মিলন কর্মকার, সাংবাদিক, বাঁকুড়া- পোস্টারের পর এবার চিঠি। ফের মাওবাদী নামাঙ্কিত হুমকি চিঠি ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলে। এবার টার্গেট খাতড়া ব্লকের মুকুন্দপুর গ্রামের তৃণমূল কংগ্রেসের বুথ সভাপতি দ্বিজপদ মিশ্র। তাঁর অভিযোগ, সাদা কাগজে লাল কালি দিয়ে লেখা একটি হুমকি চিঠি তাঁকে পাঠানো হয়েছে, যাতে নির্দিষ্ট দিন ও সময় মতো ৫০ হাজার টাকা পৌছে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় তাঁর দুই নাতিকে তুলে নিয়ে যাওয়ার এবং তাঁকে গুলি করার হুমকি দেওয়া হয়েছে। ঘটনার সূত্রপাত রবিবার রাতে। দ্বিজপদবাবুর দাবি, সেদিন রাতে তিনি যখন ঘুমিয়ে ছিলেন, তখন তাঁর ঘরের দরজার ফাঁক দিয়ে কেউ ওই চিঠি গলিয়ে দিয়ে যায়। সোমবার সকালে ঘুম থেকে উঠে চিঠিটি দেখতে পান তিনি। চিঠিতে স্পষ্ট করে লেখা রয়েছে, আগামী ৪ঠা অগাস্ট রাত সাড়ে এগারোটায় স্থানীয় একটি পুকুরঘাটে “মাওবাদী ফান্ডের” জন্য ৫০ হাজার টাকা নামিয়ে রাখতে হবে। চিঠিতে পুলিশের কাছে যাওয়ার বিষয়ে কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বলা হয়েছে, চালাকি করলেই বিপদ। এমনকি চিঠির একেবারে নিচে লেখা রয়েছে, “ইতি- মাওবাদী”।
চিঠির লেখার ধরন দেখে প্রথমে বিষয়টিকে গুরুত্ব দেননি দ্বিজপদবাবু। তবে বিষয়টি জানাজানি হতেই চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। তবে পুলিশ এই ঘটনার পেছনে আসল মাওবাদী যোগ খুঁজে পাচ্ছে না বলেই জানা গেছে। তাদের প্রাথমিক অনুমান, স্থানীয় কেউ মাওবাদীদের নাম ভাঙিয়ে এই কাজ করে থাকতে পারে। কেননা, ২০১১ সালে রাজ্যে রাজনৈতিক পালাবদলের পর থেকে কার্যত কোনঠাসা হয়ে পড়েছে মাওবাদীরা। মাঝেমধ্যে মেলে নামাঙ্কিত পোস্টার, তবে সেগুলির পেছনে মাওবাদীদের সরাসরি হাত নেই বলেই দাবি পুলিশের। এই চিঠি সত্যিই মাওবাদীদের তরফ থেকে, না কি তা কেবল ভয় দেখানোর উদ্দেশ্যে তৈরি—তা নিয়েই তদন্তে নেমেছে পুলিশ। স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে এই ঘটনার পর ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়েছে। প্রশাসন জানিয়েছে, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।