সোশ্যাল মিডিয়ায় বিয়ের সময়ের যে ছবি ভাইরাল তার সঙ্গে এই মুহূর্তের সোনমকে কেউ মেলাতে পারছেন না। চোখের তলায় কালি, বিধ্বস্ত মুখ, যেন অনেক ঝড় বয়ে গেছে। কিন্তু সোনম তো এই ঝড়কে নিজে ডেকে এনেছেন জীবনে। পুলিশ সূত্রে খবর তদন্তে কোন সহযোগিতা করছেন না তিনি।
সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিকঃ উত্তর প্রদেশের গাজিপুর থেকে পুলিশের কব্জায় আসেন সোনম। সেখান থেকে বিহার নিয়ে আসার পথে সোনম পুলিশের কথার কোনও উত্তর দিতে চানন। তিনি খাবার দেওয়া খেতেও চাননি। বার বার খাবার খাওয়ার জন্য বলা হলেও তিনি স্পষ্ট ‘না’ বলে দিয়েছেন। সোনম বার বার একটা কথাই বলছেন যে, তাঁর প্রচণ্ড মাথা যন্ত্রণা করছে। ঠিকমতো ঘুম হচ্ছে না। তার শরীর খারাপের কথা শুনে রাস্তায় বেশ কয়েক বার গাড়িও থামানো হয়, বিশ্রামের ব্যবস্থা করার প্রস্তুতিও নেওয়া হয়। যদিও সোনম তাতে সম্মতি দেননি। পুলিশ কোনও প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করলেই শুধু একটাই উত্তর, ‘আমার মাথা যন্ত্রণা করছে।’
পুলিশকে ক্রমাগত বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন সোনম। বারবার বয়ান বদলাচ্ছেন আবার কখনও এড়িয়ে যাচ্ছেন। তদন্তকারী পুলিশ অফিসারদের দাবি, সোমবার ভোরে গ্রেফতার হওয়ার পরে সোনম প্রথমে দাবি করেছিলেন, তাকে অপহরণ করা হয়। পরে উত্তরপ্রদেশের গাজিপুরে তাকে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা। গাজিপুর-বারাণসী রোডের পাশে এক ধাবা থেকে সে তার বাড়ির লোকজনকে ফোন করে অপহরণের ঘটনা জানায়। সোনম সেই বয়ান সোমবার কখন দিয়েছিল, তা নথিভুক্ত করে রেখেছে পুলিশ।উত্তরপ্রদেশে পুলিশের এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) অমিতাভ যশের দাবি, তার কয়েক ঘণ্টা পরে জেরায় সোনম তার বয়ান বদলে দাবি করেন, তাকে মাদক খাওয়ানো হয়েছিল। নেশাগ্রস্ত অবস্থায় তাকে গাজিপুরে নিয়ে আসা হয়। পুলিশের জেরায় সোনম বলেন, সেও এই ঘটনার শিকার। সে নিজেই আক্রান্ত। এভাবেই সোনম বারবার তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ উত্তরপ্রদেশ পুলিশের।
উল্লেখ্য, ১১ ফেব্রুয়ারি এনগেজমেন্টের পর থেকেই সোনম এবং রাজ মিলে রাজাকে খুনের ছক কষে। সোনমরা শিলং যেতেই সুপারি কিলাররাও যায়। গুয়াহাটিতে পৌঁছে অনলাইনে দা কেনে যা দিয়েই রাজাকে খুন করা হয়।সোনমদের হোটেলে থেকে এক কিলোমিটার দূরের একটি হোটেলে ছিল ওই ভাড়াটে খুনিরা। গত ২৩ মে ছবি তোলার নাম করে স্বামীকে নিয়ে মেঘালয়ের একটি নির্জন পাহাড়ি অঞ্চলে গিয়েছিলেন। সেখানেই রাজাকে খুনের ছক কষা হয়েছিল বলে খবর। জানা গেছে যে, প্রথমে কিছুটা দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়ে ভাড়াটে খুনিরা। যা দেখে সোনম নিজের কার্যসিদ্ধির জন্য ওই ভাড়াটে খুনিদের ২০ লক্ষ টাকা দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। তাৎক্ষণিক ভাবে ওই অভিযুক্তদের হাতে ১৫ হাজার টাকা নগদ ধরিয়ে দিয়েছিলেন তিনি।