আমেরিকায় অবৈধ ভাবে বসবাস কারা করছেন তাঁদের চিহ্নিত করতে পদক্ষেপ শুরু করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। গত কয়েক দিনে লস অ্যাঞ্জেলেস-সহ ক্যালিফর্নিয়ার বিস্তীর্ণ অংশে হানা দিয়েছেন মার্কিন আধিকারিকেরা। আর এই অভিবাসী ইস্যুতে কার্যত উত্তপ্ত লস অ্যাঞ্জেলেস। প্রতিবাদীদের মিছিল ঘিরে পুলিশের সঙ্গে সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ।
সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিকঃ প্যারামাউন্ট এলাকায় ফেডারেল এজেন্টদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে দফায় দফায়। দাঙ্গারোধী পোশাক ও গ্যাস মাস্ক পরিহিত নিরাপত্তা বাহিনী টিয়ার গ্যাস ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। এই পরিস্থিতিতে ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছে, এবার ন্যাশনাল গার্ডের ২ হাজার নিরাপত্তা কর্মীকে মোতায়েন করা হচ্ছে।
এই ইস্যুতে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্যালিফর্নিয়ার গভর্নরের ভূমিকার সমালোচনাও করেছেন। সেখানকার প্রশাসনের উপর আস্থা না রাখতে পেরেই সেনা মোতায়েনের নির্দেশে স্বাক্ষর করেছেন প্রেসিডেন্ট। মূলত তাঁর অভিবাসন নীতির বিরুদ্ধেই লস অ্যাঞ্জেলেসের রাস্তায় প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন শয়ে শয়ে মানুষ। শুক্রবার থেকে চলছে বিক্ষোভ। যাতে শনিবার রণক্ষেত্রের আকার নিয়েছিল গোটা শহর। লস অ্যাঞ্জেলেসের এই পরিস্থিতি ট্রাম্প প্রশাসনকে চিন্তায় রেখেছে।
হোয়াইট হাউজের সহযোগী স্টিফেন মিলার এই ঘটনাকে ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইন ও সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ’ বলে দাবি করেছেন। শনিবার তিনি আরও একধাপ এগিয়ে এটিকে ‘হিংস্র বিদ্রোহ’ বলে অভিহিত করেন।এদিকে, লস অ্যাঞ্জেলেসের ডেমোক্র্যাট মেয়র কারেন বাস এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমি এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ। এসব অভিযান আমাদের শহরের নিরাপত্তা ও শান্তিকে বিঘ্নিত করে। আমরা এসব বর্বর কৌশল সহ্য করব না।
সোশ্যাল মিডিয়ায় সোশ্যালে আক্রমণাত্মক মেজাজে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘সবাই জানেন এই অবস্থায় ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসকাম এবং লস অ্যাঞ্জেলেসের মেয়র কারেন বাস তাঁদের যা কাজ সেটা তাঁরা করতে পারবেন না, তাহলে ফেডারেল সরকার হস্তক্ষেপ করে এই সমস্যাটির সমাধান করবে ঠিক সেভাবেই যেভাবে দাঙ্গাকারী এবং লুটেরাদের ক্ষেত্রে যেভাবে সমাধান করা উচিত।’ অন্যদিকে, লস অ্যাঞ্জেলেসের সাউথইস্ট অঞ্চলের প্যারামাউন্ট এলাকায় শনিবারও প্রায় এক হাজার প্রতিবাদী যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ও শুল্ক প্রয়োগকারী সংস্থা র বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখিয়েছে। অনেকে মুখে গ্যাসমাস্ক পরে, আবার কেউ কেউ মেক্সিকোর পতাকা উড়িয়ে বিক্ষোভে শামিল হয়েছে। এ সময় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে।
জানা গেছে, বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে ফ্ল্যাশ-ব্যাং কনকাশন রাউন্ড এবং পেপার স্প্রে ব্যবহার করা হয়। বিকেল ৪টার মধ্যে শত শত বিক্ষোভকারী লস অ্যাঞ্জেলেস ফেডারেল ভবনের বাইরে জড়ো হয়ে অভিযান বন্ধের দাবি জানায় এবং সার্ভিস এমপ্লয়িজ ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ক্যালিফোর্নিয়ার প্রেসিডেন্ট ডেভিড হুয়ের্তার মুক্তির দাবি তোলে। ইউনিয়নের বিবৃতি অনুসারে, হুয়ের্তা অভিযানের নথিপত্র রাখার সময় আহত ও আটক হন। রাত নামার সঙ্গে সঙ্গে লস অ্যাঞ্জেলেস পুলিশ ডিপার্টমেন্টের হেলমেট পরা অফিসাররা শহরের রাস্তায় লাঠি এবং টিয়ার গ্যাস লঞ্চার নিয়ে সারিবদ্ধ হন। কিছু বিক্ষোভকারী ফেডারেল কোর্টহাউসে অ্যান্টি-আইসিই স্লোগান স্প্রে-পেইন্ট করার পর এবং পুলিশের দিকে ভাঙা কংক্রিটের টুকরো ছুঁড়ে মারার পর কর্তৃপক্ষ অবৈধ সমাবেশ ঘোষণা করে।