নির্ধারিত দুই সপ্তাহের আগেই ইরানে হামলা আমেরিকার। মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধে এবার সরাসরি জড়িয়ে পড়লেন ট্রাম্প। ইরানের পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রে হামলা আমেরিকার। চুপ নেই ইরানও। একদিকে হরমুজ প্রণালী বন্ধের নির্দেশ অন্যদিকে মার্কিন যুদ্ধ জাহাজেও হামলার নির্দেশ খামেনেইইয়ের।
সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিকঃ মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধে অবশেষে ঢুকেই পড়লেন ট্রাম্প। এতদিন যা সম্ভাবনার আকারে ছিল এবার তাই সত্যি হল। শনিবার ইরানের তিনটি পারমাণবিক কেন্দ্রে হামলা চালাল আমেরিকা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, আমেরিকার সেনাবাহিনী ইরানের ফোরদো, নাতানজ় ও ইসফাহানে অবস্থিত তিনটি পারমাণবিক কেন্দ্রে সফল ভাবে হামলা চালিয়েছে।
শনিবার বেশ কয়েকটি মার্কিন বোমারুকে দেখা গিয়েছিল মিসৌরির ওসাইটম্যান বিমান ঘাঁটি থেকে রওনা দিতে। ‘এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল কমুউনিকেশনস’ দেখাচ্ছিল এই বোমারু বি২ বিমানগুলি প্রশান্ত মহাসাগরের উপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছে। কিন্তু সেগুলির গন্তব্য কোথায় ছিল তা সম্পর্কে স্পষ্ট তথ্য ছিল না। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইরানে মার্কিন আক্রমণ।
এই হামলার পর ট্রাম্প যদিও জানাচ্ছেন, টার্গেট পূরণের পর এখন ইরান এয়ারস্পেসের বাইরে চলে এসেছে মার্কিন বোমারুবিমানগুলি। এই অভিযান সফল হতেই ইতিমধ্যেই মার্কিন সেনাকে অভিনন্দনও জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এখানেই শেষ নয়, ট্রাম্পের দাবি, ‘এ বার শান্তি ফেরানোর পালা।’ জানা গেছে ইরানের পরমাণুকেন্দ্রগুলিকে ধ্বংস করতে আমেরিকা ব্যবহার করেছে জিবিইউ-৫৭ ম্যাসিভ অর্ডন্যান্স পেনিট্রেটর। এই বোমার ওজন প্রায় ১৩ হাজার কেজি। কনক্রিটের ১৮ মিটার ভিতরে এবং মাটির ৬১ মিটার নীচে গিয়ে হামলা চালাতে পারে এই বোমা। যদিও ফোরদো ইরানের পরমাণুকেন্দ্র মাটির ৮০ থেকে ৯০ মিটার নীচে অবস্থিত বলে জানা গিয়েছে তাই আমেরিকার এই বোমা আদৌ ইরানের পরমাণুকেন্দ্র পুরোপুরি ধ্বংস করেছে কিনা সে ব্যাপারে এখনও কিছু নিশ্চিত ভাবে জানা যায়নি। তবে ট্রাম্প সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে আমেরিকার এই বোমা হামলা সফল বলে দাবি করেছেন।
এই প্রসঙ্গে ইজরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, ‘’রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য, ইসরায়েলের জন্য, সমগ্র মানবতার জন্য একটি সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বিশ্ব এখন একটি নিরাপদ স্থান।‘’ ট্রাম্পের এই সাহসী সিদ্ধান্তের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। দাবি করলেন, “ইতিহাস আমেরিকার এই পদক্ষেপকে মনে রাখবে। ইতিহাসে লেখা থাকবে বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক শাসনব্যবস্থা, বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্রকে অস্বীকার করতে পেরেছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। ট্রাম্পের নেতৃত্ব ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ মোড় তৈরি করেছে যা মধ্যপ্রাচ্য এবং তার বহিরাঞ্চলকেও সমৃদ্ধি ও শান্তির এক ভবিষ্যতের দিকে এগোতে সাহায্য করবে।” এবার ইরান এই হামলার পালটা জবাব কি কি ভাবে দেয় সেটাই দেখার।