল-এ যোগদানের আবেদন জানালেও কমিশনের তরফে কোনও সাড়া মেলেনি।
মঙ্গলবার বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্যের এজলাসে মামলার শুনানিতে নাহিদার পক্ষের আইনজীবী আশীষ কুমার চৌধুরী জানান, “সুপ্রিম কোর্ট গোটা প্যানেল বাতিল করলেও পুরনো চাকরিতে ফেরার রাস্তা খোলা রেখেছিল। সুপারিশপত্র পাওয়ার পর ৯০ দিন সময় তো আইনত তাঁর প্রাপ্য ছিল। সেই সময় না দিয়ে এসএসসি তাঁকে নিয়োগ থেকে বঞ্চিত করেছে। এটি সম্পূর্ণ বেআইনি।”
শুনানির শেষে বিচারপতি স্পষ্ট ভাষায় নির্দেশ দেন—
১. আপার প্রাইমারির ওই স্কুলে কোনও শূন্য পদ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দিক কমিশন।
২. শূন্যপদ থাকলে যোগ্য প্রার্থীকে কাউন্সেলিংয়ের সুযোগ দিতে হবে।
এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে আগামী ২ জুলাই।