রথ নিয়ে কৌতুহলের শেষ নেই। আমরা গত কয়েকদিন ধরেই বলরাম, সুভদ্রার রথের নানা খুঁটিনাটি নিয়ে আলোচনা করেছি। আজ প্রভু জগন্নাথদেবের রথ নিয়ে আলোচনা। কী বৈশিষ্ট্য রয়েছে এই রথে !
প্রবীর মুখার্জী, সাংবাদিক: রথ মানেই পুরী। কারণ দেশের মধ্যের পূরীর জগন্নাথ দেবের আলাদা মাহাত্ম্য। মহাপ্রভূর স্মৃতি যেমন রয়েছে। তেমনই রয়েছে এই মন্দিরের আলাদা ঐতিহ্য। রথ মানে প্রভু জগন্নাথ দেবের আরও একটা পুজোই শুধু নয়, এটা একটা লীলা। রাসলীলা যেমন রয়েছে রাধিকা ও গোপিনীদের সঙ্গে এই লীলা। ঝুলনপূর্ণীমাতে শুধুই রাধিকার সঙ্গে দোলনায় লীলা। রথযাত্রায় কিন্তু, তিন ভাইবোন আর অগণিত ভক্তকূল । এইদিনের প্রভুর লীলা তাঁর ভক্তকুলের সঙ্গে। তাই এই রথযাত্রার আলাদা গুরুত্ব রয়েছে হিন্দুশাস্ত্রে।
অনেকেই মনে করেন, মহাভারতে শ্রীকৃষ্ণের লীলা শেষের পর নীলাচলে শুরু জগন্নাথদেবের লীলা।কথিত আছে এই দিন রথের রশিতে টান দিলে সারা জীবনের পুণ্যলাভ সম্ভব। রথকে একবার প্রদক্ষিণ করা মানে গোটা বিশ্বকে প্রদক্ষিণ করার সামিল। তাই লাখো লাখো ভক্তের সমাগম হয় ওড়িষার জগন্নাথধামে।
এবার আশা যাক জগন্নাথদেবের রথ নিয়ে আলোচনায়। আগেই আমরা বোন সুভদ্রা ও দাদা বলভদ্রের রথের নানা বৈশিষ্ট্য নিয়ে আলোচনা করেছি। জেনে গিয়েছে তাঁদের রথের নামও। জগন্নাথ দেবের রথের নাম নান্দীষোঘ বা নান্দীপট। রথের বিকল্প নাম গরুড়ধ্বজ । কেউ আবার কপিধ্বজও বলে থাকেন।
এই রথে রয়েছে ১৬টি চাকা। ৮৩২টি কাঠের টুকরো ব্যবহার করা হয় এই রথ তৈরিতে। যার উচ্চতা ৪৪ ফুট ২ ইঞ্চি। দৈর্ঘ্য ৩৪ ফুট ৬ ইঞ্চি। প্রস্থ ৩৪ ফুট ৬ ইঞ্চি। এই রথের কাপড়ে লাল-হলুদ রঙ ব্যবহার করা হয়। জগবন্ধুর রথের অভিভাবক গরুড়। পতাকার নাম ত্রৈলোক্যমোহিনী। চারটি সাদা রঙের ঘোরাও নাম শ্বেতা-বলাকা-শঙ্খ-হবিদাশ্ব। প্রভু জগন্নাথের সঙ্গী দেবতা হলেন মদনমোহন। রথের দ্বারপাল হলেন জয়া ও বিজয়া। রথের রশির নাম শঙ্খচুড় নাগিনী। রথের পার্শ্বদেবতারা হলেন গিরিধারী-নৃসিংহদেব-কৃষ্ণ-রামচন্দ্র-হনুমানের উপর উপবিষ্ট রাম-নারায়ণ-বিষ্ণু-হরিহর-পঞ্চমুখী হনুমান। নান্দীঘোষ নামে প্রভু জগন্নাথদেবের রথের সারথি হলেন দারুকা।