অপারেশন সিঁদুরের মাধ্যমে পাকিস্তান নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছে সন্ত্রাস দিয়ে ভারতের মাটিকে রক্তাক্ত করার কি ফলাফল হতে পারে। এবার আরও একবার পাকিস্তানকে কড়া বার্তা বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকরের। এই মুহূর্তে বিদেশ সফরে তিনি গিয়েছেন বেলজিয়ামে। ব্রাসেলস থেকে তিনি জানালেন প্রয়োজন হলে পাকিস্তানের ভেতরে ঢুকে সন্ত্রাসীদের মারবে ভারত।
সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিকঃ ব্রাসেলস থেকে পাকিস্তানকে সন্ত্রাসিস্তান বলে উল্লেখ করলেন বিদেশমন্ত্রী। তিনি স্পষ্ট জানালেন, পাকিস্তনা যদি সন্ত্রাসবাদ নিয়ে ভবিষ্যতে আবার কোন উসকানি দেয় তাহলে ফল আরও খারাপ হবে। ভারত তখন পাকিস্তানের আরও ভিতরে প্রবেশ করে জঙ্গিদের দমন করবে। সন্ত্রাসবাদ নিয়ে এভাবেই ইসলামাবাদকে কড়া বার্তা দিলেন এস জয়শংকর।
বিদেশমন্ত্রী আরও বলেন, ‘ভারত দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে, সন্ত্রাসবাদের প্রতি জিরো টলারেন্স নীতি থাকা উচিত। এই প্রেক্ষাপটে, ভারত কখনই পরমাণু হুমকির কাছে নতি স্বীকার করে না। এটা সারা বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত এবং চ্যালেঞ্জ নেওয়ার মতই বিষয়। এই সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং বোঝাপড়া থাকা প্রয়োজন’। সন্ত্রাসবাদ বিষয়ে পাকিস্তানকে কড়া বার্তা দিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘এই ধরনের মনোভাবকে আমরা রেয়াত করব না। এপ্রিলে যে ধরনের বর্বর কাজ তারা করেছিল তা চালিয়ে গেলে প্রতিশোধ নেওয়া হবে। জঙ্গি সংগঠন এবং সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে নেওয়া হবে’। তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন এই প্রতিশোধ তখন কোনও ভৌগোলিক সীমারেখা মেনে চলবে না। তিনি উল্লেখ করেন, ‘ওরা কোথায় আছে তা আমরা পরোয়া করি না। যদি পাকিস্তানের ভেতরে বসে থাকে, তাহলে প্রয়োজনে দেশের মধ্যে ঢুকে প্রতিশোধ নেওয়া হবে’।
ভারতের আত্মরক্ষার অধিকারের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “যে কোনও সময়, যে কোনও জায়গায়, যদি তারা আমাদের জনগণের ক্ষতি করে থাকে, তাহলে আমদের অধিকার রয়েছে তাদের জবাব দেওয়ার’। জয়শঙ্কর আরও জোর দিয়ে বলেন, ‘সন্ত্রাসবাদ একটি বিশ্বব্যাপী সমস্যা। কিন্তু ভারতের সমস্যা হল পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদকে রাষ্ট্রীয় নীতি হিসেবে প্রকাশ্যে ব্যবহার করে, ইউরোপে সন্ত্রাসবাদ ঘটে, কিন্তু কোনও প্রতিবেশী ইউরোপীয় দেশ সন্ত্রাসবাদকে ঘোষিত রাষ্ট্রীয় নীতি হিসেবে ব্যবহার করে না’। এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে পাকিস্তানকে সন্ত্রাসীস্তান বলেও উল্লেখ করে বিদেশমন্ত্রী বলেন ‘এটা ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্ব নয়, এটা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ভারতের প্রতিক্রিয়া। তাই এ বিষয়টিকে ‘ভারত বনাম পাকিস্তান’ না ভেবে ‘ভারত বনাম সন্ত্রাসিস্তান’ হিসেবেই দেখা উচিত।’ এই মন্তব্য করে তিনি সরাসরি পাকিস্তানকে একটি ‘সন্ত্রাসপ্রেমী রাষ্ট্র’ বলে আখ্যা দেন।
উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় সোমবার ছ’দিনের ইউরোপ সফরে গিয়েছেন জয়শঙ্কর। ফ্রান্স, বেলজিয়াম, লুক্সেমবার্গ-সহ বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নেরর শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করাই এই সফরের লক্ষ্য। ইতিমধ্যেই বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লেন এবং ভাইস প্রেসিডন্ট কাজা কাল্লাসের সঙ্গে বৈঠক সেরেছেন তিনি।