এবার ভারতে যাত্রা শুরু করতে চলেছে ইলন মাস্কের সংস্থা স্টারলিংক। শুক্রবার জানা গেছে কেন্দ্রীয় সরকারের ছাড়পত্র মিলে গেছে। তাই সকলেই আশাবাদী এবার ভারতে পরিষেবা দিতে পারবে স্টারলিংক।
সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিক: দ্রুত ভারতে পরিষেবা চালু করতে চলেছে ধনকুবের ইলন মাস্কের স্টারলিঙ্ক। ইতিমধ্যে কেন্দ্রের তরফে সবুজ সংকেত মিলেছে। মনে করা হচ্ছে চলতি মাসের মাঝামাঝিই লাইসেন্স পেয়ে যাবে স্টারলিংক এবং পরবর্তী পর্যায়ের কাজ শুরু দেবে মাস্কের সংস্থা। ২০২২ সাল থেকে এই ছাড়পত্রের জন্য সংস্থাটি অপেক্ষা করছিল।
তবে শুধু লাইসেন্স পেলেই হবে না ভারতে কাজ করার ক্ষেত্রে একাধিক বিষয়কে মাথায় রাখতে হবে স্টারলিংককে। যদি স্টারলিঙ্কের তরফে দেওয়া কোনও তথ্য বিভ্রান্তিকর হিসাবে প্রমাণিত হয় তাহলে যে কোনও সময়ে বাতিল হয়ে যাবে লাইসেন্স। ‘ন্যাশনাল স্পেস প্রোমোশন অ্যান্ড অথোরাইজেশন সেন্টার’ যদি অনুমতি দিয়ে দেয় তাহলেই চূড়ান্ত সম্মতি পেয়ে যাবে তারা। আরও জানা গিয়েছে, এককালীন ১ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা দিতে হবে স্টারলিংককে যা ফেরতযোগ্যও নয়। উল্লেখ্য ২০০৮ সালের জানুয়ারি মাসে তৎকালীন টেলিকমমন্ত্রী এ রাজার আমলে বিভিন্ন সংস্থাকে দেওয়া ‘২জি স্পেকট্রাম লাইসেন্স’ বাতিল করে দেয় শীর্ষ আদালত। সিবিআই সেই সময় দাবি করেছিল, লাইসেন্স বরাদ্দ করার সময় সরকারি কোষাগারের ৩০,৯৮৪ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছিল। এর পর থেকেই লাইসেন্স দেওয়া নিয়ে বেড়েছে কড়াকড়ি। ফলে পরিষেবা চালু করার অনুমতি পাওয়ার জন্য মাস্কের সংস্থাকে মোটা টাকাই গুনতে হচ্ছে।
৬৭৫০টি স্যাটেলাইট এই মুহূর্তে স্টারলিংককের অধীনে রয়েছে। তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের তথ্য বলছে, লো আর্থ অরবিটে অবস্থিত ছোট ছোট স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ইন্টারনেট পরিষেবা দিয়ে থাকে এই সংস্থা। পৃথিবীপৃষ্ঠের ১৬০ থেকে ২০০০ কিলোমিটার উচ্চতার মধ্যে কক্ষপথগুলিকে ‘লো আর্থ অরবিট’ বলা হয়ে থাকে। নিচু অবস্থানের কারণে এই স্যাটেলাইট থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চলেও ইন্টারনেট পৌঁছে দেওয়া যায়। ভারতের বাজারে এই সংস্থা ব্যবসা শুরু করলে ইন্টারনেট পরিষেবা আরও জোরদার হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
একদিকে যখন মাস্ক এবং ট্রাম্পের ‘বন্ধুত্ব’র চূড়ান্ত অবনতি ঘটেছে এবং তার জেরে একধাক্কায় অনেকটা পড়ে গিয়েছে টেসলার শেয়ার তখন ভারতে কাজ করার এই ছাড়পত্র মাস্ককে অনেকটা অক্সিজেন দিল বলাই যায়। ইতিমধ্যে ইন্টারনেট এবং মোবাইল ফোন পরিষেবা প্রদানকারী দু’টি সংস্থার সঙ্গে চুক্তিও সেরে ফেলেছে স্টারলিংক, যারা হল ভারতী এয়ারটেল এবং জিও। ফলে মাস্কের সংস্থা ভারতে পরিষেবা প্রদান শুরু করলে ইন্টারনেটের গতি যে অনেকটাই বাড়বে, তা বলাই বাহুল্য।