অপারেশন সিঁদুর দিয়ে পাকিস্তানের একের পর এক জঙ্গি ঘাঁটি দুরমুশ করে দিয়েছে ভারত। তবে এবার কি আরও একবার আরও বড় প্রত্যাঘাতের ছক তৈরি করে ফেলেছে ভারত? কারণ পাক সীমান্তে বড় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বিএসএফ।
সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিক: আর কোনরকমেই সন্ত্রাসকে বরদাস্ত নয়। জম্মু ও কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখায় সন্ত্রাসবাদী অনুপ্রবেশ রুখতে এবং পাকিস্তানি হামলা ঠেকাতে বিএসএফ এ বার নতুন কৌশল নিচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। তাদের তরফে পাক অধিকৃত কাশ্মীর লাগোয়া গ্রামগুলির যুবকদের দেওয়া হচ্ছে আগ্নেয়াস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণ।
বিএসএফের এক আধিকারিক বলেন, “প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য সবার মধ্যে বিশেষ উৎসাহ দেখা যাচ্ছে।” বিএসএফের আধিকারিকরা মনে করছেন, প্রশিক্ষণ শেষ হলে সীমান্তের একাধিক তথ্য খুব তাড়াতাড়ি বিএসএফের কাছে পৌঁছে যাবে। আর এতেই সহজেই অনুপ্রবে-সহ একাধিক অবৈধ কার্যকলাপ আঁটকানো সম্ভব হবে।
সীমান্তবর্তী এলাকায় বসবাসকারী গ্রামবাসীদের আত্মরক্ষার কৌশল এবং আগ্নেয়াস্ত্র টালানোর প্রশিক্ষণ চলছে জোরকদমে। ভিলেজ ডিভেন্স গার্ড বা গ্রামরক্ষী বাহিনীর আওতায় এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। আপৎকালীন পরিস্থিতির মোকাবিলায় মহিলাদেরও বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা চলছে। মূলত অস্ত্র চালানো, আত্মরক্ষার প্রশিক্ষণ ছাড়াও হঠাৎ করে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হলে কী করতে হবে এসব বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
এই প্রশিক্ষণে তরুণ-তরুণীদের ৭.৬২ এসএলআর, ৫.৫৬ ইনসাসের মতো স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারেও পারদর্শী করে তুলতে সক্রিয় হয়েছে বিএসএফ। উপত্যকার সাধারণ নাগরিকদের ড্রোন সনাক্ত করতে, তাদের ট্র্যাক করতে শেখানো হয়েছে। রাতের টহল, গোয়েন্দা অভিযান থেকে তথ্য সংগ্রহ এবং বিএসএফ চেক পোস্টে তথ্য প্রেরণ করা ভিডিজি-দের উৎসাহিত করা হয়েছে এই কর্মসূচিতে। ভিডিজিদের মধ্যে স্কুল শিক্ষক এবং পঞ্চায়েত প্রধানরাও রয়েছেন।
স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্রের প্রশিক্ষণকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে কারণ পাক সেনার নর্দার্ন লাইট ইনফ্যান্ট্রি এবং লশকর-ই-তইবা, জইশ-ই-মহম্মদের মতো সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলির যৌথবাহিনী ‘বর্ডার অ্যাকশন টিম’ নিয়মিত হামলা চালায় নিয়ন্ত্রণরেখায়। বেশ কয়েক বার ওই বাহিনীর হামলায় গ্রামবাসী এবং সেনা-বিএসএফের জওয়ানদের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে এই পরিস্থিতিতে গ্রামরক্ষী বাহিনীর সাহায্যে এলওসিতে রাত্রিকালীন নজরদারি বাড়াতে বিশেষ ভাবে নজর দেওয়া হয়েছে।
ড্রোন ব্যবহার করে অস্ত্র ও অন্যান্য জিনিসপত্র পাচার বন্ধে সতর্ক সাধারণ নাগরিকরা প্রথম প্রতিরক্ষা বাহিনীতে পরিণত হতে পারেন। বিএসএফ আশা করে যে, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে, গ্রামবাসীদের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি সম্ভব এবং তারা আধাসামরিক বাহিনীর সঙ্গে তথ্য ভাগাভাগি করার ক্ষেত্রে আরও সক্রিয় হয়ে উঠবে। গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে পাকিস্তানের মদতপুষ্ট জঙ্গিগোষ্ঠীর হামলায় ২৬ জনের মৃত্যু এবং অপারেশন সিঁদুরের পর এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।