বাইরের কোনও এজেন্সি দিয়ে প্রশ্ন তৈরি করানো যাবে না। প্রশ্ন তৈরি করতে হবে স্কুলকেই। এমনই কড়া নির্দেশিকা জারি করল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। যদি কোনও স্কুল এই নির্দেশ অমান্য করে তাহলে সংশ্লিষ্ট সেই স্কুলপ প্রধানকে জবাবদিহি করতে হবে। এমনই বিজ্ঞপ্তি জারি করল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।
নাজিয়া রহমান, সাংবাদিক- স্কুলকেই করতে হবে সামেটিভের প্রশ্ন। এই নিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। স্কুলের দ্বিতীয় ও তৃতীয় সামেটিভ ইভ্যালুয়েশনের প্রশ্নপত্র বাইরের কোনও এজেন্সির কাছ থেকে নেওয়া যাবে না। নির্দেশিকা জারি করে সেকথা পরিষ্কার করে জানালো মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। বিজ্ঞপ্তিতে এটাও জানানো হয়েছে যদি কোন স্কুল এই নির্দেশিকা অমান্ করে বাইরের এজেন্সি থেকে প্রশ্নপত্র নেন তাহলে সংশ্লিষ্ট স্কুলের প্রধানকে জবাবদিহি করতে হবে।
এমন অনেক সরকারি স্কুল আছে যেখানে ক্লাসের সামেটিভ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র বাইরে থেকে নেওয়া যাবে না। প্রশ্ন করতে হবে স্কুলগুলিকেই। মধ্যশিক্ষা পর্ষদ সূত্রের খবর, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী প্রধান শিক্ষকদের উপর এই প্রশ্নপত্র নেওয়াকে কেন্দ্র করে চাপ সৃষ্টি করে বলে অনেক সময় এই অভিযোগ শোনা যায়। সেই সব সমস্যা এড়াতেই এই নির্দেশ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের বলে জানা গেছে। কলেজিয়াম অফ অ্যাসিস্ট্যাণ্ট হেডমাস্টার্স এণ্ড অ্যাসিস্ট্যাণ্ট হেডমিস্ট্রেসেস-এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস জানিয়েছেন,” বিগত কয়েক বছর যাবৎ পর্ষদ এই বিজ্ঞপ্তি দিলেও কয়েকটি শিক্ষক সংগঠন ও কিছু বিদ্যালয় প্রধান এটাকে বুড়ো আঙুল দেখাচ্ছেন, এটা কঠোর হাতে দমন করা উচিত”।
অন্যদিকে শিক্ষকমহলের একাংশের দাবি, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের নির্দেশ মেনে স্কুলেগুলি প্রশ্ন করার সময় একাধিক কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখিন তাদের হতে হবে। যেমন প্রশ্ন তৈরি করতে গেলে যে অতিরিক্ত খরচ হবে তার ব্যয়ভার নিয়ে সমস্যায় পড়তে হতে পারে স্কুলগুলিকে। পাশাপাশি স্কুলগুলিতে শিক্ষাকর্মীর অভাব তো আছেই।
স্কুলগুলির মত, স্কুল প্রশ্ন করবে এটা যেমন ঠিক। তেমই স্কুলগুলিকে নিজেদের প্রশ্ন তৈরির জন্য যে অতিরিক্ত খরচ বহন করতে হয় সেটার কোনও সংস্থান নেই! তার উপর নিয়োগ বাতিলের জেরে পর্যাপ্ত শিক্ষাকর্মীও স্কুলে স্কুলে নেই। ২০১৬ সালের এসএসসি-র প্যানেল বাতিলের পর আরও সেই সমস্যা বেশি হয়েছে। বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘মধ্যশিক্ষা পর্ষদ যে নির্দেশ দিয়েছে তা মেনে নিতে হয়তো সকলেই বাধ্য হবে। কিন্তু পর্ষদের এটাও বোঝা উচিত, পরীক্ষা ব্যবস্থা পরিচালনা করার জন্য সরকার যে কম্পোজিট গ্রান্ট দেয় গতবার তার অর্ধেক দিয়েছিল। এ বছর কত দেবে জানি না। স্কুলগুলোর আর্থিক অবস্থা দিনে দিনে আরও খারাপ হচ্ছে। এত খরচ বহন করবে কী করে!’’
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সংশ্লিষ্ট এই বিজ্ঞপ্তিতে সামেটিভ পরীক্ষার সূচিও দেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, চলতি বছর চতুর্থ থেকে দশম শ্রেণির দ্বিতীয় সামেটিভ পরীক্ষা শুরু হবে ১ অগস্ট থেকে, চলবে ৮ অগস্ট পর্যন্ত। অন্যদিকে চতুর্থ থেকে নবম শ্রেণির তৃতীয় সামেটিভ পরীক্ষা শুরু ১ ডিসেম্বর থেকে। চলবে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। দশম শ্রেণির টেস্ট শুরু হবে ৩ নভেম্বর। চলবে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত। এবছরের মাধ্যমিকে টেস্ট গত বছরের তুলনায় আট দিন এগিয়ে এলো। পরীক্ষা এগিয়ে আসায় পরীক্ষার্থীরা পড়ার স্য় একটু কম পাবে বলে মত শিক্ষকমহলের একাংশের।