জলের তলায় শহর ঘাটাল। গামছা বেঁধে পিঠে শুকনো জামা-কাপড় নিয়ে সাঁতরে বাজারে আসছেন কেউ, কেউ আবার নৌকা ভরসা করে পৌঁছচ্ছেন গন্তব্যে। রাস্তা-ঘাট, ঘরবাড়ি — বিস্তীর্ণ এলাকা এখন এক একটি জলাশয়। প্রতি বছরের মতো এবারও ঘাটালবাসীর জীবনে ফিরে এসেছে জল-যন্ত্রণা।
ষষ্ঠী চট্টোপাধ্যায়, সাংবাদিক- বাড়িতে জল ঢুকেছে বহু আগেই। রান্নাঘর থেকে শোওয়ার ঘর — সবই জলের তলায়। একমাত্র উপায় নৌকা বা ডোঙা। তাই বাড়িতে চলছে ডোঙা বানানোর হুড়োহুড়ি। কেউ কাঠের ডোঙা বানাচ্ছেন, কেউ প্লাস্টিকের ড্রাম কেটে তৈরি করছেন ভাসমান যান। বিক্রিও হচ্ছে দেদার।
শহরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন প্রায়। জল বাড়লেই থমকে যাচ্ছে জনজীবন। সরকারি তরফে নৌকা পরিষেবা চালু হলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা যথেষ্ট নয় বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। বহু স্কুল-কলেজ বন্ধ। বাজার বসছে কোনওরকমে। দোকানদাররাও নৌকায় করে আসছেন।
বস্তুত, ঘাটালের এমন ছবি নতুন নয়। প্রতিবছর বর্ষা এলেই জল থইথই শহর। তৃণমূল সরকারের একাধিকবার প্রতিশ্রুতি থাকলেও, এখনও স্থায়ী সমাধান হয়নি। ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের কাজ আজও ফাইলেই বন্দি।
“প্রতি বছর এই দুর্দশা দেখতে দেখতে ক্লান্ত আমরা। সরকার শুধু আশ্বাস দেয়, বাস্তবে কিছু হয় না,” — ক্ষোভ উগরে দিলেন ঘাটালের এক বাসিন্দা।
বর্ষা এখনও পুরোদমে আসেনি। তার আগেই যদি এই অবস্থা হয়, তাহলে সামনে কী অপেক্ষা করছে, সেই ভাবনাতেই শিউরে উঠছেন ঘাটালবাসী।