ইরান ইজরায়েলের যুদ্ধে বিশ্বের বাকি দেশের অনেকেই বিভক্ত হয়ে গেছে তাদের সমর্থন জানাতে গিয়ে। আমেরিকা যেমন প্রতি পদক্ষেপে হুমকি দিচ্ছে ইরানকে ঠিক তেমনই রাশিয়া এবার পাশে দাঁড়িয়েছে ইরানের। ইরান ইজরায়েলের যুদ্ধে সামরিক হস্তক্ষেপের ফল মোটেও ভালো হবে না আমেরিকাকে এমনই হুঁশিয়ারি দিল রাশিয়া।
সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিকঃ রাশিয়া- ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধে সামরিক হস্তক্ষেপ নিয়ে রাশিয়া এবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করেছে। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রকের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেন, “আমরা বিশেষভাবে ওয়াশিংটনকে এই পরিস্থিতিতে সামরিক হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে সতর্ক করতে চাই, যা সত্যিই অপ্রত্যাশিত নেতিবাচক পরিণতি-সহ একটি অত্যন্ত বিপজ্জনক পদক্ষেপ হবে।” শুধু টাই নয়, ইরানের পাশেই রাশিয়া আছে এই বার্তা স্পষ্ট করে দিয়ে তেহরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধিকরণে সাহায্য চালিয়ে যাবে মস্কো, এমনটাই জানালেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ইজরায়েল-ইরানের সংঘর্ষবিরতির জন্য মধ্যস্থতায় তৈরি ক্রেমলিন। বিষয়টি নিয়ে একাধিক রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গেও কথা বলছেন পুতিন।
রাশিয়ার পারমাণবিক শক্তি কর্পোরেশনের প্রধান বৃহস্পতিবার সতর্ক করে বলেছেন যে, ইরানের বুশেহর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ইজরায়েলি হামলা চেরনোবিল ধাঁচের বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। এই পরিস্থিতিতে বুধবারই রাশিয়ার উপ-বিদেশমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভ ইজরায়েলকে সরাসরি সামরিক সহায়তা দেওয়ার বিরুদ্ধে আমেরিকাকে সতর্ক করে বলেছেন, “আমরা ওয়াশিংটনকে এই ধরনের জল্পনামূলক, কাল্পনিক বিকল্পের বিরুদ্ধে সতর্ক করছি। এটি এমন একটি পদক্ষেপ হবে যা পুরো পরিস্থিতিকে আমূল অস্থিতিশীল করে তুলবে।”
উল্লেখ্য, জাখারোভা আরও জানিয়েছেন, ইরানের পারমাণবিক পরিকাঠামোর উপরে ইজরায়েলের হামলার অর্থ হল, গোটা দুনিয়াকে বিপর্যয় থেকে কয়েক মিলিমিটার দূরে দাঁড় করানো। এই নিয়ে তিনি উদ্বেগও প্রকাশ করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘পৃথিবীর লোকজন কোথায়? পরিবেশবিদেরা কোথায়? আমি জানি না, ওঁরা হয়তো মনে করছেন, এ সবের থেকে ওঁরা অনেক দূরে। তাই এই রেডিয়েশন ওঁদের কাছে পৌঁছোবে না। ফুকুশিমার কথা মনে করুন।’’ তাঁর কথায় ২০১১ সালে জাপানের ফুকুশিমার ঘটনার প্রসঙ্গ উঠে এসেছে।
এর আগেও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট জানিয়েছিলেন যে তাঁরা ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধ থামাতে মধ্যস্থতা করতে রাজি। এই নিয়ে কথা বলতে তিনি ফোন করেন ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেকশিকানকেও। পুতিন জানান, “ইরানি সঙ্গীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। বুশেহর শহরে আমাদের প্রায় ৬০০ বিশেষজ্ঞ কাজ করছেন। সেই কর্মসূচি ছেড়ে আমরা চলে আসিনি। এটা কি সমর্থন নয়?” তিনি সাফ জানিয়েছেন, রাশিয়ার কাছে আর অন্য কোনও সাহায্য চায়নি তেহরান। এরপরই পুতিন জানান, “ইরান-ইজরায়েল সংঘাত থামাতে মধ্যস্থতা করতে তৈরি মস্কো।যদিও পুতিনের এই আগ্রহতে জল ঢেলেছেন ট্রাম্প। সূত্রের খবর, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, ইউক্রেনের সঙ্গে লড়াই বন্ধে আগে নিজের মধ্যস্থতা করুন পুতিন। তার পরেই তিনি অন্য দেশের কথা ভাববেন।