স্বপ্ন নয় বরং দুঃস্বপ্নের উড়ান, যে মানুষগুলো মিনিট পাঁচেক আগেও হাসছিলেন সেলফি তুলছিলেন, তার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই ঝলসে গেলেন তাঁরা। উদ্ধার হল তাঁদের পুড়ে খাক হয়ে যাওয়া মৃতদেহ। এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট ১৭১- এর এই ভয়াবহ দুর্ঘটনার পরে শুক্রবার সকালেই একেবারে গ্রাউন্ড জিরোয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ঘুরে দেখলেন দুর্ঘটনাস্থল। আহতদের দেখতে গেলেন হাসপাতালে।
সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিকঃ বৃহস্পতিবার দুপুরে যেখানে লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানটি ভেঙে পড়ে, শুক্রবার সকালেই সেখানে পৌঁছোলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এদিন সকালে তাঁকে আমেদাবাদ বিমানবন্দরে আনতে যান গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সিআর পাটিল এবং গুজরাটের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্ষ সাঙ্ঘভি। দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজখবর নেন তিনি। এর পাশাপাশি উদ্ধারকাজ কীভাবে চলছে তা খতিয়ে দেখেন প্রধানমন্ত্রী। ধ্বংসস্তূপের দৃশ্য থেকে ভীষণ শোকাহত হয়ে পড়েন তিনি। ঘটনাস্থলে কর্মরত বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সঙ্গেও দেখা করেন প্রধানমন্ত্রী। এই নিয়ে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লিখেছেন, ‘যারা পরিজন হারিয়েছেন তাদের পাশে আমরা সর্বদা রয়েছি। এদিন দুর্ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। ধ্বংসস্তূপটা যেন আমাকে আরও শোকের দিকে ঠেলে দিয়েছে। সেখানে কর্মরত বিপর্যয় মোকাবিলার বাহিনীর কর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ। তারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।’
দুর্ঘটনাস্থল ঘুরে দেখার পর আমেদাবাদ সিভিল হাসপাতালে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল, কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহণমন্ত্রী রামমোহন নায়ডুও। হাসপাতালে গিয়ে বিমান দুর্ঘটনায় আহতদের সঙ্গে কথা বলেন মোদী। এই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন বিশ্বকুমার রমেশ। বিমান দুর্ঘটনায় তিনিই একমাত্র যাত্রী, যিনি প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন। হাসপাতালের বিছানায় শুয়েই আতঙ্কের সেই মুহূর্তের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন বিশ্বাসকুমার। বলেন, উড়ানের ঠিক ৩০ সেকেন্ড পরই সব শেষ! বিমানটা ভেঙে পড়ল। ভীষণ দ্রুত সবকিছু ঘটে গেল। আমি কীভাবে ওখান থেকে বেরিয়ে এলাম জানি না।” হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বুকে চোট পেয়েছেন বিশ্বাসকুমার।
হাসপাতালের সি৭ ওয়ার্ডে বাকি আহতদের সঙ্গেও দেখা করলেন প্রধানমন্ত্রী। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই ওয়ার্ডে বিমান দুর্ঘটনার ফলে আহত হওয়া রোগীর সংখ্যা ২৫ জন। আহতদের সঙ্গে সাক্ষাতের পর নিজের মনের কথাগুলি সমাজমাধ্যমে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। এদিন তিনি লেখেন, ‘আমেদাবাদের বিমান দুর্ঘটনায় আমি শোকাহত। এমন হৃদয়বিদারক ভাবে মানুষের মৃত্যু সহ্য়ের বাইরে। প্রতিটা পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা। তাদের কষ্টটা আমি বুঝতে পারছি এবং আমি এটাও জানি এই শূন্যতা পূর্ণ হওয়ার নয়।’