রহস্য আর অলৌকিকতায় ঘেরা পুরীর মন্দির। সেই রহস্য উদ্ঘাটনে আজও গবেষণা চলছে। প্রায় ৮০০ বছরের সুপ্রাচীন এই মন্দিরের নানা আশ্চর্যের রহস্যভেদ হয় নি আজও। কী সেই রহস্য…। সেই নিয়েই এই প্রতিবেদন।
সাংবাদিক, প্রবীর মুখার্জী : আমাদের দেশে হিন্দু দেব-দেবীর মন্দির বহু রয়েছে। কিন্তু উল্লেখযোগ্য মন্দিরগুলির মধ্যে একেবারে প্রথম সারিতে থাকবে পুরীর জগন্নাথ দেবের মন্দির। প্রাচীন স্থাপত্য যেমন আলাদা করে নজর কাড়ে। তেমনই রয়েছে নানারকম অলৌকিক সব ব্যাপার। যা আরও রহস্যময় করে তুলেছে মহাপ্রভুর এই লীলাক্ষেত্রকে। হিন্দুধর্মের অনেকেরই বিশ্বাস স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণই জগন্নাথ দেবের অবতারে পুজিত হন পুরীর মন্দিরে। সঙ্গে অবশ্য রাধিকা বা রুক্মীনি নয়, বরং দাদা আর বোনকে নিয়েই সাগরের তীরে বিরাজমান। বিশ্বাস এটাও যে মহাপ্রভুর কাছে কিছু চাইলে ভক্তকে বিমুখ করেন না তিনি। তাই এক একজন এমনও রয়েছেন সারা জীবনে তো বটেই এমনকি বছরে বেশ কয়েকবার ছুটে যান শ্রীক্ষেত্রে। পুরীর মন্দিরের বেশ কিছু অলৌকিক ঘটনা আলাদা করে যে নজর কাড়ে, তা আগেই জানিয়েছি। এবার আসা যাক সেই আলোচনায়।
এই মন্দিরের ছায়া দেখা যায় না। ২১৪ ফুট উচ্চতাসম্পন্ন এবং প্রায় ৪ লক্ষ বর্গফুট বিস্তীর্ণ এলাকা নিয়ে তৈরি মন্দির।কিন্তু, এই মন্দিরের চূড়ার ছায়া দেখা যায় না। যা মেলে না বিজ্ঞানের কোনও সংজ্ঞার সঙ্গে। আজও গ্রাম বাংলায় গেলে দেখতে পাবেন কোনও ব্রাহ্মণের ছায়া অপেক্ষাকৃত নীচু জাতির কেউ মারাতে চান না। ছায়া মারানো মানে, ওটা মহাপাপ বলেই বিশ্বাস তাঁদের। হয়তো তো বা সেই কারণেই প্রভূর মন্দিরের চূড়ার ছায়া দেখা যায় না। কিন্তু, এর পিছনে কোনও কারণ আজও খুঁজে বেরান মানুষ।
মন্দিরের মাথায় যে ধ্বজা বা পতাকা দেখতে পাই, লক্ষ্য করে দেখবেন, সেটি হাওয়ার বিপরীতে ওড়ে। সাধারণত যে দিক থেকে হাওয়া আসে, তার উল্টোদিকেই উড়তে দেখা যায় যে কোনো জিনিস। কিন্তু পুরীর মন্দিরের চূড়ার ধ্বজাটি হাওয়ার বিপরীত দিকে উড়তে থাকে। নিয়ম করে মন্দিরের পুরোহিত সেই পতাকাটি বদলও করেন। সেই পতাকা বদল করার সময়েও রহস্য লুকিয়ে আছে। আমরা যখন উপর দিকে উঠি পায়ের স্টেপ যেখানে পড়ে সেই দিকে তাকিয়ে উঠে থাকি। পুরীর মন্দিরে যারা ধ্বজা বদল করতে ওঠেন, তারা কিন্তু, উল্টোদিকে মুখ করে মন্দিরের চূড়ায় ওঠেন। এবং আশ্চর্যের বিষয় হলো কোনও দুর্ঘটনা আজও ঘটে নি।
যেকোনও মন্দিরে আপনি যদি যান, দেখবেন মাথা উঁচু করে মন্দিরের উপরদিকে পায়রা বা অন্যান্য পাখিরা থাকে। রাত্রে মন্দিরের আলো জ্বললেই তাদের দেখা যায়। পুরীর মন্দিরে কোনও পায়রা বা পাখির বাসা তো পাবেনই না। উল্টে এই মন্দিরের উপর দিয়ে কোনও পাখি কিন্তু উড়তে দেখা যায় না। রহস্য রয়েছে আরও। তবে সেই আলোচনা করব পরবর্তী প্রতিবেদনে।