মাম্পি রায়, সাংবাদিক- ইরান-ইজরায়েলের মধ্যে সংঘর্ষ যেন থামার নাম নেই। ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্র, সেনাপ্রধানের বাড়ি, সংবাদমাধ্যমের অফিসকে নিশানা করেছে ইজরায়েল। পাল্টা ইজরায়েলের, স্টক এক্সচেঞ্জে হাসপাতাল এবং সেনা ক্যাম্পের কাছাকাছি মিসাইল ফেলেছে ইরানও। ময়দানে কোনওপক্ষই এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে নারাজ। তারই মাসুল গুনতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
কথায় আছে রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয় উলু খাগড়ার প্রাণ যায়। ইরান-ইজরায়েলও তার অন্যতম উদাহরণ।দুপক্ষের যুদ্ধের আবহে যুদ্ধবিধ্বস্ত ইরান-ইজরায়েলের বিভিন্ন জায়গায় ভিডিও উঠে এসেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। তার মধ্যে ব্যাপক ভাইরাল হয়েছে ইরানের সংবাদ সম্প্রচারের ভিডিওটি। যেখানে দেখা গিয়েছে খবরের লাইভ সম্প্রচার হচ্ছে। খবর পড়ছিলেন সাংবাদিক সাহার এমামি। ঠিক তখনই উড়ে আসে মিসাইল। প্রাণ বাঁচাতে ভয়ে সিট ছেড়ে উঠে যান ওই সাংবাদিক।
তেহরানের ওই সংবাদমাধ্যমেই কর্মরত ছিলেন ভারতের লখনউয়ের বাসিন্দা রবীশ জাইদি। প্রায় ১৫ বছর ধরে ইরানে সাংবাদিকতা করেন তিনি। মিসাইল হানার পর থেকে তাঁর খোঁজ মিলছিল না। পরে জানা যায়, কোনওভাবে সেখান থেকে পালিয়ে প্রাণ বাঁচাতে সক্ষম হয়েছেন রবীশ। রবীশের বাবা আমির আব্বাস জাইদি প্রাক্তন পুলিশকর্মী। গতবছর স্ত্রীকে হারিয়েছেন। ছেলের মৃত্যুর আশঙ্কা কেটে যাওয়ায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন তিনি। তবে ছেলে শহিদ হলেও আফশোস নেই বরং গর্বিত যে শেষ পর্যন্ত নিজের ডিউটি পালন করেছে সে, বলছেন রবীশের বাবা।
যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে আতঙ্কে দিন কাটছিল শ্রীনগরের বাসিন্দা সাবা রাসুলের। সাবা ইরানের উর্মিয়া ইউনিভার্সিটি অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস-এর ছাত্রী ছিলেন। ২০২১ সালে ইরানে গিয়েছিলেন তিনি। ইরানকে মেয়েদের জন্য সুরক্ষিত জায়গা বলেই মনে করতেন এতদিন। কিন্তু যুদ্ধের আবহে সারাক্ষণ বোমা বিস্ফোরণ,মিসাইলের আওয়াজে প্রাণ ভয়ে কাটাচ্ছিলেন সাবা। অবশেষে ভারতীয় দূতাবাসের হস্তক্ষেপে দেশে ফিরতে সক্ষম হয়েছেন তিনি। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন সাবার পরিবারের সদস্যরা।ইরান-ইজরায়েলের মধ্যে সংঘর্ষের আবহে প্রবাসী ভারতীয়দের উদ্ধারকাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। ভারতীয়দেরকে তেহরান, তেল আভিভের মতে শহর ছাড়তে আগেই নির্দেশ দিয়েছিল ভারতীয় দূতাবাস।
বুধবার যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইরান-ইজরায়েলের যুদ্ধ বিধ্বস্ত জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা একাধিক ভারতীয়কে উদ্ধার করে ভারতে ফিরিয়ে আনা হয়েছে নয়াদিল্লির তরফে।এই মিশনের নাম দেওয়া হয়েছে অপারেশন সিন্ধু। প্রথম দফার অপারেশন সিন্ধু ইতিমধ্যে সম্পন্ন। আগামীদিনেও ইরান-ইজরায়েল থেকে ভারতীয়দের উদ্ধার করতে এই মিশন জারি থাকবে বলে জানাচ্ছে নয়াদিল্লি।প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে ভারতের সমস্ত নাগরিকের প্রাণ অমূল্য। তাই আগের মতো এবারেও ভারতীয়দের যুদ্ধবিধ্বস্ত ইরান-ইজরায়েল থেকে উদ্ধার করেছে মোদী সরকার। প্রধানমন্ত্রীকে ভূয়সী প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব।