রাশিয়া ফের ইউক্রেনের উপর ড্রোন হামলা শুরু করেছে। মঙ্গলবার ভোরে ইউক্রেনের রাজধানী কিভে নতুন করে হামলা চালিয়েছে রুশ বাহিনী। হামলা হয়েছে ইউক্রেনের দক্ষিণ প্রান্তে বন্দর শহর ওডেসাতেও। ওডেসা শহরের একটি হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে রুশ বোমারু ড্রোন আছড়ে পড়ছে বলে অভিযোগ ইউক্রেনের। অন্য দিকে, রাশিয়াও দাবি করছে , মঙ্গলবার রাত থেকে ড্রোন হানা শুরু করেছে ইউক্রেন। ইউক্রেনের ড্রোন হানার ভয়ে সাময়িক ভাবে মস্কোর সব বিমানবন্দর বন্ধও করে দেওয়া হয়েছে রাশিয়ায়।
সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিকঃ মাত্র কয়েকদিন আগেই ইউক্রেন রাশিয়ার বায়ুসেনা ঘাঁটিতে বোমারু বিমানের উপর হামলা করে। মুরমানস্ক, ইরকুটস্ক, ইভানোভো, রিয়াজান এবং আমুর অঞ্চলের মোট পাঁচটি সামরিক বিমানঘাঁটিতে ড্রোন হামলা চলে। যার ফলে ৪০টিরও বেশি রুশ যুদ্ধবিমান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইউক্রেন ১১টি রুশ বিমান ধ্বংস করে দিয়েছে ওই ড্রোন হানায়। তার পর রাশিয়াও জানিয়ে দেয়, তারা ঠিক সময়ে ইউক্রেনকে জবাব দেবে। এর পর শুক্রবারই ইউক্রেনের রাজধানী কিভে ড্রোনহানা চালায় রুশ সেনা। শনিবার হামলা চলে ইউক্রেনের অপর গুরুত্বপূর্ণ শহর খারকিভে। এবার আরও বড় আঘাত এল ইউক্রেনের ওপর। যার ধাক্কা সামলাতে গিয়ে মস্কোর বিমানবন্দর গুলি বন্ধ করে দিল রাশিয়া।
সোমবার রাতভর ইউক্রেনের বেশ কয়েকটি শহরে আগুনে হামলা করে রুশ সেনা। তবে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক বিবৃতি দিয়ে দাবি করে, রাশিয়ার ৪৭৯টি ড্রোনের মধ্যে ৪৬০টি ও ২০ মিসাইলের ১৯টি ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। এই বক্তব্য সত্যি হলে যুদ্ধবিরতির ক্ষেত্রে ফের কয়েক কদম পিছিয়ে গেল রাশিয়া। এমনটাই বলছেন বিশ্লেষকরা। ইউক্রেনের হাসপাতালেও রাসিয়া ড্রোন হামলা করেছে বলে অভিযোগ। ওডেসা শহরের গভর্নর ওলেহ কিপার জানিয়েছেন, তাঁর শহরে বড়সড় ড্রোন হামলা হয়েছে। শহরের একটি হাসপাতালের জরুরি বিভাগ এবং প্রসূতি বিভাগ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে অভিযোগ কিপারের। যদিও হাসপাতালে ড্রোন হানায় কারও মৃত্যু হয়নি বলেও জানিয়েছেন তিনি। তবে সাধারণ নাগরিকদের উপর হামলার অভিযোগ নিয়ে মস্কোর তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া এখনও মেলেনি।
জেলেনস্কি জানিয়েছেন, এই হামলার ফলে পূর্ব এবং উত্তর-পূর্ব ফ্রন্টের পরিস্থিতি খুব খারাপ হয়েছে। তবে তাঁদের ঠিক কী কী ক্ষতি হয়েছে সেই সম্পর্কে কোনও তথ্য বিস্তারিতভাবে দেননি। ইউক্রেনকে এই অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য পশ্চিমের দেশগুলোর সাহায্য দরকার। তাঁদের বিমান বাহিনীকে আরও উন্নত করতে হবে। এমনটাই মনে করছেম আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা। অনেকে বলছেন, মার্কিন নীতির অনিশ্চয়তার কারণে ইউক্রেন এখন অনেকটাই কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। আবার রাশিয়ার তরফে দাবি করা হয়েছে, তাদের ভূখণ্ডের সাতটি জায়গায় ৪৯টি ইউক্রেনীয় ড্রোনকে ধ্বংস করা হয়েছে। ভোরোনেজ অঞ্চলে ২৫টি ড্রোনকে ধ্বংস করা হয়েছে। এর জেরে একটি পাইপ লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাতে আগুন ধরে যায়। ইউক্রেনের জেনারেল স্টাফ দাবি করেছেন, তাঁদের বিশেষ বাহিনী রাশিয়ার নভগোরোদ অঞ্চলের সাভাসলেকা বিমানবন্দরে দুটি রাশিয়ান যুদ্ধবিমানকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। তবে সেই বিমানে কীভাবে হামলা চালানো হয়েছিল, তা পরিষ্কারভাবে জানানো হয়নি।