ভাল অভ্যাস সফল হবার প্রথম ধাপ জীবনের ভিত্তি স্থাপন করে সুষম জীবন যাপনে সাহায্য করে সুখী জীবনের চাবিকাঠি ও বটে, ভাল অভ্যাস শেখানোর জন্য বাবা-মাকে বিশেষ সতর্ক থাকার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
মৌসুমী সাহা – শিশুরা ঠিক মাটির মতো, তাই সু অভ্যাস গড়ার আদর্শ সমাজ শিশু কাল। তখন সহযোগিতা গড়ে তোলা যায় কারণ প্রতিটি শিশুই তাদের বাবা মায়ের ভবিষ্যৎ তাই বাবা-মায়ের ভূমিকা ওই ক্ষেত্রে মনে রাখা দরকার।ছোটরা সব সময় আশেপাশে দেখা বিষয়গুলোকেই দেখে এবং অনুকরণ করে। ভাল অভ্যাস বা আচরণ তাদের শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের বিকাশের জন্য বিশেষ উপকারী।
ভাল অভ্যাস সফল হবার প্রথম ধাপ জীবনের ভিত্তি স্থাপন করে সুষম জীবন যাপনে সাহায্য করে সুখী জীবনের চাবিকাঠি ও বটে, ভাল অভ্যাস শেখানোর জন্য বাবা-মাকে বিশেষ সতর্ক থাকার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। কোন বিষয়গুলো মাথায় রাখবেন আসুন দেখে নেওয়া যাক। শিশুরা তাদের চারপাশে ঘটে যাওয়া ইতিবাচক এবং নেতিবাচক ঘটনাগুলোকে সবটাই মনে রাখে। অতএব বাবা-মা এবং বড়দের ভাল অভ্যাস শেখানোর সময় অতিরিক্ত সতর্ক থাকতে হবে। শিশুদের মধ্যে ভাল অভ্যাস করে তোলার অন্যতম সেরা উপায় হল ভাল উদাহরণ স্থাপন করা। শিশুদের শব্দ ব্যবহারের ক্ষেত্রে এবং বই পড়ার মতো বিষয়ে উৎসাহিত করা প্রয়োজন। পরিবারের সঙ্গে জড়িয়ে থাকার বিষয়টিতে উৎসাহিত করুন। সন্তানকে একটি নিয়মিত রুটি এবং সময়সূচি তৈরি করে দিন যাতে তার প্রতিটি পছন্দের কার্যকলাপের জন্য কিছু সময় করে অন্তর্ভুক্ত থাকবে। শিশুকে অনুপ্রাণিত করার জন্য তার ভাল আচরণের জন্য তাকে পুরস্কৃত করুন। আপনার শিশুর আবেগ সে আবেগকে বুঝতে তার সঙ্গে মানসিকভাবে জড়িয়ে থাকার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।। শিশুরা ভুল করবেই সেটা খুবই স্বাভাবিক কিন্তু সেই ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়ার বিষয় শিশুকে ভাল করে বোঝাবেন।
সব চাইতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল আপনার সন্তানের কথা শুনুন তার কথাগুলোকে অবহেলা করবেন না এবং যথেষ্ট কৌতূহল নিয়েই শুনবেন যেন সে মনে করে তাকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। অনেক বাবা-মা আছেন যারা সন্তানদের শিক্ষার ওপরেই জোর দেন। কিন্তু বৃহত্তর সে চিত্রটি সেটাই তারা ভুলে যান,নৈতিক এবং শিক্ষাগত উভয় দিক টাই কিন্তু দেখা প্রয়োজন। শিশুদের জন্য সর্বনিম্ন ৮ ঘণ্টা ঘুম দরকার। তাদের অবশ্যই তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠতে হবে এবং দেরি করে ঘুমোতে যাওয়া এড়িয়ে চলতে হবে এটি যে ভাল অভ্যাস সেটা তাদের বোঝাতে হবে। বাচ্চাদের দৈনন্দিন সমস্ত কাজে জড়িয়ে রাখুন ছোট-খাটো কাজ করতে তাদের উৎসাহিত করুন এতে খুব তাড়াতাড়ি যে কোন জিনিস তারা শিখতে পারবে। সকলের সাথে কি ধরনের ব্যবহার করা উচিত সে বিষয়ে তাকে একটা ধারণা তৈরি করা। বাড়িতে এবং বাড়ির বাইরে সব ক্ষেত্রেই এই আচরণবিধিটা একেবারেই প্রযোজ্য। প্রতিদিন পড়াশোনা করাটা অভ্যাসের মধ্যে গড়ে তোলা।
স্কুলে তাদের সকলের জন্য এটি অপরিহার্য। আপনাদের আর্থিক দায়িত্বের সারমর্ম শিখতে সাহায্য করার বিষয়টি উৎসাহিত করতে হবে। যেমন তাদের পকেটমানি দেওয়া এবং কিভাবে তারা টাকা খরচ করছে তাদের নিয়মিত রেকর্ড তৈরি করার একটা পদ্ধতি অনুসরণ করা। শিশুদের দয়া করে ,ধন্যবাদ, দুঃখিত এই শব্দগুলো ব্যবহার করতে উৎসাহিত করতে হবে ।বিভিন্ন মানুষের সাথে কার্যকর ভাবে এর প্রয়োগ করতে শেখাতে হবে। শিশুদের সত্যি কথা বলা শেখানো উচিত। মিথ্যে কথা বলা একটা খারাপ অভ্যাস এবং তা এড়ানোর পরামর্শ দেওয়া উচিত। সময়ের মূল্য বোঝানোর খুব দরকার আদর্শ প্যারেন্টিং এর ক্ষেত্রে। খেলাধুলা করা অন্যান্য কাজের মতই গুরুত্বপূর্ণ তাই প্রতিদিন বেশ খানিকটা শারীরিক কার্যকলাপে ব্যয় করতে উৎসাহিত করতে হবে ছোটদের। ভাল এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস অবশ্যই অভ্যাসে পরিণত করতে হবে। ফল সবজির মতো স্বাস্থ্যকর খাবারের মত তাজা খাবার খেতে উৎসাহিত করতে হবে। অস্বাস্থ্যকর খাবার এড়িয়ে যাওয়ার শিক্ষা দিতে হবে। এগুলো তাদের শরীরের পক্ষে কতটা ক্ষতিকর সে বিষয়টি বুঝিয়ে দিতে হবে। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকাটাও তো উদ্দেশ্যে পরিণত করতে হবে তাদের স্বাস্থ্যকর ভাবে থাকলে কি ধরনের সমস্যা হতে পারে সেটি যদি তোমরা বুঝতে পার তাহলে নিজেরাই উৎসাহিত হবে স্বাস্থ্যকর ভাবে থাকতে। টেবিলে বসলে বা বাড়িতে কেউ এলে কী ধরনের ব্যবহার করা উচিত সেই এটিকেটগুলো বাচ্চাদেরকে ছোট থেকে যদি শিক্ষা দেওয়া যায় তাহলে বড় হয়ে তার প্রতিফলনে অবশ্যই দেখা যাবে এবং এর জন্য বাবা-মায়ের একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থেকেই যায়।
তবে সবাই যে কথা শোনে এমনটা নয় ছোটরা অবাধ্য হলে প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে ভুল করবেন না। আপনার সঠিক সিদ্ধান্ত আপনার শিশুটির ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে। ইতিবাচক অভিভাবকত্ব শিশুদের সাফল্যের জন্য প্রস্তুত করে। মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত হয় সম্পর্কের উন্নতি হয় পরিবারের পরস্পরের মধ্যে বোঝাপড়া গড়ে ওঠে।