মাঠে ঈদের নামাজ। কিন্তু ইসকনের রথযাত্রা উৎসবের জন্য সেই মাঠ জুড়েই চলছে প্রস্তুতি। ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বাঁশ, কাঠ, পেরেক। ফলে ইসকনের স্বরণাপন্ন হলেন নামাজ পাঠ কমিটি। সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে ইসকনের স্বেচ্ছাসেবকরা হাত লাগালেন মাঠ পরিষ্কারে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির আরো এক উদাহরণ দেখলো বাংলা। ঘটনাটি দুর্গাপুরের।
বিকাশ সেন, দুর্গাপুর- দীর্ঘদিন ধরেই দুর্গাপুরের আকবর রোড গ্যারাজ ময়দানে ঈদ উপলক্ষে নামাজ পাঠের আয়োজন করা হয়। এদিকে গত তিন বছর ধরে ওই একই মাঠে রথযাত্রা উৎসবের আয়োজন করেন দুর্গাপুর ইসকন মন্দির কমিটি। এমনিতে ঈদ আর রথযাত্রার সময়ের মধ্যে ফারাক থাকার ফলে আগের দুই বার তেমন কোনো সমস্যা হয় নি। কিন্তু এবার আর কয়েকদিন পরেই রথযাত্রা। স্বাভাবিকভাবেই ওই মাঠে তার সম্পূর্ণ প্রস্তুতি সেরে ফেলেছেন ইসকন কর্তৃপক্ষ। এরমধ্যেই পড়েছে মুসলিম সমাজের অন্যতম পবিত্র ঈদ। শনিবার সকালে এই মাঠেই হবে নামাজ পাঠ। এদিকে মাঠের চারিদিকে এখনও ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে বাঁশ, কাঠ, পেরেক। ফলে দুর্গাপুর আকবর রোড গ্যারাজ ঈদগাহ ময়দান কমিটি দ্বারস্ত হন ইসকন কর্তৃপক্ষের। তৎক্ষণাৎ সাড়া দেয় ইসকন। ইসকনের স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে দুই সম্প্রদায়ের মানুষ মাঠ পরিষ্কার করে দেন। সুষ্ঠুভাবে হয় নামাজ পাঠ।
এই প্রসঙ্গে ইসকন দুর্গাপুরের পক্ষে ঔদার্য চন্দ্র দাস জানান, “আমাদের যাওয়ার আগে থেকেই ওখানে নামাজের অনুষ্ঠান হতো। আমরা গত তিন বছর ধরে ওখানে রথযাত্রার অনুষ্ঠান করছি। ওই পাড়ার সকলের সহযোগিতা আমরা পাই। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের অনন্ত চোখ। একটি চোখ আমরা, একটি চোখ তারা। আসলে তো আমরা একজন প্রভুরই আরাধনা করছি।”
ইসকনের পাশাপাশি দুর্গাপুর আকবর রোড গ্যারাজ ঈদগাহ ময়দান কমিটির পক্ষে হারুল রসিদ বলেন, “আমরা এই ময়দানে দীর্ঘদিন যাবত ঈদের নামাজ পড়ে আসছি। গত দুই বছর ও এবছরেও ইসকন কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে সহযোগিতা করছেন। এই জন্য উনাদেরকে আমরা কৃতজ্ঞতা জানাই। ওনাদের এই মানসিকতা সত্যিই এক বিরাট সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উদাহরন। আমরাও বিশ্বাস করি যে মানবিকতার ধর্মই আসল ধর্ম।” মুসলিম সমাজের ঈদের নামাজের মাঠ পরিষ্কারে ইসকনের স্বেচ্ছাসেবকরা হাত লাগাচ্ছেন। এটাই এই বাংলার আসল সম্প্রতির ছবি।