এবার মিড-ডে মিলের ভাগ পাবে পথকুকুররা। এৃমনই এক নির্দেশিকা জারি করল পশ্চিমবঙ্গ সমগ্র শিক্ষা মিশন। কিছুদিন আগে পথকুকুর নিয়ে সচেতনতা প্রচারে উদ্যোগী হয়েছিল সমগ্র শিক্ষা মিশন। এবার স্কুল চত্ত্বরে পথকুকুরদের একবেলা খাবার দেওয়ার ব্যবস্থার কথা বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হল। পাশাপাশি নির্দেশিকায় পথকুকুরদের টিকাকরণের ব্যবস্থার কথাও বলা হয়েছে।
নাজিয়া রহমান, সাংবাদিক
সমাজকর্মী ও পশুপ্রেমী মেনকা গান্ধী কিছু দিন আগে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রকের কাছে পথকুকুরদের একবেলা খাওয়া ও তাদের শুশ্রূষার আবেদন জানিয়ে চিঠি লিখে পাঠিয়েছিলেন। এবার মেনকা গান্ধীর সেই অনুরোধেই সাড়া দিল পশ্চিমবঙ্গ সমগ্র শিক্ষা মিশন। পথকুকুরদের দেওয়া হবে একবেলা মিড-ডে মিল! নির্দেশিকা দিয়ে জানাল পশ্চিমবঙ্গ সমগ্র শিক্ষা মিশন।
মিড-ডে মিল নিয়ে একাধিক সময় নানা অভিযোগ ওঠে। কখনও মিড-ডে মিলের বরাদ্দ নিয়ে আবার কখনও কর্মী সঙ্কট নিয়ে। এরই মধ্যে স্কুলে স্কুলে পথকুকুরদের খাওয়ানোর নির্দেশ দিল পশ্চিমবঙ্গ সমগ্র শিক্ষা মিশন। এই কাজে যুক্ত থাকতে হবে মিড-ডে মিলের কর্মীদের। পাশাপাশি পড়ুয়াদেরও যুক্ত করতে হবে। কলেজিয়াম অফ অ্যাসিস্ট্যাণ্ট হেডমাস্টার্স এণ্ড অ্যাসিস্ট্যাণ্ট হেডমিস্ট্রেসেস-এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাসের বক্তব্য, ” উদ্দেশ্য ভালো কিন্তু বাস্তবে প্রয়োগ করতে গেলে লোকবল ও অর্থ সংস্থান দুটোরই প্রয়োজন”।
শুধুমাত্র পথকুকুরদের মিল দেওয়া নয় তাদের টিকাকরণের ব্যবস্থার কথাও বলা হয়েছে নির্দেশিকায়। শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিংকর অধিকারীর বক্তব্য,
“এ দায়িত্ব সামাজিকভাবে গ্রহণ করা উচিত। কোন স্কুলে কতগুলি কুকুর খাবে অথবা এই দায়িত্ব কারা সামলাবে অথবা এর জন্য অতিরিক্ত আর্থিক বরাদ্দ থাকবে কিনা। ভ্যাক্সিনেশনের জন্য কারা দায়িত্ব নেবে। কোন বিদ্যালয়ে কতগুলি কুকুর হাজির হবে তা কিভাবে নির্ধারিত হবে? বিদ্যালয়ের উপর অথবা শিক্ষকদের উপর সমস্ত দায়িত্ব চাপানো সম্পূর্ণ বিরুদ্ধে আমরা। বিদ্যালয়ের উপর সমস্ত দায়িত্ব না চাপিয়ে সামাজিকভাবে তা গ্রহণ করা হোক।”
শিক্ষক মহলের একাংশের বক্তব্য, সমগ্র শিক্ষা মিশনের এই উদ্যোগ খুবই ভালো। কিন্তু এরজন্য অর্থ বরাদ্দের বিষয়ে কিছু পরিস্কার করে বলা হয়নি বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়ে বিতর্ক ছড়িয়েছে। বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন,”কিছুদিন আগে পথ কুকুরদের হাত থেকে স্কুলে আসার সময় বা স্কুল থেকে ফেরার সময় কিভাবে ছাত্র ছাত্রীদের নিরাপদ রাখা যায় তার একটা গাইড লাইন সমগ্র শিক্ষা থেকে দেওয়া হয়েছিল। এবার মেনকা গান্ধীর অনুরোধ মেনে পথ কুকুরদের সেবার জন্য বিদ্যালয়কে জোড়া হলো। এর একটা মানবিক দিক নিশ্চয়ই আছে এবং এটা ভালো উদ্যোগ। কিন্তু এতো কুকুর খাওয়াতে যে খরচ হবে তা মিড ডে মিলের টাকা থেকে যাবে না সরকার আলাদা অর্থ বরাদ্দ করবে সে ব্যাপারে স্পষ্ট করলে ভালো হয়।”