বৃহস্পতিবার ফের বিকাশভবন অভিযানে সামিল হন চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষাকর্মীরা। স্ব-সম্মানে,স্ব-বেতনে চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে এদিন বিকাশভবন অভিযান করেন তাঁরা।
এদিন সল্টলেকের করুণাময়ী মোড় থেকে মিছিল করে বিকাশভবন যান তাঁরা।
নাজিয়া রহমান, সাংবাদিক
চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষক শিক্ষিকাদের মতো চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলনের ঝাঁঝ বাড়াচ্ছেন চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষাকর্মীরা। বৃহস্পতিবার বিকাশভবন অভিযানে সামিল হন তাঁরা। স্ব-সম্মানে,স্ব-বেতনে চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে এদিন বিকাশভবন অভিযান করেন চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষাকর্মীরা। ২০১৬ সালের প্যানেল বাতিল হওয়ায় আজ তাঁরা চাকরিহারা। গত ২ মাস ধরে বেতনও পাচ্ছেন না। তাই শিক্ষামন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে বিকাশ ভবন অভিযানের সামিল হন চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষাকর্মীরা।
সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ৩ এপ্রিল বাতিল হয়েছে এসএসসি-র ২০১৬ সালের প্যানেল। যার ফলে চাকরি হারিয়েছেন প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী। তবে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ২০২৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চাকরি বহাল রয়েছে যোগ্য শিক্ষক শিক্ষিকাদের। তাঁরা স্কুলে যাচ্ছেন ও বেতনও পাচ্ছেন। কিন্তু তাঁদের চাকরির মেয়াদ ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, তার কারণ ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নতুন নিয়োগ সম্পন্ন করতে হবে এসএসসি -কে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি ও জারি করেছে এসএসসি। কিন্তু পরীক্ষায় বসতে নারাজ চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষক শিক্ষিকারা। একই চাকরির জন্য বারবার একই পরীক্ষায় বসতে নারাজ তাঁরা। মুখ্যমন্ত্রী পরীক্ষায় বসার আবেদনেও অসন্তুষ্ট চাকরিহারারা।
রাজ্য সরকারের কাছে চাকরিহারাদের আবেদন রিভিউ পিটিশনকেই অগ্রাধিকার দিতে হবে। এবং স্বসম্মানে চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের চাকরি ফিরিয়ে দিতে হবে। সেই দাবিতেই আন্দোলনে অনড় চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষক শিক্ষিকারা। অন্যদিকে প্যানেল বাতিল হওয়ায় চাকরি হারিয়েছেন শিক্ষাকর্মীরা। গত মাস ধরে তাঁরা বেতন পান না। যদিও সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চাকরি বাতিল হওয়া শিক্ষাকর্মীদের জন্য ভাতা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন রাজ্য সরকার।
গ্রুপ–সি ও গ্রুপ–ডি কর্মীদের জন্য যথাক্রমে মাসিক ২৫ হাজার ও ২০ হাজার টাকা করে ভাতা দেওয়া কথা সাংবাদিক সম্মেলনে ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষাকর্মীদের দাবি তাঁরা এখনও কোনও ভাতা পাননি। তবে তাঁদের দাবি তাঁরা ভাতা নয় চাকরি ফেরত চান। তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই। তাই স্ব-সম্মানে তাঁরা চাকরি ফেরত চান। তাই শান্তিপূর্ণ ভাবে বিকাশভবন অভিযানে সামিল হন তাঁরা। এদিন সল্টলেকের করুণাময়ী মোড় থেকে মিছিল করে বিকাশভবন যান তাঁরা। তারপর চাকরিহার শিক্ষাকর্মীদের ৮জন প্রতিনিধি বিকাশভবনে একটি ডেপুটেশন জমা দেন।
গত ১৫ মে চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের বিকাশভবন ঘেরাও কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। অভিযোগ, মেন গেট ভেঙে ভিতরে ঢুকে পড়েন চাকরিহারাদের একাংশ। পুলিশের সঙ্গেও বচসায় জড়িয়ে পড়লেন তাঁরা। দীর্ঘক্ষণ তাঁরা বিকাশ ভবন ঘেরাও করে রাখেন। যার ফলে ভিতরে আটকা পড়ে যান বিকাশভবনে কর্মরত বহু কর্মী। আরও অভিযোগ চাকরিহারারা নিজেরা তালা কিনে এনে আটকে দেন বিকাশ ভবনের গেট। সেদিনের সেই পরিস্থিতির যাতে পুনরাবৃত্তি না হয় তারজন্য শিক্ষাকর্মীদের বিকাশভবন অভিযানকে ঘিরে বিকাশভবনের সামনে বিশাল পুলিশ মোতায়েন করা হয়। যদিও আগে থেকেই চাকরিহারা শিক্ষাকর্মীদের তরফ থেকে জানানো হয়েছিল তাঁরা শান্তিপূর্ণ অভিযান করে তাঁদের দাবি জানিয়ে একটি ডেপুটেশন জমা দেবেন। চাকরিহারা শিক্ষাকর্মীদের কর্মসূচি সেভাবেই সম্পন্ন হয়।