স্বচ্ছতা বজায় রাখতে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা নিয়ে সতর্ক স্কুল সার্ভিস কমিশন। নতুন করে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় তিন দফায় নথি যাচাই করবে স্কুল সার্ভিস কমিশন। পাশাপাশি নতুন করে নিয়োগের পরীক্ষার নিয়মবিধি নিয়ে ধোঁয়াশায় চাকরিহারা।
নাজিয়া রহমান, সাংবাদিক
শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা নিয়ে সতর্ক স্কুল সার্ভিস কমিশন। চাকুরিপ্রার্থীদের নথি ও শংসাপত্র নিয়ে যাতে কোনও রকম অস্বচ্ছতা না থাকে তাই নতুন করে হতে চলা শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় চাকুরিপ্রার্থীদের জমা দেওয়া নথি তিন বার ভেরিফিকেশন করা হবে। এসএসসি সূত্রে খবর, প্রথমবার অনলাইনে যাখন আবেদন আসবে তখন একবার চাকুরিপ্রার্থীদের নথি ও শংসাপত্র যাচাই করা হবে। যখন চাকুরিপ্রার্থীদের ইন্টারভিউ নেওয়া হবে সেই সময় নথি ও শংসাপত্র ভালো করে যাচাই করা হবে আবার যখন কাউন্সেলিং হবে তখন তৃতীয় পর্যায়ের নথি যাচাই করা হবে। অতীতে এই ভুল নথি ও শংসাপত্র নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়েছে এসএসসিকে। এই নিয়ে মামলাও হয়েছে। নথি ও শংসাপত্র সঠিক ভাবে যাচাই না হওয়ায় একজনের চাকরি অন্য জন পেয়ে গেছে। এতে আদালত পর্যন্ত মামলা গড়িয়েছে। তাই চাকুরিপ্রার্থীদের নথি ও শংসাপত্র নিয়ে যাতে কোনও রকম সমস্যা না হয় তার জন্য এবার তিনটি পর্যায়ে নথি যাচাই করবে এসএসসি।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে রাজ্য সরকার। ৩০ শে মে শুক্রবার সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে এই বিজ্ঞপ্তি জারি করে স্কুল সার্ভিস কমিশন। তাঁর আগে সাংবাদিক সম্মেলন করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে এসএসসির নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ার জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের কথা ঘোষণা করেন। সেই ঘোষণা অনুযায়ী ৩০ শে মে এসএসসি-র তরফ থেকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তি বলা হয়, ১৬ জুন থেকে অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন পরীক্ষার্থীরা। এই অনলাইনে আবেদন করার শেষ তারিখ ১৪ জুলাই। নবম-দশম এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির সহকারী শিক্ষক পদের জন্য আবেদন করলে পরীক্ষার্থীদের জমা দিতে হবে ৫০০ টাকা। আবেদন ফি ৫০০ টাকা সাধারণ পরীক্ষার্থীদের জন্য। অন্যদিকে তফসিলি জাতি, উপজাতি বা প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীদের দিতে হবে ২০০ টাকা। পরীক্ষায় বসার ফি জমা দিতে হবে ১৪ জুলাই রাত ১২টার মধ্যে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়েছে লিখিত পরীক্ষা হতে পারে সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহ। লিখিত পরীক্ষার ফলপ্রকাশ সম্ভাব্য তারিখ অক্টোবরের চতুর্থ সপ্তাহে। ইন্টারভিউয়ের সম্ভাব্য সময় নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে তৃতীয় সপ্তাহ। এবং প্যানেল প্রকাশিত হবে ২৪ নভেম্বর। কাউন্সেলিং এবং নিয়োগের প্রস্তাব সংক্রান্ত ঘোষণা হতে পারে ২৯ নভেম্বর। এই নিয়োগের পরীক্ষায় চাকরিহারাদের পরীক্ষায় বসার জন্য আবেদন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে একই চাকরির জন্য বারবার একই পরীক্ষায় বসতে নারাজ চাকরিহারারা। মুখ্যমন্ত্রী পরীক্ষায় বসার আবেদনও অসন্তুষ্ট চাকরিহারারা। ২জুন স্কুল খুলেছে।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে স্কুলে যাচ্ছেন চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষক শিক্ষিকারা। তবে আন্দোলন তাঁদের অব্যাহত। হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে বর্তমানে সেন্ট্রাল পার্কের সামনে রোটেশন অনুযায়ী আন্দোলনকারীরা অবস্থান করছেন। তাঁরা তাঁদের দাবিতে অনড়। তাঁরা একই চাকরির জন্য বারবার পরীক্ষায় বসবেন না। সরকারকে স্বসম্মানে চাকরি ফিরিয়ে দিতে হবে। পাশাপাশি তাঁদের এটাও বক্তব্য, এই নতুন করে পরীক্ষার গেজেট বিজ্ঞপ্তি কে ঘিরে তাদের ধোঁয়াশা রয়েছে। তাই নতুন করে এই পরীক্ষাকে ঘিরেও দূর্নীতির আশঙ্কা করছেন তাঁরা।