প্রবীর মুখার্জী, সাংবাদিক : প্রভু জগন্নাথ দেবের ভোগ কিন্তু বৈচিত্রময়। একদিকে যেমন রয়েছে রকমারি অন্নভোগ। তেমনই রয়েছে শুকনো ভোগ। এই ভোগের নামকরণও দারুণ। পাক্কা ভোগ । মানে রান্না করা ভোগ। আর সুক্কা ভোগ । মানে শুকনো খাবার। পাক্কা ভোগে রয়েছে ডাল-চাল-খিচুড়ি-নানাধরনের সব্জি আর অবশ্যই পায়েস। আর সুক্কা ভোগে রয়েছে রকমারি মিষ্টান্ন। সেখানে যেমন রয়েছে খাজা-গজা-কড়া পাকের সন্দেশ-ক্ষীরের তৈরি মিষ্টি,তেমনই রয়েছে নানা ধরনের পিঠা। রোজই প্রভুকে কিন্তু ভোগের মধ্যে পিঠা দেওয়া হয়ে থাকে।
যারা রান্নাঘর সামলানোর দায়িত্বে থাকেন, তারা প্রতিদিন সকালে স্নান সেরে শুদ্ধাচারে জগন্নাথ দেবের এই রান্নাঘরের এসে প্রথমে অগ্নিদেবকে আহুতি দিয়ে জগন্নাথদেবের নাম করে তবে শুরু করেন রান্নার কাজ। রান্নার কাজ চলাকালীন কিন্তু রাঁধুনীরা আর খেতে পাবেন না। অর্থাৎ স্নানের আগেই তাদের খেয়ে নিতে হয়। কোনও বিদেশি সব্জি ব্যবহার করা যায় না জগন্নাথদেবের ভোগে। রাঙাআলু-পটল-ঝিঙে-কাঁচকলা-কুমড়ো-কাঁকরোল-লাউই ব্যবহার করা হয় ভোগে। পেঁপে, টম্যাটো, আলু, কাঁচা লঙ্কা ব্যবহারের কোনও চল নেই বিশ্বের সর্ববৃহৎ এই রোসাঘরে।
প্রতিদিন ৫৬ রকমের ভোগ নিবেদন করা হয় জগন্নাথদেবকে। মোট ৬০০ জন রাঁধুনি প্রতিদিন জগন্নাথ দেবের ভোগ তৈরির কাজ করে থাকেন। আর তাদের সাহায্য করার জন্য থাকেন আরও ৪০০ জন। অর্থাৎ, মোট এক হাজার ভক্ত শুধুমাত্র মহাপ্রভুর ভোগ তৈরির কাজে নিয়োজিত। বংশ পরম্পরায় ধরে তারা এই কাজ করে আসছেন। এই রাঁধুনিদের পরিবারের কোনও সদস্যের বয়স ১২ বছর হলেই তারা ট্রেনিংয়ের যোগ্য বলে বিবেচিত হয়। তবে তারা কোনওদিনই আমীষ গ্রহণ করতে পারেন না। জগন্নাথ দেবের রান্নাঘরে যে জল ব্যবহার করা হয়, তা কিন্তু, বাইরে থেকে আসে না। সেই নিয়ে আলোচনা অবশ্যই করবো। আরও জানতে চোখ রাখুন আর প্লাস নিউজ ডিজিটালে