হানিমুনে যাওয়ার উদ্দেশ্য স্বামীকে খুন করা, এমনটা যে কেউ ভাবতে পারেন তা দেখিয়ে দিয়েছেন সোনম রঘুবংশী। পরকীয়াই যে স্বামীকে খুনের অন্যতম কারণ তা একপ্রকার স্পষ্ট। কিন্তু তদন্ত যত এগোচ্ছে তত একের পর বিস্ফোরক তথ্য সামনে আসছে। জানা গেছে রাজার শেষকৃত্যের সময় উপস্থিত ছিল সোনমের প্রেমিক রাজ, মানুষ এতটাও নীচ হয়? প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই।
সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিকঃ স্বামীকে খুনের পর ১৭ দিন ধরে পুলিশকে নাকানিচোবানি খাইয়েছেন সোনম। কিন্তু তাতেও লাভ হয়নি। ধরা তাঁকে পড়তেই হল। রাজের সঙ্গে নতুন জীবন শুরু তো অনেক দূরের কথা, হয়ত গোটা জীবন কাটতে পারে জেলের আড়ালে এমনটাই মন নেটদুনিয়ার। রাজের সঙ্গে রাজাকে খুনের নিখুঁত পরিকল্পনা করেছিলেন সোনম সেই পরিকল্পনার অংশ হিসাবেই রাজার খুনের পর একাই পালিয়ে যান আসামের গুয়াহাটি সেখান থেকে চলে যান উত্তরপ্রদেশের গাজিপুরে। কম যান না প্রেমিক রাজও। রাজার শেষকৃত্যের সময় উপস্থিত ছিলেন এই রাজ।
রাজার শেষকৃত্যে উপস্থিত ছিলেন রাজ। একাধিক প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ান থেকে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, জামাইয়ের মৃত্যুতে যখন সোনমের বাবা ভেঙে পড়েছেন তখন তার বাবা দেবী সিংহের সঙ্গেই ছিলেন রাজ। সোনমদের পরিবারের সদস্যেরা চার-পাঁচটি গাড়িতে চেপে রাজার শেষকৃত্যে যোগ দিয়েছিলেন। একটি গাড়ি চালাচ্ছিলেন রাজ। গোটা রাস্তায় তাঁকে কোনও কথা বলতে শোনেননি কেউই। আসলে যেন কোনভাবেই এই খুনের পিছনে তার হাত আছে সেটা বোঝা না যায় তাই কি এই ফন্দি আঁটেন রাজ? ইন্দোরে বসেই খুনের ছক কষে ফেলেছিলেন রাজ। সোনমের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছিলেন তিনি।
এর আগেই রাজার ভাই বিপুল রাজবংশী রাজের নাম শুনে জানিয়েছিলেন সে সোনমের বাবার কর্মচারী। রাজা রঘুবংশীর স্ত্রী সোনমের পারিবারিক সানমাইকা শিটসের ওয়ারহাউসে কাজ করতেন রাজ কুশওয়াহা। খুনের পর গা-ঢাকা না দিয়ে পরিবারের পাশে থেকে কোনদিকে তদন্তের মোড় ঘুরছে তা জানাই কি ছিল রাজের উদ্দেশ্য? নাকি নিজের উপর থেকে সন্দেহ সরাতেই স্বাভাবিক আচরণ করে এসেছে সে? তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
এই মুহূর্তে মেঘালয় পুলিশের তদন্তকারী একটি দল ইন্দোর পুলিশ কমিশনারেটে বসে রাজ কুশওয়াহা, বিশাল চৌহান এবং আকাশ রাজপুতকে টানা জেরা করে চলেছেন। সোমবার রাতে গাজিপুরের চিফ জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ওই তিনজনকে সাত দিনের ট্রানজিট রিমান্ডে মেঘালয়ে পাঠানোর নির্দেশ দেন। রাতেই তিনজনকে ইন্দোর নিয়ে চলে যান মেঘালয় পুলিশের তদন্তকারীরা। তিন জনের মধ্যে রয়েছে সোনমের পুরোনো প্রেমিক রাজ কুশওয়াহা এবং বিশাল চৌহান ও আকাশ রাজপুত নামে দুই ভাড়াটে খুনি।রাজা ও সোনম শিলং রওনা হতেই তিন ভাড়াটে খুনিও পরিকল্পনা মতো গুয়াহাটি রওনা হয়ে যায়। গুয়াহাটিতে পৌঁছে অনলাইনে ছোট কুড়ুল কেনে তারা। ওই কুড়ুল দিয়েই রাজাকে খুন করা হয়েছিল। সোনম ও রাজা শিলংয়ে পৌঁছলে তারাও শিলংয়ে পৌঁছয় এবং সোনম ও রাজা যে হোটেলে উঠেছিল, তার থেকে এক কিলোমিটার দূরের একটি হোটেলে থাকতে শুরু করে।