ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের চেয়ে ভয়ঙ্কর ক্লাস্টার বোমা, এই বোমা বৈশিষ্ট্য কী?

ক্রমশ জটিল হচ্ছে ইরান-ইজরায়েলের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি। আঘাত-পাল্টা আঘাতে বিধ্বস্ত দুই পক্ষ। এই যুদ্ধ আবহে সামনে আসলো ‘ক্লাস্টার বোমা’র নাম। আপনি কি জানেন এই ক্লাস্টার বোমা কি। অন্য বোমার সঙ্গে এই বোমার পার্থক্য কি।

জুলেখা নাসরিন, সাংবাদিকঃ দিন যত গড়াচ্ছে ঘোরালো হচ্ছে ইরান-ইজরায়েল সম্পর্ক। কোন পক্ষই কাউকে রেয়াত করতে নারাজ। ফলে পশ্চিম এশিয়ার আকাশে যুদ্ধের ঘন কালো মেঘ। ইরান-ইজরায়েল দু’পক্ষই হামলা চালাচ্ছে একে উপরের উপর। আর এই হামলায় ক্ষতির পরিমাণ কমবেশি সব পক্ষেরই। এই সংঘাতে এবার শত্রুপক্ষের উপর ‘ক্লাস্টার বম্ব’ নিক্ষেপ করল ইরান। ১৯ জুন তেল আভিভের আজোর শহরে ‘ক্লাস্টার বোমা’ নিক্ষেপ করেছে খামেনিইয়ের দেশ। এই বোমা নিক্ষেপের ফলে বেশ কিছু ক্ষয়ক্ষতিও হয়েছে ইজরায়েলের। তবে হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

‘ক্লাস্টার বোমা’ মূলত একগুচ্ছ বোমার সংমিশ্রণে তৈরি একটি সামরিক অস্ত্র। এই বোমার মধ্যে একাধিক ছোট ছোট বোমা থাকে। সব বোমা একসঙ্গে ফাটলে অনেক ভয়ানক হয় এর পরিণতি। এই বোমার মূল বৈশিষ্ট হল, উৎক্ষেপণের পরই শূন্যে খুলে যায় এই বোমার অস্ত্র মুখ। একসঙ্গে একাধিক বোমার সংমিশ্রণ থাকায় বিশেষজ্ঞরা একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের চেয়েও ভয়ানক বলে মনে করেন ক্লাস্টার বোমাকে। বিভিন্ন যুদ্ধে ক্লাস্টার বোমার ব্যবহার বিভিন্ন সময়ে নজরে এসেছে।

ক্লাস্টার বোমা অনেক বেশি ক্ষতিকর। কারণ একসঙ্গে এই বোমা না ফাটলে অনেক সময় অক্ষত অবস্থায় বোমাগুলি থেকে যায়। যে কোনও বোমাগুলি ফেটে পরে বিপদও হতে দেখা গিয়েছে। এই বোমায় যেহেতু ক্ষতির পরিমান বেশি সেই কারণে ২০০৮ সালে ‘কনভেনশন অন ক্লাস্টার মিউনিশন’ নামে একটি আন্তর্জাতিক চুক্তি হয়। সেই চুক্তি অনুযায়ী ক্লাস্টার বোমা সংরক্ষণ, পরিবহণ বা ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়। ১১১টি দেশ এবং ১২টি সংগঠন সেই চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। কিন্তু আমেরিকা, ইজ়রায়েল, ইরান সেই চুক্তিতে সহমত পোষন করেনি।

রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধেও ক্লাস্টার বোমার ব্যবহার দেখা গিয়েছে। রাশিয়ায় হামলা চালানোর জন্য ইউক্রেনকে ক্লাস্টার বোমার জোগান দিয়েছিল আমেরিকা। ২০২৫ সালের ১৯ জুন ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধেও দেখা গেল ক্লাস্টার বোমার ব্যবহার। ১৯ জুন তেল আভিভের আজোর শহরে ‘ক্লাস্টার বোমা’ নিক্ষেপ করেছে ইরান। ইজরায়েলি সংবাদ মাধ্যম অনুযায়ী, ইরানের ছোঁড়া ক্লাস্টার বোমা থেকে অন্তত ২০ টি বোমা বেরিয়ে এসেছিল ছোঁড়ার পরে। এবং মাটি থেকে সাত কিমি উচ্চতায় এই বোমার অস্ত্রের মুখগুলি খুলেছিল। বোমার অভিঘাত ছড়িয়ে পড়েছিল আজোর শহরের একাধিক জায়গায়।