প্রবীর মুখার্জী, সাংবাদিক: জগন্নাথ দেবের মন্দির নামেই প্রভুর লীলাক্ষেত্র। সেখানকার আদব কায়দা বা ভোগের রকম সকম দেখলে বা শুনলে মাথা খারাপের জোগার। নানা রকমের ভোগ নিবেদন করা হয়ে থাকে মহাপ্রভুকে। তার মধ্যে রয়েছে যেমন রয়েছে পান্তা ভাত। তেমনই রয়েছে পান্তা ভাতের জল ছেঁকে তৈরি লেবু-গোলমরিচের গুঁড়ো মিশিয়ে এক বিশেষ ধরনের সরবৎ। যা তৈরি করতেই সময় লাগে প্রায় ২০ থেকে ২৪ ঘণ্টা। রথযাত্রা মানেই কয়েক লক্ষ মানুষের ভিড় হয় শ্রীক্ষেত্রে। একবার রথের রশি ছোঁয়া মানেই সারা জীবনের সব পাপ নাকি ধুয়ে যায়। এমনটাই বিশ্বাস বৈষ্ণবদের।দেশের বিভিন্ন রাজ্যগুলি থেকে তো বটেই, এমনকি ভিন দেশ থেকেও ভিড় জমান অসংখ্য মানুষ। বছরে এই একটিমাত্র দিন তিনি বাইরে আসেন বলে কথা ! তার উপর এই একটি মাত্র দিনই মহাপ্রভু তাঁর ভক্তদের সঙ্গে লীলাখেলায় মেতে ওঠেন। আর ভক্তকূলও অপেক্ষা করে থাকে এই দিনটির জন্য। কীভাবে প্রভুকে যে তুষ্ট করবেন তা ভেবেই কূলকিনারা খুঁজে পান না তাঁরা। যাই হোক আজকের আলোচনা ৫৬ ভোগ নিয়ে।
প্রথমে জেনে নেওয়া উচিত কী এই ৫৬ ভোগ। এর নেপথ্যে নানা কারণ রয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি গ্রহণযোগ্যতা যে কারণ নিয়ে, সেখানে বলা হয়, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ইন্দ্রর পুজো বন্ধ করে গোবর্ধন পুজোর সূচনা করতে চেয়েছিলেন। এটাও মনে রাখতে হবে, যে শ্রীকৃষ্ণ ইন্দ্রের পুজোর বিরোধী কিন্তু ছিলেন না। এরপর শ্রীকৃষ্ণের ভক্তরা যখন গোবর্ধন পুজো শুরু করেন, তখন রুষ্ট হন ইন্দ্রদেব। ক্ষিপ্ত ইন্দ্রদেব বৃন্দাবনের উপর ঝড়-বৃষ্টি-বজ্রপাতের কবলে ব্রজবাসীকে বিপদে ফেলতে উদ্যোগী হন। এই কারণেই ব্রজবাসীকে রক্ষা করতে গোবর্ধন পর্বতকে নিজের কনিষ্ঠাঙ্গুল দিয়ে ধরে রাখেন। পুরাণে বর্ণিত রয়েছে, টানা ৭ দিন ৭ রাত এই ভাবে গোবর্ধন পর্বতকে ধারণ করে রেখেছিলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ। এই ৭ দিন সম্পূর্ণ অভুক্ত ছিলেন প্রভু।
শ্রীকৃষ্ণের ভক্তদের প্রতি ভালোবাসা দেখে মা যশোদা এবং ব্রজবাসীরা একসঙ্গে ৭ দিন ৮ ঘণ্টার হিসেবে ৫৬ ধরণের খাবার নিবেদন করেছিলেন। সেই থেকেই ৫৬ ধনের ভোগ নিবেদন মহাপ্রভুকে। সেই থেকে প্রচলন ৫৬ভোগের। কী কী রয়েছে এই ৫৬ ভোগে…! চোখ রাখুন পরবর্তী প্রতিদেবনে।