ইরানের ওপর তীব্র আক্রমণ করেছে আমেরিকা। পাল্টা জবাব দিতে শুরু করেছে ইরানও। হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি এবং আমেরিকানরাই যে এই মুহূর্তে ইরানের টার্গেট তা স্পষ্ট করে বলে দেওয়া হয়েছে খামেনেইয়ের দেশের তরফে। এই আবহেই ইরানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফোনে কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিকঃ উত্তপ্ত মধ্যপ্রাচ্য। ইরান এখন বদলা নিতে মরিয়া। এই আবহেই ইরানের পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজখবর নিতে ইরানের প্রেসিডেন্টকে ফোন করলেন নরেন্দ্র মোদি। রবিবার মোদি ফোন করেছিলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানকে। রবিবার দুপুর ৩টে নাগাদ সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করে মোদি জানিয়েছেন, ইরানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। ফোন কথোপকথনে পশ্চিম এশিয়ার সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগপ্রকাশ করেছেন মোদি।গোটা ঘটনায় উদ্বিগ্ন প্রধানমন্ত্রী আলোচনার মাধ্যমে কূটনৈতিক পথে দ্রুত সমাধানের রাস্তা খোঁজার পরামর্শ দিলেন।
প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন, “ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের সঙ্গে কথা বললাম ৷বর্তমান অবস্থা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে আমাদের মধ্যে ৷ সাম্প্রতিক হামলা সম্পর্কে আমার উদ্বেগের কথা তাঁকে জানিয়েছি ৷ আবারও বার্তা দিয়েছি যে অবিলম্বে এই সংঘর্ষ বন্ধ হোক ৷ ওই অঞ্চলের শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিরতা পুনঃস্থাপনে কূটনীতি ও আলোচনাই পথ ৷”
ইরানের ওপর এই হামলার পরে আমেরিকার উদ্দেশে ইরান হুমকি দিয়েছে, ‘এর শেষ দেখে ছাড়ব।’ এখানেই শেষ নয়। খামেনেইয়ের হুঁশিয়ারি, ‘পশ্চিম এশিয়ায় থাকা প্রতিটি আমেরিকান নাগরিক ও সেনা এ বার থাকবে আমাদের নিশানায়। ইরানের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী অপরাধ। পশ্চিম এশিয়ায় এর কোনও স্থান নেই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই খেলাটা শুরু করেছে এবং আমরা এটি শেষ করব।
ইরানের তিনটি পারমাণবিক কেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে আমেরিকা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, আমেরিকার সেনাবাহিনী ইরানের ফোরদো, নাতানজ় ও ইসফাহানে অবস্থিত তিনটি পারমাণবিক কেন্দ্রে সফল ভাবে হামলা চালিয়েছে। শনিবার বেশ কয়েকটি মার্কিন বোমারুকে দেখা গিয়েছিল মিসৌরির ওসাইটম্যান বিমান ঘাঁটি থেকে রওনা দিতে। ‘এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল কমুউনিকেশনস’ দেখাচ্ছিল এই বোমারু বি২ বিমানগুলি প্রশান্ত মহাসাগরের উপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছে। কিন্তু সেগুলির গন্তব্য কোথায় ছিল তা সম্পর্কে স্পষ্ট তথ্য ছিল না। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইরানে মার্কিন আক্রমণ।
অন্যদিকে রবিবার সকাল থেকেই ইরান ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করেছে ইজরায়েলে। ইজরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, ইরান থেকে উড়ে আসা ক্ষেপণাস্ত্র আটকানোর চেষ্টা চলছে। আকাশ প্রতিরক্ষা অস্ত্র সক্রিয় করা হয়েছে। মুহুর্মুহু সাইরেনের শব্দ শোনা যাচ্ছে তেল আভিভে , এর পাশাপাশি জেরুজালেমে একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গিয়েছে। সাধারণ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে বলা হয়েছে। আইডিএফের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে ‘‘ইরান থেকে ইজরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে। প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় রয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না-আসা পর্যন্ত জনসাধারণকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে বলা হচ্ছে”।