ট্রেইলার টা শুরু হয়ে একটি ছাদে। প্রীতম গান গাইছেন। ‘লাইফ ইন অ মেট্রো’ সিনেমাটি থেকে এখনও অব্দি তিনি রাস্তায় এবং ছাদে শুধু গান গেয়েই চলেছেন। কিছুই পাল্টায়নি এই কটি বছরে। তবে সেটা তো ট্রেইলার দেখেও বলা জেতে পারে, যে অনুরাগ বাসুর পরিচালনায় তেও কোনো বদল হয়নি। যেন ‘লাইফ ইন অ মেট্রোর’ জেরক্স কপি।
চক্রযুদ্ধ ঘোষ, সাংবাদিক- লাইফ ইন মেট্রো যখন ২০০৭ সালে এসেছিলো তখন রোমান্স কে যে এত সরল ভাবে দেখানো যায়, সেটি বলিউড কে প্রথম বার বাসু বাবু দেখিয়েছিলেন এবং শিখিয়েছিলেন। আজ ‘মেট্রো ইন দিনো’-র ট্রেইলার দেখে মনে হচ্ছে যে বাসু বলিউডের নিয়ম মেনে ওই ফিল্মটির দ্বিতীয় পার্ট বানানোর চেষ্টা করছে।
তিনি প্রথমে শিখিয়েছিলেন, এখন মানছেন। অনুপম খের এবং নিনা গুপ্তার ট্রামের শট, ফুচকা খাওয়ার শট, কঙ্কনা স্কুটি তে পঙ্কজ ত্রিপাঠির কাঁধে ঘুমিয়ে যাওয়ার শট, আদিত্য রয় কাপুরের ‘ভালোবাসা’ ও ‘গ্যাস’ হওয়ার মধ্যে পার্থক্য বোঝানোর দৃশ্য, সারা আলি খানের সব সংলাপের শেষেই একটু জোরে হেসে দেওয়ার ব্যাপারটা, আলি ফজল আর ফাতিমার প্রেগন্যান্সি নিয়ে ঝগড়া করার দৃশ্যটা, কংঙ্কনার পঙ্কজ কে বলা যে সে চাইলে ‘চিট’ করতে পারে বিয়ে তে। এসবের মধ্যে কোনো নতুনত্ব নেই কারণ আমেরিকা তে ‘মডার্ন লভ’ নামক সিরিজ টি আমরা সবাই দেখে নিয়েছি। ইন্ডিয়া তে ভারতীয় ‘মডার্ন লভ’ আমরা আমাজন প্রাইমেই দেখে নিয়েছি। অতদূর কেন? বাসুর নিজেরই কিছু ফিল্মে আমরা এসব ঘটনা দেখে নিয়েছি একটু একটু। তাহলে কি বাকি রইলো?
নতুন বলতে পঙ্কজ ত্রিপাঠির অফিসে নাচা? নিনা গুপ্তার লাল বেনারসি পরে চোখে কালো চশমা পরে ঘরে ঢুকে পড়া? মাতাল হয়ে সারার বাইক থেকে নেমে নিজের বয়ফ্রেইন্ড কে দেখা? পঙ্কজ ত্রিপাঠির স্কার্ট পরে অর্ধনগ্ন অবস্থায় রাস্তায় দৌড়ানো? এসব আমরা দেখিনি? দেখেছি। কোথাও তো দেখেছি। গল্পের ধাচও চেনা জানা।
ট্রেইলারের শেষের দিকে একটু ভালো জিনিসপত্র তাও দেখানো হয় কিন্তু সেটাও খুবই সীমিত। আদিত্য রয় কে “কমিটমেন্ট ফবিক ম্যান চাইল্ড” বলা হলো। কেন? আলি ফজলের বাচ্চা নিয়ে এত ভয় কেন? অনুপম খেরের চরিত্র টা কেন মার খাচ্ছেন? এসব জিনিস ট্রেইলার টা কে বেশ ভালো তৈরী করে তোলে।
২০২৫ সালে দাড়িয়ে সামান্য ওপর-ওপর দিয়ে কোনো সম্পর্কের ওঠা নামা যদি দেখানো হয়ে তাহলে দর্শক কতটা এটাকে মেনে নেবে সেটা বলা কঠিন। দুটি চরিত্রের ছোটবেলা, মানুষিক কাঠামো, এবং নিজেশ্ব ট্রমা টেনে এনে যদি গল্পের মোড় পাল্টাতে পারে কেউ, তাহলেই ব্যাপার টার মধ্যে নতুনত্ব আসবে এবং সিনেমাটি ভালো হবে। আশা করছি ফিল্ম টা ভালো হোক। ট্রেইলারে জিনিস পত্র দেখে বেশ আসাহতই হলাম।