অভিবাসী ইস্যুতে কোনভাবেই উত্তপ্ত লস অ্যাঞ্জেলেসকে নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। ন্যাশনাল গার্ড কিংবা মেরিনবাহিনী কেউই প্রতিবাদীদের আটকাতে পারছে না। ক্রমশ অবনতি হচ্ছে পরিস্থিতির। এমতাবস্থায় কড়া অবস্থান নিয়ে কার্ফু জারি করে দেওয়া হয়েছে এবং আবারও নয়া হুঁশিয়ারি দিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিকঃ অভিবাসী ইস্যুতে বিক্ষোভের কন্ঠরোধ করতে ট্রাম্প সবরকম ভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ইতিমধ্যেই সেনা মোতায়েনের এই সিদ্ধান্ত প্রথম থেকেই প্রশ্নের মুখে। ক্যালিফর্নিয়ার নেতারা সুর চড়াচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে। তবে কার্যত পাত্তা না দিয়ে তিনি অনড় নিজের সিদ্ধান্তেই। ধাপে ধাপে লস অ্যাঞ্জেলেসে ইতিমধ্যেই ৪০০০ ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করা হয়েছে। তবে এবার জারি করা হল কার্ফু।
এই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি সামাল দিতে শহরজুড়ে জারি হয়েছে কার্ফু জারি করেছেন লস অ্যাঞ্জেলেসের মেয়র কারেন বাস। রাত ৮টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত কার্ফু জারি থাকবে স্পর্শকাতর এলাকায়।লস অ্যাঞ্জেলেস পুলিশ প্রধান জিম ম্যাকডোনেল বলেন, ‘শহরের বিভিন্ন এলাকায় উত্তেজনা বেড়ে গেছে বিগত কয়েক দিন ধরে এর ফলে অশান্তি বাড়ছে তাই জীবন ও সম্পদ সুরক্ষায় কার্ফু অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা। শনিবার থেকে শহরে অবৈধ ও বিপজ্জনক আচরণ উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে।’
অন্যদিকে ট্রাম্প আবার নিজের জায়গায় অনড়। তিনি বিদেশি শত্রুদের হাত থেকে লস অ্যাঞ্জেলেসকে তিনি রক্ষা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তাঁর কথায় ‘আবর্জনার স্তূপে পরিণত হয়েছে এই শহর। লস অ্যাঞ্জেলসকে বিদেশিমুক্ত করবই। এই দিন দেখার জন্য বিদেশের মাটিতে গিয়ে আমাদের সেনারা রক্ত ঝরাননি’। তাঁর দাবি, ‘‘ক্যালিফর্নিয়ায় যা হচ্ছে তা শান্তি, আইনশৃঙ্খলা এবং দেশের সার্বভৌমত্বের উপর আক্রমণ। বিদেশি পতাকা হাতে বিক্ষোভকারীরা অশান্তির আবহ তৈরি করছে।মাত্র কয়েক দশকের ব্যবধানে লস অ্যাঞ্জেলস পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর শহরগুলির পরিবর্তে আবর্জনার স্তূপে পরিণত হয়েছে। পুরো এলাকা এখন আন্তঃজাতিক গ্যাং এবং অপরাধী নেটওয়ার্কের নিয়ন্ত্রণে’। ক্যালিফোর্নিয়ার বিক্ষোভকারীদের ‘পেশাদার উসকানিদাতা ও জন্তুর সঙ্গে তুলনাও করেছেন। মঙ্গলবার উত্তর ক্যারোলিনার ফোর্ট ব্র্যাগে সেনাবাহিনীর সদস্যদের সামনে বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি এ মন্তব্য করেন। এ সময় সেনারা করতালিতে ফেটে পড়েন।
উল্লেখ্য, এই আবহের সমস্ত দায় গভর্নরের ওপর চাপিয়ে তাঁকে গ্রেফতারের হুঁশিয়ারি দিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্পের ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়ে তীব্র ক্ষোভ জানিয়েছিলেন ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্র্যাট গভর্নর নিউসাম। এই সিদ্ধান্তকে ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে উস্কানিমূলক’ বলে মন্তব্য করেন তিনি। যদিও তার কথায় গুরুত্ব না দিয়ে ট্রাম্প বলেছেন ‘যদি গভর্নর, লস অ্যাঞ্জেলেসের মেয়র নিজেদের কাজ করতে না পারেন, তাহলে সরকারকে হস্তক্ষেপ করতে হবে।’ তিনি আরও জানান, গভর্নর কিংবা কারেন বাস, বা অন্য কেউ, অভিবাসন সংস্থার কাজে যিনিই বাধা দেওয়ার চেষ্টা করবেন, তাঁকে গ্রেফতার করা হবে।