ভরা রাস্তায় নাগাড়ে গুলি, টরন্টোয় বন্দুকবাজের দাপট

আমেরিকায় বন্দুকবাজের দাপট। প্রকাশ্য রাস্তায় পথচারীদের লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি চালানোর ঘটনা ঘটল কানাডার টরন্টোতে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে টরন্টোর ওই এলাকায়।

সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিকঃ মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাত ৮টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে। যেভাবে টরন্টোর ভরা রাস্তায় চলল এলোপাথাড়ি গুলি তাতে করে নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় অন্তত ১ জনের মৃত্যু ও ৫ জনের আহত হওয়ার কথা জানা গিয়েছে। খোঁজ চলছে অভিযুক্ত বন্দুকবাজের।

কিভাবে ঘটল এরকম এক ঘটনা? প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, এক যুবক পথ চলতে চলতে আচমকাই জনবহুল রাস্তার মাঝেই এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে দেন। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় এক জনের। কেউ বুঝতেও পারেননি ওই যুবকের কাছে বন্দুক রয়েছে। আততায়ী যখন গুলি চালাতে শুরু করেন ভয়ে কেউ তাকে থামাতেও পারেননি। প্রাণ ভয়ে সকলেই দৌড়াদৌড়ি শুরু করে দেন।

টরন্টোর নর্থ ইয়র্কের অদূরে লরেন্স হাইট্‌স এলাকায় , ফ্লেমিংটন ও জাকারি রোডসের কাছে, রানি অ্যাভিনিউ ও অ্যালেন রোডের কাছে খুব স্বল্প দূরত্বেই মঙ্গলবার হামলা চালায় ওই বন্দুকবাজ। আহতদেড় উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। যদিও কারওই চোট গুরুতর নয় বলেই জানানো হয়েছে। তবে ওই হামলাকারীর সম্পর্কে বিশদে কিছু জানানো হয়নি। রানি অ্যাভিনিউ ও অ্যালেন রোডের কাছাকাছি অঞ্চলে তল্লাশি চলছে। কিন্তু ওই যুবকের পরিচয় এবং কেন সে এরকম ঘটনা ঘটালো তা জানতে চেয়ে একাধিক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।

ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। স্থানীয় কাউন্সিলর ডেপুটি মেয়র মাইক কোলের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় শোক প্রকাশ করে টরন্টোর মেয়র অলিভিয়া চাউ বলেছেন, ‘‘লরেন্স হাইট্‌স এলাকায় গোলাগুলির খবরে আমি উদ্বিগ্ন। আমার দফতরের তরফে টরন্টো পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।

গত মার্চ মাসেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় তরুণী এবং তাঁর বাবাকে গুলি করে খুনের ঘটনা ঘটে। সেবারেও প্রকাশ্যেই দোকানে ঢুকে গুলি চালিয়ে দেয় এক ব্যক্তি। গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় প্রৌঢ়ের। পরে হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর কন্যার। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। একই মাসে আমেরিকাতেই গুলি চালিয়ে খুন করা হয় ইজরায়েলি দূতাবাসের দুই কর্মীকে। যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে ইহুদি সংগ্রহশালায় একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন ওই দু’জন। সেখান থেকে বেরোনোর সময় দু’জনকে খুব কাছ থেকে গুলি করেন অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীরা। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় দু’জনের। এপ্রিলেও আমেরিকার শিকাগোয় ভারতীয় বংশোদ্ভূত এক যুবককে গুলি করে খুনের অভিযোগ উঠেছি। ১৬ এপ্রিল শিকাগোর লিঙ্কন পার্কে ২৮ বছরের কেভিন পটেলকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়। পরে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও শেষরক্ষা হয়নি। চিকিৎসার সময়ে মৃত্যু হয় কেভিনের। এই সমস্ত ঘটনা স্পষ্ট করে দিচ্ছে গত কয়েক বছরে আমেরিকায় ক্রমেই বাড়ছে বন্দুকবাজের হামলার ঘটনা।