ভারতের জলবোমায় একেবারে ঘায়েল পাকিস্তান। সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত করে শাহবাজের দেশে ওয়াটার স্ট্রাইকই করেছে ভারত আর তার জেরে জলের অভাবে ধুঁকছে পাকিস্তান। গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁও হামলার পর সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি স্থগিত করে দিয়েছে ভারত। প্রথম থেকে এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে এসেছে পাকিস্তান। ভারতকে তা পুনর্বিবেচনা করতে বলে এই নিয়ে ৪ বার চিঠি দেওয়া হল।
সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিকঃ পাকিস্তানের দৈন্যদশা আগেই গোটা বিশ্বের সামনে প্রকাশ পেয়ে গিয়েছিল এবার আরও একবার তাদের জরাজীর্ণ চেহারা সকলের সামনে। যে ভারতের মাটিকে রক্তাক্ত করেছিল পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিরা সেই ভারতের কাছেই রীতিমত হাতে পায়ে ধরতে হচ্ছে শাহবাজ শরিফকে। এখন পাকিস্তানের কোথাও জলকষ্ট, কোথাও বা আবার বন্যা পরিস্থিতি! দেশবাসীর শুকিয়ে মরার অবস্থা। এই অভাবনীয় জল সংকট থেকে রক্ষা পেতে ফের ভারতের কাছে কাকুতি-মিনতি শুরু করেছে পাকিস্তান। সিন্ধু চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়ে ভারতকে অন্তত বার চারেক চিঠি দিয়েছে ইসলামাবাদ। প্রতিটি চিঠিতে একটাই আর্জি, দয়া করে সিন্ধু জল চুক্তি বাতিল করবেন না।
চিঠিগুলি এসেছে পাকিস্তানের জলসম্পদ মন্ত্রকের সচিব সৈয়দ আলি মুর্তাজার কাছ থেকে। ভারতের জলশক্তি মন্ত্রক চারটি চিঠিই গ্রহণ করেছে, তার পর তা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বিদেশ মন্ত্রকে। কিন্তু বারংবার চিঠি দেওয়াই সার, সিন্ধু জলচুক্তি পুনর্বহালের অনুমতি পায়নি ইসলামাবাদ। ফলে জলের জন্য এখন অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই শাহবাজ-মুনিরদের।
পাকিস্তানের তরফ থেকে চিঠিগুলো কবে পাঠানো হয়েছে তা জানা যায়নি এখনও তবে বিষয়টি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল এক ব্যক্তি জানিয়েছেন, তিনটি চিঠি অপারেশন সিঁদুরের পর লেখা হয়েছিল। আরও জানা গেছে, পাকিস্তানের পক্ষ থেকে দাবি করে হচ্ছে যে, একতরফাভাবে এই চুক্তি স্থগিত করতে পারে না ভারত এবং এই স্থগিতাদেশ এক প্রকার নিয়ম লঙ্ঘন। পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ জানান, এই চুক্তির উপরে ২৪ কোটি পাকিস্তানির জীবন নির্ভর করে আছে। ভারতের এই সিদ্ধান্ত বেআইনি বলে দাবি তাঁর। এই বিষয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টিও আকর্ষণ করেছেন তিনি। শরিফের দাবি, সিন্ধু চুক্তি স্থগিত করে ভারত জলকে অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করতে চাইছে।
পাকিস্তানের চিঠির বিষয়ে এখন পর্যন্ত ভারতের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। নিজেদের সিদ্ধান্তে অটল রয়েছে ভারত। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল গত ২৯ এপ্রিল বলেছিলেন যে ‘বিশ্বাসযোগ্যভাবে সীমান্ত সন্ত্রাস পরিত্যাগ না করা পর্যন্ত’ পাকিস্তানের সাথে আলোচনায় বসবে না ভারত। অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিতে গিয়ে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন রক্ত এবং জল একসঙ্গে বইতে পারে না, অর্থাৎ সেদিন আরও একবার বার্তা দিয়েছিলেন সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিতই থাকবে। ফলে জলকষ্টে ভুগে আর কতবার পাকিস্তানকে ভারতের কাছে জলভিক্ষা করতে হয় সেটাই দেখার।