ক্রমশ জটিল হচ্ছে ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধ। দুই দেশই এই মুহূর্তে রণং দেহী মেজাজে। এর মধ্যেই ইজরায়েলের পাশে থেকে ইরানকে লাগাতার হুমকি দিয়ে চলেছেন ট্রাম্প। এবার খামেনেইকে নয়া হুমকি দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করার হুমকি দিলেন খামেনেইকে। পালটা দিলেন খামেনেইও।
সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিকঃ মধ্যপাচ্যের এই উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে তেহরানকে ফের চমকালেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখলেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেই কোথায় আছেন, তা ইউএস জানে। কিন্তু, আমেরিকা তাঁকে এখনই হত্যা করবে না। বরং খামেনেই যেন শর্তবিহীন ভাবে আত্মসমর্পণ করেন। খামেনেইকে সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলে দিলেন, ‘ইরান যদি নিঃশর্তে আত্মসমর্পণ না করে তাহলে ফল ভুগতে হবে খামেনেইকেই।’
শুধু খামেনেইকে নয়, আরও একবার ইরানকে তছনছ’ করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে মঙ্গলবার রাতে ট্রাম্প তাঁর নিজস্ব সমাজমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে তিনি ইরানকে ‘নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ’ করতে বলেন। এ ছাড়াও, ট্রাম্প মন্তব্য করেন, ‘‘সাধারণ নাগরিক বা আমেরিকান সৈন্যদের উপর ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ চাই না। কিন্তু আমাদের ক্রমশ ধৈর্যচ্যুতি ঘটছে।’’ আরও একটি পোস্টে ট্রাম্প জানিয়েছেন, আপাতত ইরানের সর্বোচ্চ নেতাকে হত্যার জন্য তিনি কোনও পদক্ষেপ করবেন না। তিনি লিখেছেন, ‘‘আমরা জানি যে তথাকথিত সর্বোচ্চ নেতা কোথায় লুকিয়ে রয়েছেন। তিনি একটি সহজ লক্ষ্য, কিন্তু সেখানে নিরাপদ। আমরা তাঁকে বার করে (হত্যা!) করব না, অন্তত এখনই নয়।’ একটি পোস্টে ট্রাম্প লেখেন, “UNCONDITIONAL SURRENDER!”, সবটা বড় হাতের অক্ষরে।
মঙ্গলবার এয়ার ফোর্স ওয়ানে ট্রাম্প বলেন, “আমি কোথাও বলিনি, আমি যুদ্ধবিরতি চাইছি। আমরা যুদ্ধবিরতির চেয়েও ভালো কিছু চাইছি।” তিনি বলেন, “ওরা চুক্তি করল না। আমি বলেছিলাম, ‘চুক্তিটা করে ফেলো’। এখন আমি বেশি আলোচনার মুডে নেই।” তবে কূটনৈতিক বিকল্প এখনও বন্ধ হয়ে যায়নি বলে জানান তিনি। ইঙ্গিত দিয়েছেন, মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স এবং বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফকে ইরানে আলোচনার জন্য পাঠানো হতে পারে।
ট্রাম্পের লাগাতার হুমকির সামনে চুপ নেই খামেনেইও। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ’ চাওয়ার প্রস্তাবে যে তিনি রাজি নন, তা বুঝিয়ে দিয়ে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেই ট্রাম্পের হুঁশিয়ারির কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পর পর পোস্ট করে ‘যুদ্ধ শুরু’র ঘোষণা করলেন তিনি! ইজরায়েলকে সন্ত্রাসী ইহুদি সরকার বলে উল্লেখ করে তিনি লেখেন, ‘‘আমাদের অবশ্যই সন্ত্রাসী ইহুদিবাদী শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে কঠোর জবাব দিতে হবে। আমরা কোনও ইহুদিবাদীদের প্রতি দয়া দেখাব না!’’
অন্যদিকে, ইজরায়েলের হামলায় নিহত হয়েছেন ইরানের নবনিযুক্ত সেনাপ্রধান আলি শাদমানি। ইরান সেনাবাহিনীর কমান্ডার হোসেন সালামি এবং সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মহম্মদ হোসেন বাগেরির মৃত্যুর পর শনিবারই শাদমানিকে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থেকে মেজর জেনারেল পদে উন্নীত করা হয়েছিল। ইজরায়েলি সেনার গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, সোমবার রাতের হামলায় শাদমানির মৃত্যু হয়েছে।