১৩ জুন কার্যকর মেয়াদ শেষ হয়েছে অস্থায়ী ফিন্যান্স অফিসার দীপাঞ্জন রায়চৌধুরীর। বর্তমান এখন ফাঁকা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অফিসারের পদ। গুরুত্বপূর্ণ এই পদটি খালি থাকায় চরম সংকটে পড়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। জুটার বক্তব্য, “উচ্চ শিক্ষা দফতর ইচ্ছাকৃতভাবে ফিনান্স অফিসার নিয়ে জটিলতা তৈরী করে রেখেছে।” যদি এই সপ্তাহের মধ্যে উচ্চ শিক্ষা দফতর এই সমস্যার সমাধান না করে তাহলে সোমবার থেকে প্রতিবাদে সামিল হবে জুটার সদস্যরা।
নাজিয়া রহমান, সাংবাদিক
দেশের অন্যতম সেরা উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। সেই বিদ্যালয়েই একাধিক উচ্চপদস্থ আধিকারিকের পদ খালি। নেই স্থায়ী উপাচার্য, নেই স্থায়ী রেজিস্ট্রার, সহ-উপাচার্যের দু’টি পদের মধ্যে একটি শূন্য। নেই স্থায়ী ডিন। এতগুলো পদখালি থাকায় এমনতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ চালানোয় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদ,ফিন্যান্স অফিসারের পদ। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ফাঁকা ফিন্যান্স অফিসারের পদ। অস্থায়ী ভাবে এই পদের দায়িত্ব পালন করছিলেন দীপাঞ্জন রায়চৌধুরী। অস্থায়ী ভাবে যিনি ফিনান্স অফিসার এর দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তার কার্যকালের মেয়াদ গত ১৩ জুন শেষ হওয়ার পর, আর তাঁর কার্যকালের মেয়াদ বাড়ায়নি শিক্ষা দফতর। কে সেই দায়িত্ব পালন করবে তাও জানানো হয়নি। যা নিয়ে চরম সংকটে পড়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠনের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, “যিনি ফিনান্স অফিসার এর দায়িত্ব পালন করছিলেন তার মেয়াদ গত ১৩ জুন শেষ হয়ে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অনেক আগেই তা উচ্চ শিক্ষা দফতরে জানিয়েছিলো। কিন্তু উচ্চ শিক্ষা দফতর ইচ্ছাকৃতভাবে ফিনান্স অফিসার নিয়ে জটিলতা তৈরী করে রেখেছে এখনো পর্যন্ত। “
বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার ক্ষেত্রে ফিনান্স অফিসার একটি অত্যন্ত পদ। জুটার তরফ থেকে এটাও জানানো হয়েছে “গত সোমবার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিনান্স অফিসার এর মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে কেউ নেই । এই পদ এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে একদিনের জন্যও এই পদে কেউ না থাকলে অনেক কাজ আটকে যায়। বহু গুরুত্বপূর্ণ ফাইল এবং পেমেন্ট আটকে গেছে। এমনকি বেশ কিছু স্ট্যাটুটরি পেমেন্ট না করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন পর্যন্ত হতে পারে। এর আগে দায়িত্বপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার পদের মেয়াদও শেষ হয়েছিল। কিন্তু সেক্ষেত্রে উচ্চ শিক্ষা দফতর মেয়াদ শেষের আগেই সেই পদে যিনি ছিলেন তাঁর মেয়াদ বাড়িয়ে দিয়েছে । কিন্তু ফিনান্স অফিসার এর ক্ষেত্রে ইচ্ছে করে জটিলতা তৈরী করেছে। “
বিবৃতিতে শিক্ষক সংগঠন জুটার তরফ থেকে অভিযোগ তোলা হয়েছে,”শোনা যাচ্ছে উচ্চ শিক্ষা দফতর নাকি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে থেকে ফিনান্স অফিসার নিয়োগ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ফান্ড এর কন্ট্রোল নিতে চায়। এর আগে এইচআরএমএস চালুর উদ্যোগ নেওয়ার মধ্যে দিয়ে সেটি শুরু করেছে। এখন উচ্চ শিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কেউ কেউ ফিনান্স অফিসার এর মেয়াদ বাড়ানোর প্রক্রিয়া আটকে দিয়ে জটিলতা তৈরী করছেন । আসলে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে আর্থিক ভাবে দুর্বল করার চক্রান্ত অনেক আগেই শুরু হয়েছে – ফিনান্স অফিসার নিয়ে জটিলতা তৈরী করা তারই অংশ। “
এই ফিনান্স অফিসার না থাকার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিক, শিক্ষক -শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মী থেকে গবেষক ও ছাত্রছাত্রী প্রত্যেকেই ক্ষতির মুখে পড়বে। তেমনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরো আর্থিক ব্যবস্থাই ভেঙে পড়বে বলে মত জুটার। এই নিয়ে তীব্র আন্দোলনে যাওয়ার কথা ভাবছে জুটা। জুটার তরফ থেকে জানানো হয়েছে যে যদি এই সপ্তাহের মধ্যে উচ্চ শিক্ষা দফতর এই সমস্যার সমাধান না করে তাহলে সোমবার থেকে প্রতিবাদে সামিল হবে জুটার সদস্যরা।