পহেলগাঁও হামলায় প্রাণ গিয়েছে ২৬ জন পর্যটকের। ঘটনার পর থেকে বারংবার বলা হয়েছে স্থানীয়দের মদত না পেলে পাক জঙ্গিরা এইভাবে হামলার সুযোগ পেত না। এবার সেই কথাই সত্যি হল। হামলার ২ মাস পর বড় সাফল্য এনআইএর। এনআইএর জালে জঙ্গি আশ্রয়দাতারা
সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিকঃ কাশ্মীরে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার ঠিক দু’মাস পর কাশ্মীর থেকে দু’জনকে গ্রেফতার করল এনআইএ। পাকিস্তানি জঙ্গিদের আশ্রয় ও বিভিন্ন ভাবে সহায়তা দেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে ২জনকে। তাঁরা কাশ্মীরের স্থানীয় বাসিন্দা বলেই জানা গিয়েছে।
এনআইএ সূত্রে খবর,ধৃতদের নাম পারভেজ আহমদ জোথার ও বশির আহমদ জোথার। গত কয়েকদিন ধরে একাধিক তথ্য এদের নামে জোগাড় করার পর এনআইএর তরফে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতরা দুজনেই বাটকোট ও হিল পার্ক এলাকার বাসিন্দা। যেটা পহেলগাঁওয়েরই সীমানা অংশ বলা যেতে পারে। তদন্তকারীরা একেবারে দৃঢ় ভাবে সন্দেহ করেছিলেন, স্থানীয় ভাবে হামলাকারীরা যদি সাহায্য বা আশ্রয় না পেত, তাহলে এই ধরনের হামলা করতে পারত না। তাই কারা ছিল ঙ্গিদের আশ্রয়দাতা, তাদের খোঁজ চালাচ্ছিল তদন্তকারীরা। আগেই জানা গিয়েছে, ঘটনার অন্তত কয়েকদিন আগেই হামলাকারীরা এসেছিল। এই এলাকা থেকেই রেইকি করেছিল তারা।
এনআইএ’র তদন্ত থেকে এখনও অবধি যেমনটা জানা যাচ্ছে যে, ওই দুই ধৃত পহেলগাঁওয়ের হিলপার্ক এলাকায় কুঁড়ে ঘর তৈরি করে জঙ্গিদের আশ্রয় দিয়েছিল। তাদের খাবারদাবার ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সব জিনিসপত্রের ব্যবস্থাও এরাই করেছিল। প্রাথমিকভাবে আরও জানা গিয়েছে, ওই দুই যুবক কাশ্মীরের বাসিন্দা হলেও আসলে তারা পাকিস্তানের নাগরিক। জঙ্গিরা লস্কর-ই-তৈবার সদস্য। ভারতে হামলার উদ্দেশে অনেকদিন আগেই কাশ্মীরে এসে বাসা বাঁধে তারা। এই ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে মূল হামলাকারীদের সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যেতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।ধৃতেরা স্বীকার করেছেন যে, আসল পরিচয় জানার পরেও তিন পাক জঙ্গিকে আশ্রয় দেন এবং সাহায্য করেন। ইতিমধ্যেই ওই দুই আশ্রয়দাতার বিরুদ্ধে বেআইনি কার্যকলাপ আইনের ১৯ ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে। অভিযুক্তদের নামের তালিকায় ওই দু’জনের নামও ঢুকিয়েছে এনআইএ।
গত ২২ এপ্রিল পহেলগামে জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারান ২৬ জন। এর মধ্যে ২৫ জনই ছিলেন পর্যটক, একজন ঘোড়া চালক। হামলার পরে সন্ত্রাসবাদীরা কোথায় গেল? তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল। প্রাথমিক তদন্তে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ জানিয়েছিল, ঘটনায় চার জন জড়িত। এর মধ্যে আদিল হুসেন ঠোকার, হাসিম মুসা, আদিল ভাই নামে তিনজনের স্কেচও প্রকাশ করা হয়। ২৭ এপ্রিল ঘটনার তদন্তভার হাতে নেয় NIA। এই তদন্তকারী সংস্থা আগে থেকেই মনে করছিল লস্কর-ই-তৈবার ছায়া সংগঠন ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ এই হামলা চালিয়েছে। এই দু’জনের গ্রেফতারিতে কি মূল হামলাকারীরা জালে আসবে? এখন সেই দিকেই নজর।