পুরীর জগন্নাথ দেবের রথের গুরুত্বই আলাদা। এখানে তিনটি রথ টানা হয় প্রতিবছর। প্রতিবছরই তৈরি হয় নতুন রথ। তিনটি রথের আলাদা নামও রয়েছে। আসলে তিন ভাইবোনের জন্য তিনটি পৃথক রথ। আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয় তিথিতে সেই রথে চেপেই মাসির বাড়ি যান জগবন্ধু দাদা বলভদ্র ও বোন সুভদ্রা। আজ সুভদ্রার রথের বর্ণনা দেব।
প্রবীর মুখার্জী, সাংবাদিক- ভগবান শ্রী কৃষ্ণ বা জগন্নাথ বা জগবন্ধুর বোন দেবী সুভদ্রার রথের নাম দেবদলন বা দর্পদলন। ধৌসা-নিম-ফাসি এই সব গাছের কাঠ দিয়ে তৈরি হয় রথ। আগেই আপনাদের জানিয়েছি। সুভদ্রার এই রথে রয়েছে ১২টি চাকা। রথের উচ্চতা ৪২ ফুট ৩ ইঞ্চি। মোট ৫৯৩টি কাঠের টুকরো ব্যবহার করা হয় এই রথ তৈরিতে। রথের দৈর্ঘ্য ৩১ ফুট ৬ ইঞ্চি। প্রস্থ ৩১ ফুট ৬ ইঞ্চি। প্রতিটি রথের জন্য রয়েছেন একজন করে অভিভাবক। দেবী সুভদ্রার রথের অভিভাবক হলেন জয়দুর্গা। দেবী সুভদ্রার রথের যে কাপড় ব্যবহার করা হয়, তার রঙ লাল-কালো। পতাকারও রয়েছে নাম। সুভদ্রার রথ দর্পদলনের পতাকার নাম নাদাম্বিকা।
প্রতিটি রথেই রয়েছে ৪টি করে ঘোড়া। তাদের গায়ের রঙও আলাদা। দেবী সুভদ্রার রথের ঘোড়ার রঙ লাল। ঘোড়াদের নাম যথাক্রমে জিতা-অপরাজিতা-রোচিকা-মচিকা। রথের রশির নাম স্বর্ণচূড়া নাগিনী। এই রথে দেবী সুভদ্রার সঙ্গী সুদর্শনা। দর্পদলন বা দেবদলন রথের দ্বারপাল গঙ্গা ও যমুনা। প্রতিটি রথেই রয়েছেন পার্শ্বদেব-দেবী। প্রভু জগন্নাথদেবের বোন সুভদ্রার রথের এই দেব-দেবীরা হলেন চণ্ডী-চামুণ্ডা-বনদুর্গা-শুলিদুর্গা-মঙ্গলা-বিমলা-শ্যামাকালী-উগ্রতারা এবং বারাহী। এই রথের সারথী স্বয়ং অর্জুন। পতাকার প্রতীক পাম গাছ।